07/06/2025
নেহাল আহমেদ | Published: 2025-07-06 09:12:39
মহররম ও আশুরার শিক্ষা ও তাৎপর্যকে রোজ কিয়ামত পর্যন্ত চিরভাস্বর করে রাখবে কারবালার শহীদানের অবদান। মহররম পবিত্রতা, মর্যাদা, সম্মান ও সুনাম–সুখ্যাতির প্রতীক। আশুরা পূর্ণতা প্রাপ্তি ও সফলতার আকর; কারবালা বালামসিবত ও পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হওয়ার প্রেরণা।
সৃষ্টির শুরু থেকে নানা ঘটনার কারণে হিজরি মহররম মাসের দশম দিনটি তাৎপর্যপূর্ণ। সবশেষ ফোরাত নদীর তীরে কারবালার প্রান্তরে শেষ নবী হজরত মুহাম্মদ (সা.)-এর প্রিয় দৌহিত্র ইমাম হোসাইন (রা.)-এর এই তারিখে শাহাদত বিশ্বব্যাপী মুসলমানদের কাছে শোক ও ত্যাগের মহিমার এক অনন্য অনুষজ্ঞ।
আশুরা শব্দের মূল অর্থ সেমেটীয় ভাষায় দশম; তাই এর নাম আক্ষরিকভাবে অনুবাদ করা হয়েছে যার অর্থ "দশম দিন"। ইসলামপন্থাবিদ জে. ওয়েনসিঙ্কের মতে নামটি আরামীয় নির্ধারক সমাপ্তি সহ হিব্রু শব্দ ʿāsōr থেকে এসেছে। চান্দ্র হিজরি বর্ষপঞ্জি চাঁদের মাসের বর্ষ শুরু হয় মহরম মাস দিয়ে। মহরম মাসের সবচেয়ে তাৎপর্যপূর্ণ ঘটনা কারবালার ইতিহাস।
মীর মোশাররফ হোসেনের বিষাদ সিন্ধু মনে হয় কারবালার সবচেয়ে উল্লেখযোগ্য বই। এই কাহিনী নিয়ে গড়ে উঠেছে অসংখ্য গান কবিতা। পুথিপাঠ করা হতো বাড়ীতে বাড়ী হতো নানান রকম লোকজ কালচার।
মহররমের শোকের গান যা জারিগান নামে পরিচিত, তা এই মাসের একটি গুরুত্বপূর্ণ অংশ। এই গানগুলির মাধ্যমে কারবালার ঘটনা বর্ণনা করা হয় এবং শোক প্রকাশ করা হয়।
মহররম মাসের দশম দিন ইসলামে বিশেষ মর্যাদাসম্পন্ন একটি দিন। প্রচলিত আছে যে, এই দিনে বেশকিছু গুরুত্বপূর্ণ ঘটনা ঘটেছিল। এই ঘটনাগুলোর মধ্যে উল্লেখযোগ্য হলো:
এই দিনে প্রথম মানব আদি পিতা আদম-কে সৃষ্টি করেন আল্লাহ। আদম (আ:) কে এই দিনেই স্বর্গ বা জান্নাতে স্থান দেয়া হয় এবং পরবর্তীতে এই দিনেই পৃথিবীতে পাঠিয়ে আল্লাহ তাকে প্রতিনিধি মনোনীত করেছেন। নূহ (আ:) এর সময়কালে এই দিনে মহাপ্লাবন হয়।
ইব্রাহীম (আ:) জন্ম নেন এই দিনে এবং মূসা (আ:) ও তার সাথীরা ফেরাউনের কবল থেকে উদ্ধার পানও এই দিনে। ফেরাউন ও তার সৈন্যদেরকে আল্লাহ এই দিনে নীল নদের পানিতে ডুবিয়ে মারেন।
ইউনুছ (আ:) মাছের পেট থেকে মুক্তি পান এই দিনে।আইয়ূব (আ:) রোগ মুক্তি পান এই দিনে। ঈসা (আ:) (খ্রিস্টধর্ম মতে যিশু) এই দিনে জন্ম নেন এবং পরবর্তীতে তাকে সশরীরে ঊর্ধ্বাকাশে উঠিয়ে নেয়া হয় এই দিনে।
নবী মুহাম্মদ (সা:) এর দৌহিত্র ইমাম হুসাইন এই দিন কারবালার ময়দানে ইয়েজিদের সৈন্যদের হাতে মৃত্যুবরণ করেন।
এই দিনটিতে বিশ্বের মুসলমানদের মতো বাংলাদেশের মুসলমানরাও নামাজ-রোজাসহ বিভিন্ন নফল ইবাদত করে থাকেন। শিয়া সম্প্রদায় তাজিয়া মিছিল বের করে থাকে। দিনটি উপলক্ষ্যে জাতীয় মসজিদ বায়তুল মোকাররমে ইসলামিক ফাউন্ডেশন আয়োজন করেছে আলোচনা সভা ও দোয়া মাহফিল। এই উপলক্ষ্যে আজ রোববার সরকারি ছুটির দিন।
দিনটি উপলক্ষ্যে বাণী দিয়েছেন রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিন ও প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূস। প্রধান উপদেষ্টা তার বাণীতে পবিত্র আশুরার মর্মবাণী অন্তরে ধারণ করে সমাজে সত্য ও ন্যায় প্রতিষ্ঠায় অগ্রণী ভূমিকা পালন করতে সবার প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন।
Editor & Publisher : Md. Motiur Rahman
Pritam-Zaman Tower, Level 03, Suite No: 401/A, 37/2 Bir Protik Gazi Dastagir Road, Purana Palton, Dhaka-1000
Cell : (+88) 01706 666 716, (+88) 01711 145 898, Phone: +88 02-41051180-81