03/20/2025
বিশেষ প্রতিবেদক | Published: 2023-10-19 00:45:27
‘জনস্বার্থ’ দেখিয়ে নদী রক্ষা কমিশনের চেয়ারম্যান মঞ্জুর আহমেদ চৌধুরীর চুক্তিভিত্তিক নিয়োগ বাতিল করেছে সরকার।
অবৈধভাবে বালু উত্তোলন ও নদী দখলের পেছনে ‘একজন নারী মন্ত্রীর ভূমিকা’ রয়েছে বলে বক্তব্য দেওয়ার ২৪ দিনের মাথায় বুধবার তার নিয়োগ বাতিল করা হল। জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয় এই সংক্রান্ত একটি প্রজ্ঞাপন জারি করেছে।
যুগ্মসচিব আশরাফুল আলম সাক্ষরিত এই আদেশে বলা হয়, “ড. মঞ্জুর আহমেদ চৌধুরী, চেয়ারম্যান জাতীয় নদী রক্ষা কমিশন এর চুক্তিভিত্তিক নিয়োগের অবশিষ্ট মেয়াদ জনস্বার্থে এতদ্বারা বাতিল করা হলো।”
তবে কোন জনস্বার্থে এই আদেশ জারি করা হয়েছে, সে বিষয়ে কোনো ব্যাখ্যা দেওয়া হয়নি।
২০২২ সালের ২২ ফেব্রুয়ারি মঞ্জুরকে তিন বছরের চুক্তিতে নদী রক্ষা কমিশনের চেয়ারম্যান নিয়োগ দেয় সরকার। সেই হিসেবে ২০২৫ সালের ২২ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত তার নিয়োগের মেয়াদ ছিল। কিন্তু ১৬ মাস আগেই সরে যেতে হলো তাকে।
এই আদেশের বিষয়ে জানতে চাইলে মঞ্জুর আহমেদ বলেন, “সরকার আমাকে তিন বছরের জন্য নিয়োগ দিয়েছিল, সরকার নিয়োগ বাতিল করেছে, সেই এখতিয়ার তাদের আছে।"
“আমি শুধু একটা কথাই বলব, আজকে সারা বাংলাদেশ পদ্মা, মেঘনা, যমুনা, আড়িয়াল খাঁসহ সব নদ-নদীর জলদস্যু, ভূমিদস্যু, বালুখেকো, দখলদার, দূষণকারীর বিজয় হয়েছে।”
নদী দখল ও দূষণ নিয়ে তার অনেক পরিকল্পনা ছিল জানিয়ে তিনি বলেন, “তিন বছরের জন্য নিয়োগ পাওয়ার পর অনেক পরিকল্পনা নিয়ে আগাচ্ছিলাম। এটা থেমে গেল।”
কী বলেছিলেন মঞ্জুর?
গত ২৪ সেপ্টেম্বর রাজধানীর সিরডাপ মিলনায়তনে বিশ্ব নদী দিবসের এক সেমিনারে চাঁদপুরের মেঘনা নদী থেকে অবৈধভাবে বালু উত্তোলন ও নদী দখলের পেছনে ‘একজন নারী মন্ত্রীর ভূমিকা রয়েছে’ বলে মন্তব্য করেন মঞ্জুর আহমেদ।
সেদিন তিনি বলেন, “মেঘনায় এর আগে অবৈধভাবে বালু উত্তোলন বন্ধ করা হয়েছে। যাদের নেতৃত্বে এই কাজ বন্ধ করা হয়েছে, তাদের বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা হিসেবে বিভিন্ন জায়গায় বদলী করা হয়েছে। কাউকে স্ট্যান্ড রিলিজ দেওয়া হয়েছ।
“আবার সেখানে অবৈধভাবে বালু উত্তোলন শুরু হয়েছে। আর এখানে ভূমিকা রয়েছে একজন নারী মন্ত্রীর। এই হায়েনার দল থেকে নদীকে বাঁচানো যাচ্ছে না। এই হায়েনার দলের পেছনে আছে রাজনৈতিক শক্তি। চাঁদপুরের ওই নারী মন্ত্রী তাদের সহায়তা করেন।”
তিনি তখন শিক্ষামন্ত্রী দীপু মনিকে ইঙ্গিত করেছিলেন। দীপু মনির নির্বাচনী এলাকা চাঁদপুর-৩ আসন (চাঁদপুর সদর-হাইমচর)। নদী রক্ষায় অবদান রাখা কর্মকর্তাদের শাস্তি দেওয়া হয় বলেও এর আগে অভিযোগ তুলেছিলেন মঞ্জুর আহমেদ।
২০২২ সালের ২২ ফেব্রুয়ারি তিন বছরের জন্য জাতীয় নদী রক্ষা কমিশনের চেয়ারম্যান নিয়োগ পান মঞ্জুর আহমেদ। ‘জাতীয় নদী রক্ষা কমিশন আইন, ২০১৩’ এর ধারা ৫(২) এবং একই আইনের ধারা ৫(৩) অনুযায়ী তিনি এ নিয়োগ পেয়েছিলেন। পরে তাকে সচিব পদমর্যাদাও দেওয়া হয়।
তিনি প্রশাসনিক আদেশের প্রসঙ্গে বলেন “আমি ডিসিপ্লিন মেনে চলি। সরকার ইচ্ছে করেছে, তাই নিয়োগ বাতিল করেছে। সরকার যেটা ভালো মনে করেছে তাই করেছে।”
উল্লেখ্য, মঞ্জুর আহমেদ চৌধুরী একজন কীটতত্ত্ববিদ। তিনি বাংলাদেশ প্রাণিবিজ্ঞান সমিতির সাবেক সভাপতি।
Editor & Publisher : Md. Motiur Rahman
Pritam-Zaman Tower, Level 03, Suite No: 401/A, 37/2 Bir Protik Gazi Dastagir Road, Purana Palton, Dhaka-1000
Cell : (+88) 01706 666 716, (+88) 01711 145 898, Phone: +88 02-41051180-81