02/21/2025
এফ.টি অনুসন্ধান: | Published: 2025-02-08 19:44:12
পতিত ফ্যাসিস্ট আওয়ামী সরকারের প্রেতাত্মাদের দাপট বাংলাদেশ রেলওয়েতে এখনও বিদ্যমান। টেন্ডার জালিয়াতি এবং প্রকল্পের টাকা লুট করে ঠিকাদার ও কর্মকর্তাগন শত শত কোটি টাকার মালিক বনে গেছেন।
বর্তমান তত্বাবধায়ক সরকারের মেয়াদ ৬ মাস পেরিয়ে গেলেও এখন পর্যন্ত বিগত সরকারের অনুগত প্রেতাত্মাদের গুরুত্বপূর্ন চেয়ার থেকে সরাতে পারেনি। বাংলাদেশ রেলওয়েতে কালো বিড়াল এখনও বিদ্যমান। রেলওয়ের জমি দখল, নিয়োগ বাণিজ্য, টেন্ডার জালিয়াতি, অতিরিক্ত মূল্যে নিম্নমানের যন্ত্রপাতি ও নিত্য প্রয়োজনীয় কেনাকাটা সবই এখনও নিয়ন্ত্রনে রয়েছে আওয়ামী লুটেরা সিন্ডিকেটের দখলে। আর তাদের পিছনে থেকে ইন্ধন যোগাচ্ছে গনমাধ্যমের একশ্রেনীর দালাল প্রকৃতির কিছু গণমাধ্যমকর্মী ও কিছু সম্পাদক। রেলওয়ে ভবন মনে হচ্ছে এদের আবাসভূমি।
বাংলাদেশ রেলওয়ে ভবনের গুরুত্বপূর্ণ রুমে ঘন্টার পর ঘণ্টা গণমাধ্যমের কিছু ব্যক্তি ও দু’একজন সম্পাদককে বসে থাকতে দেখা যাচ্ছে। দিনের পর দিন ঘন্টার পর ঘন্টা এদের নিয়ে উর্ধ্বতন কর্মকর্তারা কি গোপন মিটিং করেন তা অনুসন্ধান করলে থলের বিড়াল সব বের হয়ে আসবে। মূলত: এই গণমাধ্যমের ব্যক্তিদের সাহস যোগানোর কারনেই রেলওয়েতে “কালো বিড়ালের” তৈরী হয় বলে একাধিক সূত্র নিশ্চিত করেছে।
আল ফাত্তাহ মোঃ মাসুদুর রহমান বাংলাদেশ রেলওয়ের অতিরিক্ত মহাপরিচালক (অবকাঠামো)। বিসিএস ২০তম ব্যাচের অত্যন্ত দাপুটে কর্মকর্তা। একই সাথে তিনি বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব রেলওয়ে ব্রিজ নির্মাণ প্রকল্পের পরিচালক। বিগত আওয়ামী সরকারপ্রধানের অত্যন্ত আস্থাভাজন ও বিশ্বস্ত একজন কর্মকর্তা। পুরষ্কারস্বরূপ তিনি তার সিনিয়র অনেক কর্মকর্তাদের ডিঙিয়ে গুরুত্বপূর্ণ অতিরিক্ত মহাপরিচালক (অবকাঠামো) ও বাংলাদেশের অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ব্যয়বহুল বঙ্গবন্ধু রেল ব্রীজ প্রকল্পের পরিচালকের দায়িত্ব পেয়েছেন। এর পূর্বে তিনি বাংলাদেশ রেলওয়ে (পশ্চিম) জোনের প্রধান প্রকৌশলী পদে আসীন ছিলেন।
রেলওয়ে (পশ্চিম) প্রধান প্রকৌশলী থাকাকালীন সময়ে তার নিকটাত্মীয়ের মাধ্যমে সমস্ত ঠিকাদারী কাজ সম্পন্ন করতেন। শুধু তাই নয়, নিয়োগ-বাণিজ্যের কথা বলে সাধারণ জনগণের নিকট থেকে হাতিয়েছেন লাখ লাখ টাকা।
গাইবান্ধা জেলার গোবিন্দগঞ্জ উপজেলার মহিমাগঞ্জের স্কুল শিক্ষিক পিতার সন্তান আল ফাত্তাহ মোঃ মাসুদুর রহমান। এলাকায় তার পরিবারের সুনাম সর্বজনবিদিত। কিন্তু ভেতরে ভেতরে এই অতিরিক্ত মহাপরিচালক শেখ হাসিনার অত্যন্ত আস্থাভাজন হওয়ার কারনে বাংলাদেশের সর্ববৃহৎ রেল সেতু প্রকল্পের প্রকল্প পরিচালকের দায়িত্ব পেয়ে নেমে পড়েন শিক্ষক পিতার সারা জীবনের সুনামকে প্রশ্নবিদ্ধ করতে। তার বিরুদ্ধে দুর্নীতি ও অনিয়মের অনেক গুরুতর অভিযোগ বেরিয়ে আসছে। মূলত: আওয়ামী সরকারের অনুচর বলে খ্যাত এই ফাত্তাহ।
রেলওয়ের সংশোধনী প্রকল্প সময়সীমা দুই বছর বাড়িয়ে ২০২০ সালে বঙ্গবন্ধু রেল সেতু প্রকল্পের ব্যয় ৯ হাজার ৭৩৪ কোটি টাকা থেকে বেড়ে ১৬ হাজার ৮০৬ কোটি ৪৪ লাখ ধরা হয়। দুর্নীতি ও অনিয়মের সুযোগ করে দেয়ার জন্যই মূলত: ৭ হাজার কোটি টাকা অতিরিক্ত ব্যয় ধরা হয়। নির্মানকাজের ৭২% ব্যয় নির্বাহ করা হয় জাইকা থেকে। সংশোধিত প্রকল্প প্রস্তাবে জমি অধিগ্রহণ, জমি ব্যবহার ও আনুষঙ্গিক ব্যয় মূল অনুমোদিত প্রকল্পের প্রস্তাবে ছিলো না। ২০২৫ সালে প্রকল্পের কাজ শেষ হওয়ার কথা।
মূলত প্রকল্প ব্যয় বৃদ্ধি করা হয় সরকার দলীয় ব্যক্তিদের সুবিধা প্রদান ও লুটপাট করার জন্য।বিভিন্ন সূত্র থেকে জানা গেছে যে বিগত ফ্যাসিস্ট সরকারের প্রধান শেখ হাসিনার নামে প্রকল্প পরিচালক প্রকল্প থেকে বিভিন্ন কৌশলে নির্দিষ্ট অংশের টাকা মানি লন্ডারিং এর মাধ্যমে বিদেশে পৌঁছে দিয়েছেন।
বঙ্গবন্ধু রেল সেতু প্রকল্পের পরিচালক আল ফাত্তাহ সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও তার বোন শেখ রেহানার আর্শীবাদেই একা দু’টি গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্ব পেয়েছেন। মূলত বিগত ফ্যাসিস্ট সরকারের এজেন্ডা বাস্তবায়ন করাই ফাত্তাহ’র মূল উদ্দেশ্য। তারই আশ্রয় ও প্রশ্রয়ে আওয়ামী প্রেতাত্মা ও সুবিধাভোগীরা এখনও দাবিয়ে বেড়াচ্ছে রেল ভবন।
এছাড়াও বাংলাদেশের রেলওয়ের ঠিকাদারী কাজও তাদের নির্দিষ্ট সিন্ডিকেটের মাধ্যমে নিয়ন্ত্রণ করা হচ্ছে। বিগত ফ্যাসিস্ট সরকারের যে কয়জন রেলমন্ত্রী এসেছেন প্রতিজন দুর্নীতির দায়ে অভিযুক্ত।
“দ্য ফিন্যান্স টুডের” অনুসন্ধানে প্রায় ডজন খানেক দুর্নীতিবাজ কালো বিড়ালের দুর্নীতি ও অবৈধ সম্পদের তথ্য উঠে এসেছে।
বিগত ফ্যাসিস্ট সরকারের অনুচর আল ফাত্তাহর বিরুদ্ধে রেলের অবৈধ টাকা বিদেশে পাচার করার ব্যাপক অভিযোগ রয়েছে। এনিয়ে আমাদের অনুসন্ধান চলমান রয়েছে। ধারাবাহিক প্রতিবেদনে “রেলওয়ের কালো বিড়ালের” মুখোশ উন্মোচন করা হবে।
Editor & Publisher : Md. Motiur Rahman
Pritam-Zaman Tower, Level 03, Suite No: 401/A, 37/2 Bir Protik Gazi Dastagir Road, Purana Palton, Dhaka-1000
Cell : (+88) 01706 666 716, (+88) 01711 145 898, Phone: +88 02-41051180-81