March 29, 2024, 3:45 am


অনুসন্ধানী প্রতিবেদন

Published:
2022-09-20 04:48:40 BdST

সড়ক ও জনপদ অধিদপ্তরে দূর্নীতির কালো থাবা পর্ব-৪চতুর্থ শ্রেণীর কর্মচারী ও কম্পিউটার অপারেটরদেরও আলিশান ফ্ল্যাট, গাড়ি ও নামে বেনামে কোটি কোটি টাকার ব্যাংক ব্যালেন্স


 সড়ক ও জনপদ অধিদপ্তরের নিরাপত্তারক্ষী থেকে শুরু করে উর্ধ্বতন কর্মকর্তা পর্যন্ত অধিকাংশর বিরুদ্ধেই রয়েছে দুর্নীতি ও অনিয়মের অভিযোগ। অতি সম্প্রতি দ্য ফিন্যান্স টু’ডের এক প্রতিবেদনের প্রেক্ষিতে মন্ত্রণালয় থেকে ৭দিনের সময় নির্ধারন করে দিয়ে একটি তদন্ত রিপোর্ট পেশ করার জন্য সওজের প্রধান প্রকৌশলী বরাবর নির্দেশনা জারি করা হলেও উক্ত পত্রের কোনো তদন্তই শুরু করেনি বলে জানা গেছে। ৭ই সেপ্টেম্বর ২০২২- মোহাম্মদ দেলোয়ার হোসেন- সহকারী সচিব স্বাক্ষরিত যার স্মারক নং- ৩৫.০০.০০০০.০২৮.২৭.০০৫.২২-২৮৯। উক্ত প্রতিবেদনে কম্পিউটার অপারেটর থেকে শুরু করে তত্ত্বাবধায়ক প্রকৌশলী পর্যন্ত ভুয়া টেন্ডার, ঘুপচি টেন্ডার, ভুয়া বিল ও ফান্ড না থাকা সত্ত্বেও টেন্ডার আহ্বানের তথ্য সম্বলিত সংবাদ প্রচার হয়েছিলো। উক্ত সংবাদে ঠিকাদার ও কর্মকর্তা-কর্মচারীরা মিলে কীভাবে ভুয়া টেন্ডারের মাধ্যমে কোটি কোটি টাকা ভাগ-বাটোরা করা হয় তা উল্লেখ ছিলো। মন্ত্রণালয়ে চিঠি জারি হওয়ার পরে দুর্নীতিবাজ কর্মকর্তা ও কর্মচারীদের মধ্যে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে। কিন্তু সে আতঙ্ক কাটিয়ে উঠতে বেশি সময় অতিবাহিত হয়নাই। এর প্রধান কারন- ‘’কোটি টাকার মিশন’’। তদন্ত ধামাচাপা দিতে ও তদন্ত যেনো আদৌ করতে না হয় তার জন্য একটা সিন্ডিকেট জোর তদবির চালিয়ে যাচ্ছে বলে জানা গেছে। এর পেছনে মন্ত্রণালয়ের কিছু প্রভাবশালী কর্মকর্তাদের ও যোগসাজশ রয়েছে। ভুয়া টেন্ডারের মাধ্যমে মালামাল সরবরাহ না করেই বিল উত্তোলনের ঘটনা সওজ অধিদপ্তরের অতি পুরানো ঘটনা। দীর্ঘদিন যাবত একই চেয়ারে কর্মকর্তারা চাকরি করার সুবাদে একটি বিশাল সিন্ডিকেট গড়ে তুলেছে। দুর্নীতির বিরুদ্ধে মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর জিরো টলারেন্স নীতি সওজ এর ক্ষেত্রে প্রযোজ্য নয়। এটা ভুক্তভোগী একাধিক ঠিকাদার ও কিছু নিষ্ঠাবান কর্মকর্তা ও কর্মচারীদের ভাষ্য।

সওজ এর দীর্ঘদিন যাবত একই চেয়ারে কর্মরত একাধিক কম্পিউটার অপারেটর, ক্যাশিয়ার, হেড ক্লার্ক এদের ঢাকাতে প্রত্যকের রয়েছে একাধিক কোটি টাকা মূল্যের ফ্ল্যাট, দোকান ও লাখ লাখ টাকা মূল্যের প্রাইভেট কার। কেউ কেউ ২৮ বছর যাবত একই চেয়ারে কর্মরত থেকে দুর্নীতি সিন্ডিকেট গড়ে তুলেছে- কর্তৃপক্ষ এ ব্যাপারে নির্বিকার। কোনো কোনো কম্পিউটার অপারেটর তাদের সন্তানদের বিদেশে কয়েক লাখ টাকা খরচ করে পড়াশুনা শেষ করে দেশে ফিরিয়ে এনেছে। কোনো কোনো ক্যাশিয়ার/ক্লার্ক কয়েক লাখ টাকা খরচ করে মিরপুরের বিলাসবহুল আভিজাত পার্টি সেন্টারে কয়েক হাজার মেহমান আপ্যায়নে মেয়ের বিয়ে সম্পূর্ন করে। এ সমস্ত কর্মচারীদের রাজধানীর কল্যাণপুর, টোলারবাগ, রামপুরা-বণশ্রী ও মিরপুরে রয়েছে কোটি টাকা মূল্যের ফ্ল্যাট, সাভারে রয়েছে প্রচুর জমি। গ্রামের বাড়ি নোয়াখালী, মাদারীপুর, কুমিল্লায় রয়েছে একরে একরে সম্পত্তি। ব্যাংকে রয়েছে স্ত্রী, পুত্র, পরিজন, শশুর শাশুড়ির নামে বেনামে কোটি টাকার ব্যাংক ব্যালেন্স। এ সমস্ত চতুর্থ শ্রেণীর কর্মচারীদের আমলনামা ও তথ্য দ্য ফিন্যান্স টু’ডের অনুসন্ধানে বেরিয়ে এসেছে।

সড়ক ও জনপদের বিভিন্ন সার্কেলে দুর্নীতিবাজ চতুর্থ শ্রেণীর কর্মচারী থেকে শুরু করে উর্ধ্বতন কর্মকর্তা পর্যন্ত ব্যাপক অনুসন্ধান করছে দ্য ফিন্যান্স টু’ডে। এ ব্যাপারে সড়ক পরিবহন ও মহাসড়ক বিভাগের সচিব এ.বি.এম এ বি এম আমিন উল্লাহ নুরী বলেন, দুর্নীতির ক্ষেত্রে তার মন্ত্রণালয়ে জিরো টলারেন্স নীতি গ্রহন করেছে। দুর্নীতির সাথে সম্পৃক্ত কর্মচারী ও কর্মকর্তারা যত বড় শক্তিশালী হোক না কেনো দুর্নীতির প্রমান পাওয়া গেলে তাদের ব্যাপারে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহন করা হবে। তিনি বলেন, যে কোনো মূল্যে আমরা মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর দুর্নীতিমুক্ত বাংলাদেশ গড়ার যে প্রত্যয় তা বাস্তবায়নে দৃঢ় প্রতিজ্ঞ। তদন্ত প্রতিবেদনের ব্যাপারে তিনি গণমাধ্যমকে বলেন, কোনো প্রকার গাফলতি সহ্য করা হবেনা।

Unauthorized use or reproduction of The Finance Today content for commercial purposes is strictly prohibited.


Popular Article from FT বাংলা