03/18/2025
নিজস্ব প্রতিবেদক | Published: 2022-07-18 03:32:05
ই-কমার্স প্রতিষ্ঠান ই–অরেঞ্জের মালিকানা নিয়ে উঠেছে নানা প্রশ্ন। প্রতিষ্ঠানটির প্রতিষ্ঠাতা মালিক সোনিয়া মেহজাবিন ২০২১ সালের ১ জানুয়ারি ই-অরেঞ্জ ডট শপ বিক্রি করে দেন। যার পক্ষে তিনি প্রয়োজনীয় নথিপত্র আদালতে উপস্থাপন করেছেন। তিনি প্রতিষ্ঠানটি বিক্রি করে দিয়েছেন বীথি আক্তারের কাছে। তিনি গত বছরের এপ্রিল মাসে প্রতিষ্ঠানটির দখল বুঝে নিয়ে পরিচালনা করছেন। এছাড়া এখন প্রতিষ্ঠানটির সার্ভারের নিয়ন্ত্রণ ও ব্যাংক হিসাব সহ অন্যান্য সবকিছু যেমন ওয়্যারহাউজ, কল সেন্টার ও অফিস বিথী আক্তারের কাছে।
ই-অরেঞ্জের প্রতিষ্ঠাতা সোনিয়া মেহজাবিনের বাবার নাম শেখ আব্দুস সালাম ও স্বামীর নাম মাসুকুর রহমান। ই-অরেঞ্জ ডট শপ ছিল একক মালিকানাধীন অনলাইন ব্যবসা প্রতিষ্ঠান। এটি ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশন থেকে ট্রেড লাইসেন্সধারী, যার ট্রেড লাইসেন্স নম্বর - ১৫০৫১৮, ইস্যু তারিখ ৩০ জুলাই ২০১৯, ইস্যু সিরিয়াল নম্বর ৩১৮, ওয়ার্ড ১৯। বিন নম্বর ০০৩৬২৮০২৭-০১০১। প্রতিষ্ঠানের কর্পোরেট অফিস দি গ্লাস হাউস, প্লট-২, বি-এস ই(বি), ১৪ তলা, রোড নং-৩৮, গুলশান -১, ঢাকা-১২১২। অপারেশন অফিস– বাড়ি নং-৫/এ, পঞ্চম তলা, রোড নং-১৩৬/১৩৭, গুলশান-১, ঢাকা-১২১২।
অসুস্থতা ও পারিবারিক কারণে ই-অরেঞ্জ পরিচালনা করতে সময় দিতে পারছিলেন না সোনিয়া মেহজাবিন। তিনি ২০২১ সালের ১ জানুয়ারি মিরপুর মডেল থানা এলাকার জনৈক আব্দুল মালেকের কন্যা বীথি আক্তারের সঙ্গে ই-অরেঞ্জ এর বিক্রয় চুক্তি সম্পাদন করেন। যার নোটারি পাবলিক রেজিস্ট্রেশন নম্বর-৮। তারিখ ১৩ জানুয়ারী ২০২১। এর আইনজীবী ছিলেন মোঃ মনজুর কাদির।
এখানে উল্লেখ্য যে এই বিক্রয় সম্পাদনে জনৈক আমান উল্লাহ চৌধুরীকে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করতে শোনা যায়। আমান উল্লাহ ১লা জুন ২০২১ থেকে প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা হিসেবে কর্মরত আছেন।
বিক্রয় চুক্তি অনুযায়ী, এপ্রিল ২০২১ থেকে 'ই-অরেঞ্জ' এর সকল দায়িত্ব বুঝিয়ে দেয়া হয় নতুন মালিককে। চুক্তিপত্র অনুসারে নতুন মালিক তার ব্যবসা পরিচালনার প্রয়োজনে পুরাতন মালিক ও তার টীমের কাছ থেকে ৩ মাস সহায়তা নেন।
পুরাতন মালিক সোনিয়া মেহজাবিন কোভিড আক্রান্ত হয়ে অসুস্থ্য ছিলেন। তার কোভিড নেগেটিভ আসার পর গত বছরের ১৯ জুলাই স্বশরীরে হাজির হয়ে উত্তর সিটি করপোরেশনের অফিসে নতুন মালিককে ট্রেড লাইসেন্স হস্তান্তর করেন। যার প্রেক্ষিতে ই-অরেঞ্জ ব্রাক ব্যাংকের হিসাব ও আইপিডিসি হিসাব হস্তান্তর করা হয়। পরবর্তী সময়ে বীথি আক্তার ব্রাক ব্যাংক ও আইপিডিসি হতে লেনদেনও করেন। এছাড়া দায়িত্ব হস্তান্তরের সঙ্গে সঙ্গেই ই-অরেঞ্জের সার্ভার আইডি ও পাসওয়ার্ড বীথি আক্তারকে হস্তান্তর করা হয়েছে।
আরো উল্লেখ্য যে, ই-অরেঞ্জ এর কর্মীদের, একটি ওয়্যারউজ, কল সেন্টার অফিস এবং অপারেশন অফিস নতুন মালিক বীথি আক্তার ও প্রতিষ্ঠানের সিওও আমান উল্লাহর কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে। এপ্রিল ২০২১ থেকে বীথি আক্তার ও তার প্রধান সহযোগী আমান উল্লাহ চৌধুরী ই-অরেঞ্জ পরিচালনা করে আসছিলেন।
সংশ্লিষ্টরা জানান, ২০২১ সালের জুন থেকে প্রতিষ্ঠানটির গ্রাহকদের মধ্যে একধরনের অস্থিরতা তৈরি হয়েছে। লকডাউনজনিত কারণে সময়মতো পণ্য সরবরাহ করা সম্ভব হয়নি। তাছাড়া মালিকানা পরিবর্তনজনিত অব্যবস্থাপনা ত্রুটির কারনেও কিছু অস্থিরতা তৈরি হতে পারে। এই পরিস্থিতিতে একটি মহল সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে সোনিয়া মেহজাবিন ও পরিবারের বিভিন্ন সদস্যদের ছবি পোস্ট করে কাল্পনিক তথ্য সম্বলিত নানা অপপ্রচার পরিচালনা করতে থাকে। তারা কাল্পনিক সম্পদের পরিমাণ উল্লেখ করে উষ্কানীমুলক বক্তব্য প্রচার করতে থাকে।
একাধিক সূত্র থেকে জানা যায়, সোনিয়া মেহজাবিন সকল নিয়ম মেনে ই-অরেঞ্জ বিক্রয় ও পরিচালনা পর্যদ হাত বদল করেছেন। বীথি আক্তার ও আমান উল্লাহকে ই-অরেঞ্জ বিক্রয় করার পর পরিচালনার দায়িত্ব বুঝিয়ে দিয়েছেন। এমনকি আমান উল্লাহকে সিওও হিসেবে নিয়োগ দিয়েছেন বীথি আক্তার। গত বছরের ১ জুন থেকে প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা হিসেবে তিনি কাজ করছেন। এরই এক পর্যায়ে আমান উল্লাহ বাদী হয়ে বীথি আক্তারের পক্ষে ৬৬৭ কোটি টাকার পণ্য বুঝে না পাবার জন্য একটি মামলা করেন তেজগাঁও শিল্পাঞ্চল থানায় সাবেক ই-অরেঞ্জ সিওও নাজমুল আলম ও সকল বাইক মার্চেন্ট এর বিরুদ্ধে।
সূত্র মতে, ২০২১ সালের মার্চ পর্যন্ত অর্থাৎ সোনিয়া মেহজাবিনের মালিকানা থাকাকালীন সময়ের সকল অর্ডার এর পণ্য ভেলিভারি সফলভাবে সম্পন্ন করা হয়েছে। নতুন মালিক বীথি আক্তার ২০২১ সালের ১ এপ্রিল থেকে সমুদয় সম্পদ ও দায় গ্রহণ করেই দায়িত্ব নেন যা চুক্তিপত্রে পরিষ্কার উল্লেখ রয়েছে। এই অবস্থায় গত বছরের এপ্রিল, মে ও জুন মাসের কোনো পণ্যের ভেলিভারি না করা হলে তার দায়ভার কোনভাবেই সোনিয়া মেহজাবিন বা তার পরিবারের ওপর বর্তায় না। কারন এপ্রিল ২০২১ থেকে সোনিয়া ই-অরেঞ্জ এর মালিকানা বা ব্যবস্থাপনায় নেই।
২০২১ এর এপ্রিল থেকে ১৯ জুলাই পর্যন্ত সোনিয়া ব্যবসা বুঝার নিমিত্তে শুধু বীথি আক্তারকে সহযোগিতা করেন। যা তার অনুমতি সাপেক্ষে ও যা চুক্তিপত্রেও বলা আছে। তাই ওই সময়ে সকল অর্থ লেনদেনের নির্দেশনা বীথি আক্তার দিয়েছেন।
এই অবস্থায় স্বাভাবিকভাবেই প্রশ্ন উঠেছে ই-অরেঞ্জ এর বর্তমান মালিক কে? সোনিয়া মেহজাবিন না বীথি আক্তার।
Editor & Publisher : Md. Motiur Rahman
Pritam-Zaman Tower, Level 03, Suite No: 401/A, 37/2 Bir Protik Gazi Dastagir Road, Purana Palton, Dhaka-1000
Cell : (+88) 01706 666 716, (+88) 01711 145 898, Phone: +88 02-41051180-81