03/20/2025
বিশেষ প্রতিবেদক | Published: 2023-07-12 09:33:03
দুর্নীতির বিরুদ্ধে সরকার জিরো টলারেন্স নীতি গ্রহণ করলেও বিভিন্ন সরকারি চাকরিতে অর্থের বিনিময়ে নিয়োগের অভিযোগ হরহামেশাই পাওয়া যাচ্ছে।
বিশেষ করে সাম্প্রতিক সময়ে স্বাস্থ্যখাতকে ঢালাওভাবে সাজাতে সরকারের নেওয়া নানা উদ্যোগের ফলে এ খাতে জনবল বাড়াতে নেওয়া হচ্ছে বিভিন্ন নিয়োগ পরীক্ষা।
কিন্তু অভিযোগ রয়েছে, বেশিরভাগ পরীক্ষাতেই অর্থের বিনিময়ে অযোগ্যরা নিয়োগ পাচ্ছে নিয়মবহির্ভূতভাবে। এমনই একাধিক অভিযোগে বিদ্ধ পরিবার পরিকল্পনা অধিদপ্তর।
পরিবার পরিকল্পনা অধিদপ্তরে ৩৬ ক্যাটাগরির অফিস পর্যায়ের পদ ও পরিবার কল্যাণ পরিদর্শিকা পদ মিলে ৩৭ ক্যাটাগরির নিয়োগ কার্যক্রম চলমান আছে। ইতোমধ্যে পরিবার কল্যাণ পরিদর্শিকাসহ আরো ৩ টি ক্যাটাগরির লিখিত ও মৌখিক পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হয়েছে।
পরিবার পরিকল্পনা অধিদপ্তরের স্বঘোষিত সমিতির নেতা কাউসার হোসেন, মাজহারুল ইসলাম, সাইদুল আবরার, সাইদুর রহমান (অটো সাইদুর), কাজী মাহবুব হাসান, শওকত আলী, দয়াল গাইনসহ কমিটির মাঠ পর্যায়ের সদস্যরা মিলে এই নিয়োগ কার্যক্রমে আধিপত্য বিস্তার করেছে।
একাধিক সূত্র থেকে পাওয়া তথ্যে জানা গেছে, খান মোঃ রেজাউল করিম ও উপপরিচালক (পার্সোনেল) সানাউল্লাহ নুরী সম্প্রতি বদলী হলেও তাদের নিয়োগের অর্থ সংগ্রহকারী স্বঘোষিত নেতারা বহাল তবিয়তে দাপিয়ে বেড়াচ্ছে পরিবার পরিকল্পনা অধিদপ্তরে।
পরিবার পরিকল্পনা অধিদপ্তরের সদ্য বদলি হওয়া পরিচালক (প্রশাসন) খান মোঃ রেজাউল করিম ও উপপরিচালক (পার্সোনেল) সানাউল্লাহ নুরীর সাথে সমিতির সভাপতি কাউসার হোসেন, সাধারণ সম্পাদক মাজহারুল ইসলাম ও অটো সাইদুর এর যোগসাজসে সমিতির অন্যান্য সদস্যরা পড়িয়া দালাল হিসেবে মাঠ পর্যায় হতে প্রার্থী সংগ্রহ করে দেয়। এতে প্রার্থী প্রতি ১৫-২০ লক্ষ টাকা করে গ্রহণ করে।
শর্ত ছিল লিখিত পরীক্ষায় এই সকল প্রার্থীকে ৭০ নম্বরের মধ্যে ৬৫ এর বেশি নম্বর দিয়ে দেয়া হবে যাতে মৌখিক পরীক্ষায় কম নম্বর পেলেও চুড়ান্ত ফলাফলে তাদের প্রার্থীগণ মনোনীত হবে। যে কথা সে কাজ। লিখিত পরীক্ষায় তাদের দেওয়া প্রার্থীরা সাদা ওএমআর জমা দিয়েও উত্তীর্ণ হয়েছে।
সমিতির সদস্য কাউসার-মাজহারের আলোচনার সময় অটো সাইদুরের হাতে পরিবার কল্যাণ পরিদর্শিকা পদের ৩০০ প্রার্থীর একটি তালিকা ছিল। যা নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একটি সূত্রে জানা যায়।
বরিশাল অঞ্চলে সাবেক পরিচালক; প্রশাসনের বাড়ি হওয়ায় প্রশাসন ইউনিটে কর্মরত সুপারভাইজার পদের একজন কর্মচারী নিয়মিতই দেশের দক্ষিণ-পূর্বাঞ্চলের বহু প্রার্থী সংগ্রহ করেন। পরীক্ষাসমূহের পূর্ববর্তী সময়ে তিনি অফিস না করে খান মোঃ রেজাউল করিমের সাথে আলোচনাক্রমে বরিশাল অঞ্চলের প্রার্থী সংগ্রহে ব্যস্ত থাকেন।
পরিবার পরিকল্পনা অধিদপ্তরে সমিতি গঠনের পর হতেই সমিতির শীর্ষ দুই নেতা কাউসার-মাজহার নিজেদের আধিপত্য বিস্তারের জন্য বিভিন্ন পর্যায়ের কর্মচারীগণকে হুমকি-ধমকি দিয়ে আসছেন। দুইজনই অর্থ ইউনিটের ফিল্ড সার্ভিস শাখায় কর্মরত থাকায় সারাদেশে ফিন্যান্সিয়াল দায়িত্বের সাথে সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিগণের কাছ থেকে নিয়মিত চাঁদা সংগ্রহ করে থাকেন।
ফিল্ড সার্ভিসেস শাখা হতে মাঠ পর্যায়ে ব্যাগ, ছাতা, স্টীল ট্রাংক, এপ্রোন ইত্যাদি বিতরণের জন্য অর্থ বরাদ্দ দেওয়া হলে কাউসার-মাজহার নিজেরাই নিম্নমানের পন্য সরবরাহ দিয়ে মাঠ পর্যায় থেকে নিয়ে আসা অর্থ আত্মসাৎ করে।
সমিতির প্রশাসনিক আধিপত্য টিকিয়ে রাখার জন্য কাউসার-মাজহার প্রশাসন ইউনিটের নিজেদের একান্ত অনুগত ও বিশ্বস্ত শওকত আলীকে ব্যবহার করেন। সমিতির সদস্যদের নিয়োগ নিয়ে দুর্নীতির কারনে পরিবার পরিকল্পনা অধিদপ্তর নিয়ে মন্ত্রণালয়ের সচিব ও পুরো প্রশাসন একটি অস্থিরতার মধ্যে বিদ্যমান আছে। কিন্তু মাঠ পর্যায় হতে হাজার কোটি টাকা আত্নসাতকারী এ চক্রটি বহাল তবিয়তেই আছে।
নিয়োগ নিয়ে অস্থিরতার কারণেই মৌখিক পরীক্ষায় মন্ত্রনালয় হতে কঠোর নিয়ম অনুসরণ করে নিরপেক্ষভাবে পরীক্ষা নেয়া হয়। সাধারণ প্রার্থী যারা নিজ যোগ্যতায় উত্তীর্ণ হয়েছে তাদের কিভাবে চাকরি হবে সে বিষয়ে সাধারণ মহলে অনেক প্রশ্ন রয়ে গেছে।
কোন অদৃশ্য শক্তির ইশারায় এ চক্রের মূল হোতা কাউসার-মাজহার-আবরার-সাইদুর(অটো)-কাজী মাহবুব ও তাদের সহকারী দয়াল কুমার গাইন এখনো পরিবার পরিকল্পনা অধিদপ্তরে প্রতাপের সাথে ঘুরে বেড়াচ্ছে।
কাউসার হোসেন, মাজহারুল ইসলামের বিরুদ্ধে শৃঙ্খলা শাখায় ফাইল উপস্থাপন হলেও শৃঙ্খলা শাখার সহকারী পরিচালক (পার-২), জনাব মোঃ সিরাজুল ইসলাম ও অফিস সহকারী মোঃ শওকত হোসেন প্রায় ৫,০০,০০০ (পাঁচ লক্ষ) টাকা নিয়ে ফাইল গুম করে রেখেছে।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে একজন বলেন, শওকত হোসেন তাদের সমিতির সহসভাপতি। সেই সুবাদে শৃঙ্খলা শাখায় ১০ কর্মদিবসের মধ্যে রির্পোট দিতে বলা হলেও ফাইলের কোন হদিস অদ্যবধি নেই।
এ নিয়ে মাঠ প্রশাসনে চরম অসন্তোষ বিরাজ করছে। সরকারের ঊর্ধতন মহলের আশু হস্তক্ষেপ চাইছেন এখানে কর্মরত সবাই।
Editor & Publisher : Md. Motiur Rahman
Pritam-Zaman Tower, Level 03, Suite No: 401/A, 37/2 Bir Protik Gazi Dastagir Road, Purana Palton, Dhaka-1000
Cell : (+88) 01706 666 716, (+88) 01711 145 898, Phone: +88 02-41051180-81