03/17/2025
বিশেষ প্রতিবেদক | Published: 2021-05-10 06:01:06
সরকার বিষয়টিকে মানবিক দৃষ্টিকোন থেকে বিবেচনা করেছিলো। সরকারের ভেতরে এক ধরনের মমত্ববোধও তৈরি হয়েছিলো এবং এক ধরনের অস্বস্তিবোধও তৈরি হয়েছিলো। যদি শেষ পর্যন্ত বেগম খালেদা জিয়ার কিছু হয় তাহলে এর দ্বায় দায়িত্ব সরকারের ওপরে বর্তাবে এরকম একটি শঙ্কাও তৈরি হয়েছিলো।
এক দিক থেকে মানবিক প্রধানমন্ত্রী, অন্যদিক থেকে খালেদা জিয়ার কিছু হয়ে গেলে এর দ্বায় দায়িত্ব সরকারের ওপরে বর্তাবে এরকম একটি শঙ্কা।
এই দুইয়ের সমন্বয়েই নিখুত পরিকল্পনা বাস্তবায়ন প্রায় নিশ্চিত হয়ে গিয়েছিলো। কিন্তু প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার দূরদৃষ্টি এবং চারদিকে চোখ-কান খোলা রাখার কারণেই নিখুত পরিকল্পনাটি ভেস্তে গেলো।
এই নিখুঁত পরিকল্পনার অংশ ছিলো এরকম যে বেগম খালেদা জিয়াকে অসুস্থ সাজানো হবে এবং অসুস্থ সাজিয়ে একটি নাটক তৈরি করা হবে। এই নাটকের প্রেক্ষিতে বেগম খালেদা জিয়াকে বিদেশে নিয়ে যাওয়ার জন্য আবেদন করা হবে। সরকার তখন ভীত থাকবে, খালেদা জিয়ার প্রতি সহানুভূতিশীল থাকবে এরকম অবস্থায় সহজে আবেদনটি গৃহীত হবে এবং খালেদা জিয়া লন্ডনে চলে আসবেন। লন্ডনে চলে আসার পর বিএনপি এবং তারেক জিয়া সরকারের বিরুদ্ধে আসল আন্দোলন শুরু করবেন। এই পরিকল্পনার সবকিছুই ঠিকঠাকভাবেই চলছিলো।
বেগম খালেদা জিয়া যখন প্রথম তার সিটিস্ক্যান করান তখন বোঝা যাচ্ছিলো যে তার পরিস্থিতি স্বাভাবিক আছে এবং তার সামান্য ফুসফুসে সংক্রমণ আছে তা একটা সময় ঠিক হয়ে যাবে। কিন্তু এর পরপরই লন্ডন থেকে বার্তা এলো এবং বলা হলো যে এই সুযোগে বেগম খালেদা জিয়াকে লন্ডনে নিয়ে আসতে হবে, তাকে অসুস্থ বানাতে হবে। তড়িঘড়ি করে তাকে নিয়ে যাওয়া হলো এভারকেয়ার হাসপাতালের কেবিনে এবং সেখান থেকে তাকে সিসিইউতে নিয়ে যাওয়া হলো।
এটি যে একটা সাজানো নাটক ছিলো তার প্রমাণ পাওয়া যায় এখন। কোনো চিকিৎসকই তার শারীরিক অবস্থা নিয়ে সঠিক তথ্য দিচ্ছিলেন না। 'স্থিতিশীল', 'অবস্থা অপরিবর্তিত' ইত্যাদি বিভ্রান্তিকর তথ্য দিয়ে একটি ধুম্রজাল তৈরির চেষ্টা করা হয়েছিলো। এ ছাড়া খালেদা জিয়াকে সিসিইউতে রেখেই শামীম ইস্কান্দার দৌঁড়ে ছুটে যান স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর বাসায়, বেগম খালেদা জিয়াকে বিদেশে প্রেরণ করা হবে এই আবেদন নিয়ে।
বাংলাদেশের অনেক ধনাঢ্য ব্যক্তিও করোনায় আক্রান্ত হয়ে বিদেশে যান নাই বা বিদেশে চিকিৎসার জন্য নেয়া সম্ভব হয়নি। যমুনা গ্রুপের প্রয়াত চেয়ারম্যান, অ্যাপেক্স গ্রুপের চেয়ারম্যানের স্ত্রীসহ একাধিক ধনাঢ্য ব্যক্তি করোনায় আক্রান্ত হয়েও বিদেশ যাওয়া সম্ভব হয়নি। সেখানে বেগম খালেদা জিয়া সিসিইউতে থাকা অবস্থায় ১০ ঘন্টা জার্নি করে তাকে লন্ডনে নিয়ে যাওয়া হবে এমন ভাবনায় খটকা লাগাটাই স্বাভাবিক।
আবেদনটি স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আইন মন্ত্রণালয়ে পাঠিয়ে দেন। আইনমন্ত্রী বলেন যে এটা নির্বাহী আদেশেই সম্ভব এবং সরকার যখন নির্বাহী আদেশ দেবেন তখন সরকারের নির্দেশেই বিশেষ করে প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশে এভারকেয়ার হাসাপাতালের সঙ্গে যোগাযোগ করা হয়।
এরপর হাসপাতালে গিয়ে পাওয়া যায় চাঞ্চল্যকর তথ্য। দেখা যায় যে বেগম খালেদা জিয়া আসলে সুস্থ আছেন এবং তার শারীরিক অবস্থা উন্নতির দিকে যাচ্ছে। এই মূহুর্তে তার কোনো ধরনের শারীরিক জটিলতা নেই এবং উন্নত চিকিৎসার জন্য তাকে যে বিদেশে নিয়ে যাওয়ার কথা বলা হচ্ছিলো সেটার বাস্তবে কোনো ভিত্তি নেই। এখানে সরকারের টনক নড়ে এবং এভারকেয়ার হাসপাতালের এই তথ্য পাওয়ার পর সরকার বুঝতে পারে যে পুরো ব্যাপারটি একটি নীলনকশা এবং নিখুঁত ছকে সাজানো ছিলো।
আর একটু হলেই হয়তো খালেদা জিয়া পাড়ি দিতেন বিদেশে এবং তার পরই দেখা যেত তার ও তারেকের আসল মূর্তি। তবে সরকারের শেষ মূহুর্তের বুদ্ধিদিপ্ততায় সেই উদ্যোগটি ভেস্তে গেলো।
Editor & Publisher : Md. Motiur Rahman
Pritam-Zaman Tower, Level 03, Suite No: 401/A, 37/2 Bir Protik Gazi Dastagir Road, Purana Palton, Dhaka-1000
Cell : (+88) 01706 666 716, (+88) 01711 145 898, Phone: +88 02-41051180-81