March 29, 2024, 12:05 pm


সামি

Published:
2019-12-16 01:33:03 BdST

সিলেট-তামাবিল চার লেনপ্রকল্পে অর্থায়নে সম্মত এআইআইবি


এফটি বাংলা

সিলেট থেকে তামাবিল পর্যন্ত ৫৬ কিলোমিটার সড়ক চার লেনে উন্নীত করছে সরকার। চারটি আন্তর্জাতিক করিডোরের সঙ্গে যুক্ত মহাসড়কটির উন্নয়নকাজে অর্থায়ন করবে এশিয়ান ইনফ্রাস্ট্রাকচার ইনভেস্টমেন্ট ব্যাংক (এআইআইবি)। প্রকল্পটির মাধ্যমে দেশের যোগাযোগ খাতে প্রথমবারের মতো বিনিয়োগ করতে যাচ্ছে সংস্থাটি।

সড়ক ও জনপথ (সওজ) অধিদপ্তরের কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, সিলেট-তামাবিল মহাসড়ক চার লেনে উন্নীত করার বিষয়ে এআইআইবির সঙ্গে আলোচনা হয়েছে। প্রকল্পটিতে অর্থায়ন করতে সম্মত হয়েছে সংস্থাটি। শিগগির এ নিয়ে সংস্থাটির সঙ্গে ঋণচুক্তি সম্পন্ন হবে বলে আশা করা যায়।

সিলেট থেকে তামাবিল পর্যন্ত মহাসড়কটির দৈর্ঘ্য ৫৬ দশমিক ১৬ কিলোমিটার। চার লেনে উন্নীত করার পাশাপাশি এর দুপাশে ধীরগতির যানবাহন চলাচলের জন্য আলাদা দুটি লেনও নির্মাণ করা হবে।

পুরো প্রকল্প বাস্তবায়নে প্রাক্কলিত ব্যয় ধরা হয়েছে ৩ হাজার ৭২৯ কোটি টাকা। এর মধ্যে ৩ হাজার ১০০ কোটি টাকার সংস্থান হবে এআইআইবির ঋণ নিয়ে। বাকি ৬২৯ কোটি টাকা জোগান দেবে সরকার।

সওজ অধিদপ্তর সূত্রে জানা গেছে, মহাসড়কটিতে অর্থায়নের বিষয়ে এআইআইবির কর্মকর্তাদের সঙ্গে অধিদপ্তরের কর্মকর্তাদের সর্বশেষ বৈঠক গত সপ্তাহেই অনুষ্ঠিত হয়েছে। পুরো বিষয়টি এখন নির্ভর করছে এআইআইবির পরিচালনা পর্ষদের অনুমোদনের ওপর। সেক্ষেত্রে এআইআইবির চলতি মাসে বা আগামী বছরের মার্চে অনুষ্ঠেয় বোর্ড সভায় সিলেট-তামাবিল চার লেন প্রকল্পে ঋণের বিষয়টি পরিচালনা পর্ষদের অনুমোদন পেতে পারে।

বিষয়টি সম্পর্কে জানতে চাইলে সওজ অধিদপ্তরের অতিরিক্ত প্রধান প্রকৌশলী (পরিকল্পনা ও রক্ষণাবেক্ষণ উইং) আশরাফুল আলম বলেন, চলতি মাসেই এআইআইবির পরিচালনা পর্ষদের সভা অনুষ্ঠিত হবে। যতদূর জেনেছি, এ সভাতেই সিলেট-তামাবিল প্রকল্পটি উঠতে পারে। কোনো কারণে যদি তা না হয়, সেক্ষেত্রে ব্যাংকটির আগামী বছরে অনুষ্ঠেয় প্রথম বোর্ড সভাতেই প্রকল্পটি অনুমোদন পেয়ে যাবে।

সিলেট সদর, দক্ষিণ সুরমা, জৈন্তাপুর ও গোয়াইনঘাট উপজেলার মধ্য দিয়ে যাবে মহাসড়কটি। প্রকল্পের সম্ভাব্যতা সমীক্ষা ও নকশা প্রণয়নের কাজও এরই মধ্যে শেষ হয়েছে। উন্নয়ন প্রকল্প পরিকল্পনাও (ডিপিপি) প্রস্তুত। ডিপিপি নিয়ে প্রকল্প মূল্যায়ন কমিটির (পিইসি) একটি সভাও এরই মধ্যে অনুষ্ঠিত হয়েছে। এআইআইবির সঙ্গে ঋণচুক্তি সম্পন্ন হলেই প্রকল্পটির কাজ শুরু করতে চায় সওজ অধিদপ্তর।

এদিকে ঢাকা থেকে সিলেট পর্যন্ত ২২৬ কিলোমিটার মহাসড়কটিও চার লেনে উন্নীতের কাজ করছে সওজ অধিদপ্তর। এ প্রকল্পে অর্থায়নের বিষয়ে এশীয় উন্নয়ন ব্যাংকের (এডিবি) নীতিগত সম্মতি পেয়েছে অধিদপ্তর। শুরুতে মহাসড়কটি চীনের অর্থায়নে জিটুজির মাধ্যমের নির্মাণের উদ্যোগ নিয়েছিল সরকার। অর্থনৈতিক ক্রয়সংক্রান্ত মন্ত্রিসভা কমিটিতে প্রস্তাবটি অনুমোদনও পেয়েছিল। চীনা ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান চায়না হারবারের সঙ্গে এ নিয়ে একটি সমঝোতাও সই হয়। যদিও পরবর্তী সময়ে সে পরিকল্পনা থেকে বের হয়ে এসে বিদেশী ঋণ খুঁজতে শুরু করে সরকার।

২০১৫ সালের প্রাক্কলিত ব্যয় অনুযায়ী, ঢাকা-সিলেট চার লেন মহাসড়কের নির্মাণ ব্যয় হওয়ার কথা ছিল ১২ হাজার ৬৬৫ কোটি ৭০ লাখ টাকা। তবে সে সময় যে নকশার আলোকে ব্যয় প্রাক্কলন করা হয়েছিল, নতুন নকশায় অনেকগুলো কাজ তার চেয়ে বেশি ধরা হয়েছে। ফলে প্রকল্পটির নির্মাণ ব্যয়, আগের প্রাক্কলনের চেয়ে বেশি হবে বলে জানিয়েছেন অধিদপ্তরের কর্মকর্তারা।

আগে মহাসড়কটির যে নকশা করা হয়েছিল, তাতে ধীরগতির যানবাহন চলাচলের ব্যবস্থা ছিল। পাশাপাশি বিভিন্ন ইন্টারচেঞ্জে চারটি ফ্লাইওভার নির্মাণের পরিকল্পনা ছিল। তবে রেল ক্রসিং ও পথচারী পারাপারের জন্য আন্ডারপাস বা ওভারপাসের কোনো সংস্থান ছিল না।

নতুন নকশায় ফ্লাইওভারের সংখ্যা বাড়ানোর পাশাপাশি আন্ডারপাস রাখার পরিকল্পনা করা হচ্ছে। এছাড়া ধীরগতির যান চলাচলের জন্য যে লেন নির্মাণ করা হবে, সেটিকে মূল মহাসড়কের সমান উচ্চতায় নির্মাণের পরিকল্পনাও রয়েছে। মহাসড়কটিতে যান চলাচল নিরাপদ রাখতে সর্বোচ্চসংখ্যক গ্রেড সেপারেটিংয়ের ব্যবস্থা রাখার পরিকল্পনা করা হচ্ছে।

জানা গেছে, ঢাকা-সিলেট মহাসড়ক চার লেনে উন্নীতকরণ প্রকল্পটিতে আলাদা করে জমি অধিগ্রহণের প্রয়োজন নেই। কারণ এজন্য এরই মধ্যে আলাদা একটি প্রকল্প একনেকে অনুমোদিত হয়েছে, যাতে প্রাক্কলিত ব্যয় ধরা হয়েছে প্রায় ৫ হাজার কোটি টাকা।

Unauthorized use or reproduction of The Finance Today content for commercial purposes is strictly prohibited.


Popular Article from FT বাংলা