April 27, 2024, 2:40 pm


বিশেষ অনুসন্ধানী রিপোর্ট:

Published:
2023-10-30 13:18:05 BdST

হাতিয়েছে অর্ধশত কোটি টাকাএবার মিরপুরে মহাপ্রতারনার ফাঁদ পেতেছে ওয়েলকাম ডেভেলপমেন্ট


   ওয়েলকাম ডেভেলপমেন্টের প্রতারনার ধারাবাহিক অনুসন্ধানঃ পর্ব-১
* অবৈধ দখলদার ও মামলা যুক্ত জমি কিনে তিনি অবমুক্ত করেন এই কথা বলে
   প্রতারনার ফাঁদ পেতেছে ।
* ভুয়া প্রকল্প দেখিয়ে গ্রাহকের সাথে প্রতারনা করছে । 
* ইতোপূর্বে এমএলএম প্রতারনার দায়ে জেল খেটেছে
* ১ লাখ টাকা বিনিয়োগে পরবর্তী মাসে ফেরৎ দেয় ১০ হাজার টাকা এভাবে
২০ মাসে ২ লাখ টাকা ফেরৎ দেওয়ার কথা বলে হাতিয়েছে অর্ধশত কোটি টাকা ।
* নিজেকে একটি দৈনিক পত্রিকার সহ-সম্পাদক বলে দাবী করে ।
* গ্রাহকদের সাথে প্রতারনার কাজে ব্যবহার করছে একদল এমএলএম প্রশিক্ষণ
   প্রাপ্ত প্রতারক চক্র ।সাথে রয়েছে কিছু সুন্দরী নারী ।

বিশেষ অনুসন্ধানী রিপোর্ট:
এমএলএম নামক প্রতিষ্ঠানগুলোর যত ধরনের প্রতারনার কৌশল রয়েছে সকল প্রতারনাকে হার মানিয়েছে মিরপুর ১১ নং বাসস্ট্যান্ড ডায়মন্ড ওয়ার্ল্ড বিল্ডিংয়ের লিফট এর ৮ এ ওয়েলকাম বিল্ডার্স লিঃ নামক একটি প্রতিষ্ঠান । উক্ত প্রতিষ্ঠানের প্রধান কার্যালয় ছাড়াও গ্রাহককে প্রতারিত করার জন্য আরও একটি অফিস রয়েছে বাড়ী নং -০৫ রোড নং-০৪, ব্লক এ সেকশন -১১ পল্লবী মিরপুর। উক্ত বাড়ীর নীচ তলায় দরজায় কড়া নাড়লেই দেখা যাবে প্রতারনার হাট বসেছে। ওয়েলকাম বিল্ডার্স লিঃ ছাড়াও তাদের প্রসপেষ্টাস এ পাওয়া গেছে ওয়েলকাম এগ্রো এন্ড এগ্রিকালচার লি:-২০২৪, ওয়েলকাম টুরস এন্ড ট্রাভেলস -২০২৪। কোম্পানীর প্রসপেষ্টাস এ রয়েছে বিস্তারিত মিশন ও ভিশন। ওয়েলকাম বিল্ডার্স এর কর্মসূচীর মধ্যে রয়েছে সরকারী ও বেসরকারী প্রতিষ্ঠানের সাথে কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে দেশব্যাপী কর্মসংস্থান সৃষ্টি করা। কোম্পানীর লভ্যাংশ থেকে ৫% টাকা লিল্লাহ বোডিং , এতিমখানা, দারিদ্র ও বিনোদন খাত ব্যয় করা। ওয়েলকাম সিটি ও ওয়েলকাম নুরজাহান গার্ডন নামক দুটি বিল্ডিং এর ছবি দেওয়া রয়েছে প্রসপেষ্টাস এ। সেখানে ফ্লাট বিক্রির কথা বলা আছে।উক্ত বিল্ডিং দুটির অস্তিত্ব খুঁজে পাওয়া যায়নি। দুটি বিল্ডিং থেকে কিভাবে দেশব্যাপী জেলা ও উপজেলার কর্মসংস্থান সৃষ্টি করা হবে তা জানতে চাইলে কোম্পানীর একজন বিক্রয় প্রতিনিধি বলেন , আপনি চাইলে আমাদের কোম্পানীতে শেয়ার কিনতে পারেন।
প্রতারনার কৌশল:
১ লাখ থেকে শুরু করে ১০ কোটি পর্যন্ত শেয়ার কেনা যাবে। কোম্পানী প্রতিমাসে বিনিয়োগকৃত শেয়ার মুল্য থেকে লভ্যাংশ ৫% টাকা ও বাৎসরিক লভাংশ থেকে ৫% টাকা এবং বাৎসরিক এজিএম থেকে ২০% টাকা মুনাফা দেওয়া হবে। প্রতিমাসের ১ তারিখ থেক ১০ তারিখের মধ্যে টাকা প্রদান করা হবে। মুনাফার পরিমান কেমন তা জানতে চাইলে এ প্রতিবেদককে বলেন আপনি যত পরিমান টাকা বিনিয়োগ করবেন তার ৫% মুনাফা প্রতি লাখে ৫০০০ টাকা ও ৫% মুলধন ৫০০০ টাকা আসল মোট প্রতি লাখে ৫০০০+৫০০০=১০,০০০/- টাকা করে মোট ২০ মাস পর্যন্ত ফেরৎ পাওয়া যাবে । প্রসপেষ্টাস এর কথা ও বিক্রয় কমীর কথায় কোন মিল খুজে না পেয়ে জানতে চাওয়া হলো এ পর্যন্ত কি পরিমান টাকা বিনিয়োগকারী বিনিয়োগ করেছে বলেন, তা তো অর্ধশত কোটি টাকা হবে। কোথায় টাকা বিনিয়োগ করা হয়েছে তা বলতে অস্বীকৃতি জানান।
কেস স্টাডি:
ওয়েলকাম বিল্ডার্স লি: নামক প্রতিষ্ঠানের ব্যবস্থাপনা পরিচালক লায়ন মো: কাসেম খান। তিনি ইতোপূর্বে একাধিক এমএলএম কোম্পানী থেকে প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত। একাধিকবার বিভিন্ন প্রতারনার মামলায় জেলও খেটেছে । নিজেই এখন খুলে বসেছে মহা প্রতারনারকারী প্রতিষ্ঠান।
প্রতারনার কৌশল হিসেবে বেছে নিয়েছে যা এ যাবৎ কালের সকল প্রতারকদের হার মানিয়ে নেয়ার কৌশল। গ্রাহকদের বলা হয় যে “ আমাদের ব্যবস্থাপনার পরিচালক অত্যন্ত ক্ষমতাধর ১ জন ব্যক্তির। ঢাকা শহর ও তার আশেপাশে এমডি সাহেব ত্রুটিযুক্ত বেদখল সম্পত্তি ক্রয় করে থাকে।
উক্ত জমি মামলা-মোকাবেলা মিটিয়ে অতি উচ্চ মূল্যে বিক্রয় করে কোটি কোটি টাকা মুনাফা করেছে। উক্ত জমি থেকে যা লাভ হয় তা থেকে আমরা মুনাফা দিয়ে থাকি।
সূত্র মতে জানা যায় জমির মামলা মোকাবেলায় বছরের পর বছর ঘুরে ও শেষ করা যায় না তাহলে উক্ত প্রতিষ্ঠান কিভাবে গ্রাহকদের নিকট থেকে বিনিয়োগ নিয়ে পরের মাস থেকেই মুনাফা সহ মুল টাকা ফেরৎ প্রদান করে থাকে? এ প্রশ্ন সাধারন বিনিয়োগ কারীদের, যে প্রতিষ্ঠানের কোন নিজস্ব প্রকল্প নাই অথচ গ্রাহকদের নিকট থেকে শতশত কোটি কোটি টাকা হাতিয়ে নিচ্ছে ভুয়া কথা বলে। মূলত চাটকদার কথা বলার জন্য এক শ্রেনীর পেশাদার এমএলএম প্রতারনার কাজে পটু একদল ব্যক্তি ও সুন্দরী নারীদের কাজে লাগিয়েছে।
উক্ত প্রকল্পের বিষয়ে ওয়েলকাম বিল্ডার্স এর ব্যবস্থাপনা পরিচালকের নিকট জানতে চাইলে তিনি বলেন আমরা সব পক্ষকে ম্যানেজ করেই কাজ করছি।
প্রশাসনের নাকের ডগায় উপর কিভাবে দিনের পর দিন এ জাতীয় প্রতারনা করছে তা জানতে ডিএপি গোয়েন্দা শাখার একজন উর্ধ্বতন কর্মকর্তার সাথে কথা বললে তিনি বলেন বিষয়টি আমাদের নজরে আসে নাই। অথচ এ প্রতিবেদক যখন উক্ত প্রতিষ্ঠানে খোঁজ খবর নিতে গিয়েছে তার সামনেই দেখা গেছে পল্লবী থানার একজন পুলিশ কর্মকর্তা ব্যবস্থাপনা পরিচালকের রুমে অবস্থান করছে । প্রশ্ন জাগে তা হলে পুলিশের সহতায় কি প্রতারক প্রতিষ্ঠান জনগনের সাথে প্রতারনা করছে ? মিরপুর জোনের ডিসি জসিম উদ্দিন কে অফিসিয়াল ফোন থেকে কল করে পাওয়া যায়নি । ভুয়া ও প্রতারনা মূলক কথা বলে যদি শত কোটি টাকা হাতিয়ে নেওয়া যায় তা হলে আর ব্যবসায়ীরা কেন কোটি কোটি টাকা বিনিয়োগ করে ব্যবসায় ঝুকি নিয়ে প্রকল্প বাস্তবায়ন করবে। বার বার এমএলএম প্রতারনার মাধ্যমে নিরীহ জনগণ কে নিঃস্ব করছে আর প্রশাসন তাকিয়ে তাকিয়ে দেখছে। এটা দেশের জন্য এক আশনী সংকেত। ওদের আইনের আওতায় আনতে এখনই সরকার কে কঠোর হতে হবে।
ওয়েলকাম বিল্ডার্সের ব্যবস্থাপনা পরিচালক দাবী করেন আশুলিয়াতে তার কয়েক বিঘা জমির একটা প্রকল্প আছে। উক্ত জমি তিনি আমমোক্তার নামা নিয়েছে। একজন ব্যক্তির উক্ত জমি বেদখল হয়ে আছে উক্ত জমি উদ্ধার করে তিনি গ্রাহদের টাকা ফেরৎ দিবেন। এ জাতীয় প্রতারনার কথা এখন পর্যন্ত কোন এমএলএম কোম্পানী আবিষ্কার বরতে পারে নাই। অথচ আবুল কাসেমের প্রতারনার কাছে এ যাবৎ কালের সকল প্রতারকরা হার মেনেছে। উক্ত ব্যক্তি আবার একজন গণমাধ্যম কর্মী হিসেবে ও নিজেকে দাবী করেন। তিনি বিশ্ব মানচিত্র নামক ১টি পত্রিকার সহ-সম্পাদক হিসেবে নিজেকে পরিচয় দেন।
আবুল কাশেমের গ্রামের বাড়ীতে রাজবাড়ীর বালিয়াকান্দিতে খোঁজ নিয়ে জানা গেছে এলাকায় তাকে কেউ চিনে না। এ কথা সে নিজেও স্বীকার করেছে। মিরপুর এলাকাতেই সে বড় হয়েছে। তার প্রতারনা প্রতিষ্ঠান দেখার জন্য রয়েছে একদল স্থানীয় পেশীশক্তি। পেশীশক্তি ও স্থানীয় প্রশাসনের সহায়তায় মহাপ্রতারনা চালিয়ে যাচ্ছে বলে একাধিক ভুক্তভোগী দাবী করেন।

Unauthorized use or reproduction of The Finance Today content for commercial purposes is strictly prohibited.


Popular Article from Exclusive