03/16/2025
Siyam Hoque | Published: 2020-04-23 19:42:12
NEWS DESK
করোনা মহামারির কারণে এ বছর সারাবিশ্বে রেমিট্যান্স কমবে ২০ শতাংশ। আর বাংলাদেশে কমবে ২২ শতাংশ। এ প্রক্ষেপণ বিশ্বব্যাংকের। বুধবার ওয়াশিংটন থেকে প্রকাশিত অভিবাসন ও উন্নয়ন নিয়ে বিশ্বব্যাংকের সর্বশেষ রিপোর্টে দেশ ও অঞ্চলভিত্তিক ২০২০ সালের রেমিট্যান্সের প্রক্ষেপণ রয়েছে। 'কভিড-১৯-এর আয়নায় অভিবাসন' শিরোনামের রিপোর্টে অভ্যন্তরীণ ও বহিস্থ উভয় অভিবাসনের সম্ভাব্য অবস্থার পর্যালোচনা রয়েছে।
বাংলাদেশে গত বছর প্রবাসীরা ব্যাংকিং চ্যানেলে ১৮ দশমিক ৩ বিলিয়ন ডলার বা ১ হাজার ৮৩০ কোটি ডলার রেমিট্যান্স পাঠিয়েছেন। আগের বছরের চেয়ে যা ১৮ শতাংশ বেশি ছিল। বিশ্বব্যাংক বলছে, এ বছর বাংলাদেশে রেমিট্যান্স কমে ১৪ বিলিয়ন বা ১ হাজার ৪০০ কোটি ডলারে দাঁড়াবে। বাংলাদেশের পাশাপাশি দক্ষিণ এশিয়ার সব দেশে ২০২০ সালে রেমিট্যান্স কমবে।
চলতি অর্থবছরে রেমিট্যান্সে ২ শতাংশ প্রণোদনা ঘোষণা করে সরকার। এর প্রভাবে এবং অন্যান্য কারণে করোনাভাইরাস সংক্রমণের আগে বাংলাদেশে রেমিট্যান্স প্রবাহে বেশ গতি ছিল। করোনা আঘাতের কারণে অতি দ্রুত রেমিট্যান্সের ওপর নেতিবাচক প্রভাব পড়েছে। বাংলাদেশ ব্যাংকের হিসাবে চলতি অর্থবছরের ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত ৮ মাসে রেমিট্যান্স বেড়েছিল ২০ দশমিক ২০ শতাংশ। মার্চ মাসের মাঝামাঝি পর্যন্ত রেমিট্যান্স প্রবাহে ভালো প্রবৃদ্ধি ছিল। গত ১২ মার্চ পর্যন্ত প্রবাসীরা মোট ৮০ কোটি ৪০ লাখ ডলার দেশে পাঠান। তবে শেষ ১৯ দিনে আসে মাত্র ৪৮ কোটি ২৮ লাখ ডলার। যে কারণে মার্চ মাসে মাত্র ১২৮ কোটি ৬৮ লাখ ডলার প্রবাসী আয় এসেছে। গত বছরের একই মাসে এর পরিমাণ ছিল ১৪৫ কোটি ৮৬ লাখ ডলার।
মার্চ মাসে প্রবাসী আয় কমেছে ১৭ কোটি ১৮ লাখ ডলার বা ১১ দশমিক ৭৮ শতাংশ। আগের বছরের এপ্রিল মাসে ১৪৩ কোটি ৪৩ লাখ ডলার প্রবাসী আয় এসেছিল। এ বছর এপ্রিল মাসে সেই তুলনায় রেমিট্যান্স যে অনেক কম হবে তাতে সন্দেহের অবকাশ নেই। কেননা বিশ্বের অধিকাংশ দেশে লকডাউনের কারণে অনেকে এখন টাকা পাঠাতে পারছে না। আবার এ সময়ে অনেকের আয় না থাকায় তারা নিজেরাই সমস্যায় আছে।
বিশ্বব্যাংকের রিপোর্টে বলা হয়, করোনাভাইরাসের প্রাদুর্ভাবের কারণে বিশ্বব্যাপী এ বছর অভিবাসন ও কর্মসংস্থান কমে যাবে। তাদের মজুরির ওপরও নেতিবাচক প্রভাব পড়বে। অভিবাসীদের স্বাস্থ্যবীমা সংকুচিত হবে। এতে আরও বলা হয়, করোনার কারণে ভ্রমণে নিয়ন্ত্রণ আরোপের আগে বাংলাদেশসহ দক্ষিণ এশিয়ার দেশগুলোতে বিদেশে থাকা শ্রমিকরা ফেরত এসেছেন। কোনো কোনো ক্ষেত্রে বিভিন্ন দেশের সরকার প্রবাসী শ্রমিকদের চলে যেতে বলেছে।
বিশ্বব্যাংক বলেছে, বিভিন্ন গবেষণায় দেখা গেছে, নিম্ন ও মধ্যম আয়ের দেশগুলোতে দারিদ্র্য বিমোচনে প্রবাসীদের পাঠানো অর্থ সাম্প্রতিক বছরগুলোতে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রেখেছে। এর পাশাপাশি পুষ্টি উন্নয়নে, শিক্ষার পেছনে ব্যয়ে এবং শিশু শ্রম কমাতে অবদান রেখেছে। রেমিট্যান্স প্রবাহে পতন হলে এসব খাতে ব্যয় কমে যাবে। রেমিট্যান্স গ্রহীতা পরিবারগুলোকে বেশিরভাগ অর্থ খাদ্য ও অন্যান্য জীবিকার প্রয়োজনে ব্যয় করতে হবে। রেমিট্যান্সনির্ভর অনেক পরিবারের ঝুঁকি বেড়ে যাবে।
বিশ্বব্যাংকের প্রেসিডেন্ট ডেভিড ম্যালপাস বলেন, কভিড-১৯ এর কারণে বিশ্বে যে অর্থনৈতিক মন্দা শুরু হয়েছে, তার প্রভাবে মানুষের নিজ দেশে অর্থ প্রেরণের ক্ষমতা কমে যাবে। উন্নয়নশীল দেশগুলোর অর্থনীতিতে রেমিট্যান্সের ভূমিকা খুবই গুরুত্বপূর্ণ। এ বিবেচনায় বিশ্বব্যাংক রেমিট্যান্স পাঠানোর ব্যয় কমাতে বিভিন্ন উদ্যোগ নেবে। কভিড-১৯ মোকাবিলায় বিশ্বের সব দেশের সরকার যেসব পদক্ষেপ নিচ্ছে, তার মধ্যে অভিবাসীদেরও বিশেষভাবে অন্তর্ভুক্ত করার সুপারিশ করেছে বিশ্বব্যাংক। করোনার কারণে দেশগুলোর মধ্যকার অভিবাসন নিয়েও নানা সংকট তৈরি হবে বলে মনে করছে সংস্থাটি।
বিশ্বব্যাংকের তথ্য অনুযায়ী সারাবিশ্বে ২০১৯ সালে রেমিট্যান্সের অন্তর্মুখী প্রবাহ ছিল ৭১৪ বিলিয়ন ডলার। ২০২৯ সালে তা কমে ৫৭২ বিলিয়ন ডলারে দাঁড়াতে পারে। দক্ষিণ এশিয়ায় ১৪০ বিলিয়ন ডলারের রেমিট্যান্স এসেছিল গত বছর। এ বছর তা কমে ১০৯ বিলিয়ন ডলারে দাঁড়াতে পারে। দক্ষিণ এশিয়ার অন্য দেশের মধ্যে ভারতে রেমিট্যান্স কমতে পারে ২৩ শতাংশ। পাকিস্তানেও একই হারে কমার প্রক্ষেপণ করেছে বিশ্বব্যাংক।
Editor & Publisher : Md. Motiur Rahman
Pritam-Zaman Tower, Level 03, Suite No: 401/A, 37/2 Bir Protik Gazi Dastagir Road, Purana Palton, Dhaka-1000
Cell : (+88) 01706 666 716, (+88) 01711 145 898, Phone: +88 02-41051180-81