09/18/2025
নিজস্ব প্রতিবেদক | Published: 2025-09-18 12:52:25
নিত্যপণ্যের দাম কমাতে বর্তমান অন্তর্বর্তী সরকার নানামুখী উদ্যোগ নিলেও স্বস্তি ফেরেনি বাজারে। বাজার স্থিতিশীল রাখতে সরকার চাল, আলু, পেঁয়াজ, ভোজ্যতেল ও ডিমের দাম নির্ধারণ করে দিলেও তা বাস্তবায়ন করা সম্ভব হয়নি। গত এক বছরে ওষুধসহ প্রায় সকল প্রকার ব্যবহার্য ও খাদ্যপণ্যের দাম বেড়েছে। সংসারের খরচ মেটাতে নিম্ন আয়ের মানুষের নাভিশ্বাস উঠেছে অনেক আগেই।
সংশ্লিষ্টরা বলছেন, দেশের প্রতিটি বাজার ও সড়কে চাঁদাবাজদের দৌরাত্ম্য, অধিক মুনাফা, সিন্ডিকেটের দৌরাত্ম্য, পরিবহন খরচ বৃদ্ধি, অধিক বৃষ্টিতে ফসলের উৎপাদন ব্যাহত হওয়াসহ সরকারের সঠিক মনিটরিংয়ের অভাবে নিত্যপণ্যের বাজার ক্রমশই সাধারণ মানুষের ক্রয়-ক্ষমতার বাইরে চলে যাচ্ছে। সরকারের ওপর মহলের নির্দেশনাও কাজে আসছে না।
জানা গেছে, বাজার নিয়ন্ত্রণের বিষয়টি নিয়ে কথা বলেছেন সরকারের সবাই। প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস বলেছেন, দেশের যেকোনও পণ্যের বাজারে চাঁদাবাজির বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে সরকার বদ্ধপরিকর। বিভিন্ন গোয়েন্দা সংস্থাসহ আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যদের পাশাপাশি সরকারের সব উইং এ বিষয়ে কাজ করছে।
অর্থ উপদেষ্টা ড. সালেহউদ্দিন দ্রব্যমূল্য নিয়ন্ত্রণে রাখতে সংশ্লিষ্টদের সঙ্গে নিয়ে জরুরি সভা করেছেন। খাদ্য উপদেষ্টা আলী ইমাম মজুমদার সিন্ডিকেটের বিরুদ্ধে কঠোর হওয়ার কথা বলেছেন। বাণিজ্য উপদেষ্টা শেখ বশিরউদ্দিন বলেছেন, দেশে কোনও সিন্ডিকেট থাকতে পারবে না। তিনি জানান, এ বিষয়ে অর্থ, খাদ্য, মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ ও বাণিজ্য মন্ত্রণালয় একযোগে কাজ করছে।
তবে এত কিছুর পরেও বাজারে স্বস্তি মিলছে না সাধারণ মানুষের।
এক বছরে পাল্লা দিয়ে বেড়েছে দ্রব্যমূল্য
সরকারের বাণিজ্য সংস্থা ট্রেডিং করপোরেশন অব বাংলাদেশ (টিসিবি) সূত্রে জানা গেছে, ২০২৪ সালের ৮ আগস্ট যেদিন অন্তর্বর্তী সরকার দায়িত্বভার গ্রহণ করেছে সেদিন বাজারে মোটা চালের কেজি ছিল ৫০ থেকে ৫৪ টাকা। খোলা আটার কেজি ছিল ৪০ থেকে ৪৫ টাকা। খোলা সয়াবিনের লিটার ছিল ১৪৫ থেকে ১৫৫ টাকা। পাম সুপারের লিটার ছিল ১৩৪ থেকে ১৪০ টাকা। বড় দানার মসুর ডালের কেজি ছিল ১০৫ থেকে ১১০ টাকা। দেশি পেঁয়াজের কেজি ছিল ১১০ থেকে ১২০ টাকা। ব্রয়লার মুরগির কেজি ছিল ১৭০ থেকে ১৮০ টাকা। ডিমের হালি ছিল ৫০ থেকে ৫৪ টাকা। চিনির কেজি ছিল ১২৫ থেকে ১৩৫ টাকা। আর প্রতি কেজি আলুর দাম ছিল ৫৫ থেকে ৬০ টাকা।
অপরদিকে, এক বছর পরে এসে ২০২৫ সালের ১৫ সেপ্টেম্বরে দেশের বাজারে মোটা চালের কেজি ৬০ থেকে ৬২ টাকা। আটার কেজি ৫০ থেকে ৫৪ টাকা। খোলা সয়াবিন তেলের কেজি ১৭৬ থেকে ১৭৮ টাকা। পাম সুপার বলতে বাজারে কোনও তেল নেই; সবই সয়াবিন নামে বিক্রি হচ্ছে। বড় দানার মসুর ডাল ১২০ থেকে ১৩৫ টাকা। দেশি পেঁয়াজের কেজি ৭০ থেকে ৮০ টাকা। প্রতিকেজি চিনির দাম বর্তমানে ১৬০ থেকে ১৭০ টাকা। আলুর কেজি ৩০ থেকে ৩৫ টাকা। তবে খোলা ভ্যানে ২৫ টাকা কেজি দরে আলু বিক্রি করতে দেখা গেছে।
এদিকে, ২০২২ সালে জুলাইতে প্রতি ডলারের মূল্য ছিল ৮৫ টাকা। বর্তমানে দেশের বাজারে ডলার বিক্রি হচ্ছে ১১৮ থেকে ১২০ টাকা।
শুধু খাদ্য পণ্যই নয়, বেড়েছে সাবান, সোডা, শ্যাম্পু, লোশনসহ সকল প্রকার ওষুধের দামও।
এ প্রসঙ্গে জানতে চাইলে সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগ সিপিডির ফেলো ড. মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, ‘পণ্যের সংকট যাতে দেখা না দেয়। সেজন্য দীর্ঘমেয়াদি পরিকল্পনা নিতে হবে। ব্যবসায়ীদের রেজিস্টারভুক্ত থাকতে হবে। সব ধরনের লেনদেন ব্যাংকের মাধ্যমে করতে হবে ও রসিদ রাখতে হবে। বাজারে যেকোনও কিছুর বিনিময়ে সরকারের মনিটরিং বাড়াতে হবে।’
Editor & Publisher : Md. Motiur Rahman
Pritam-Zaman Tower, Level 03, Suite No: 401/A, 37/2 Bir Protik Gazi Dastagir Road, Purana Palton, Dhaka-1000
Cell : (+88) 01706 666 716, (+88) 01711 145 898, Phone: +88 02-41051180-81