05/16/2025
বিশেষ প্রতিবেদক | Published: 2025-05-15 15:42:56
ট্রেড অ্যান্ড ট্যারিফ কমিশনের চেয়ারম্যান এবং এনবিআর’র সাবেক সদস্য ড. মইনুল খানের অবৈধ সম্পদ, অর্থ পাচার ও দুর্নীতির তদন্ত চেয়ে রিট দায়ের করা হয়েছে।
দুর্নীতি দমন কমিশনে (দুদক) অভিযোগকারী এসএম মোরশেদের পক্ষে সুপ্রিমকোর্টের অ্যাডভোকেট সাগরিকা ইসলাম বুধবার (১৪ মে) এই রিট দায়ের(নং-৮০৮২/২০২৫) করেন।
বিচারপতি ফাতেমা নজীব এবং বিচারপতি সিকদার মাহমুদুর রাজীর ডিভিশন বেঞ্চে শিগগিরই রিটটির শুনানি হতে পারে বলে জানান এই আইনজীবী।
রিটে প্রধান উপদেষ্টার কার্যালয়ের মুখ্য সচিব, মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের সচিব, জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের সচিব, দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) চেয়ারম্যান, ট্রেড অ্যান্ড ট্যারিফ কমিশনের চেয়ারম্যান ড. মইনুল খানসহ সংশ্লিষ্টদের বিবাদী করা হয়েছে।
রিটে দুদকের নিষ্ক্রিয়তা চ্যালেঞ্জ করা হয়েছে। এতে বলা হয়, বিগত ফ্যাসিস্ট সরকারের দোসর, দুর্নীতিবাজ ট্যাক্স ক্যাডার (রাজস্ব) কর্মকর্তা এবং বর্তমানে ট্রেড অ্যান্ড ট্যারিফ কমিশনের চেয়ারম্যান ড. মইনুল খানের বিরুদ্ধে দুর্নীতি ও অর্থ পাচারের সুনির্দিষ্ট অভিযোগ দাখিল করা সত্ত্বেও তার বিরুদ্ধে কোনো ব্যবস্থা গ্রহণ করেনি দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)।
ভারতে পালিয়ে যাওয়া শেখ হাসিনার বিশেষ স্নেহধন্য ড. মইনুল খান বিগত সরকারের আমলে শত শত কোটি টাকার অবৈধ সম্পদ গড়েছেন। অবৈধ উপায়ে অর্জিত সম্পদ অস্ট্রেলিয়াসহ বিভিন্ন দেশে পাচার করেছেন। এসবের সুনির্দিষ্ট তথ্য উল্লেখ করে দুদকে অভিযোগ দায়ের করলেও সংস্থাটি তার বিরুদ্ধে কার্যকর কোনো ব্যবস্থা নেয়নি। উপরন্তু ৫ আগস্টের পর তার বড় ভাই সাবেক জনপ্রশাসন সচিব ড. মাহবুব হোসেনের সহযোগিতায় রাতারাতি ট্রেড অ্যান্ড টেরিফ কমিশনের চেয়ারম্যান পদে পোস্টিং নিয়ে নেন।
অথচ মইনুল খান বিগত শেখ হাসিনার শাসনামল জুড়ে ছিলেন দোর্দন্ড প্রতাপশালী এক কর্মকর্তা। টানা ৪ বছর তিনি শুল্ক গোয়েন্দা অধিদফতরের মতো গুরুত্বপূর্ণ দফতরে ছিলেন। এসময় তিনি দেশের কুখ্যাত সব সোনা চোরাচালানিদের সঙ্গে গোপন সখ্যতা গড়ে তোলেন। রাষ্ট্রীয় স্বার্থ না দেখে তিনি ব্যক্তিগত স্বার্থ রক্ষায় ছিলেন বেশি মনোযোগী। রাষ্ট্রকে হাজার হাজার কোটি টাকার রাজস্ব বঞ্চিত করে নিজ পকেটে ঢুকিয়েছেন শত শত কোটি টাকা। যেসব স্বর্ণ ব্যবসায়ীদের সঙ্গে তার দর-দামে বনিবনা হতো না, তাদের বিরুদ্ধে ঠুকে দিতেন মামলা। এই প্রক্রিয়ায় মইনুল খান আলোচিত ‘আপন জুয়েলার্স’র বিরুদ্ধে মামলা করেন।
পক্ষান্তরে যাদের সঙ্গে বনিবনা হতো তাদের কাছ থেকে মাসোহারা নিতেন নিয়মিত। যেমন: ‘আমিন জুয়েলার্স’র কাছ থেকে নিয়েছেন ১ কোটি ৫০ লাখ টাকা। ‘ডায়মন্ড ওয়ার্ল্ড’র কাছ থেকে প্রতি মাসে নিতেন ১ কোটি টাকা। ‘অলঙ্কার নিকেতন’ থেকে ১ কোটি ৩০ লাখ। ‘জড়োয়া হাউস’ থেকে ১ কোটি ৪০ লাখ টাকা। ‘জুয়েলারি সমিতি (বাজুস) থেকে নিয়েছেন এককালীন ৫০ কোটি টাকা। এছাড়া শুল্ক গোয়েন্দা বিভাগের কোটি কোটি টাকা ‘সোর্সমানি’র ভুয়া ব্যয় দেখিয়ে মইনুল পকেটস্থ করেছেন প্রায় পুরোটা।
দেশের শীর্ষস্থানীয় এমন কোনো শিল্প গ্রুপ নেই যার কাছ থেকে মইনুল নিয়মিত অর্থ নেন নি। বিভিন্ন গ্রুপ অব ইন্ডাস্ট্রিজ, শিল্প প্রতিষ্ঠান এবং ব্যবসায়ীদের কাছ থেকে কোটি কোটি টাকা হাতিয়ে নেন তিনি। এভাবে তিনি বিপুল অর্থের মালিক হন। অবৈধ উপায়ে আহরিত অর্থ পরবর্তীতে তিনি অস্ট্রেলিয়ায় পাচার করেন। কোন ব্যাংকে, কোথায়, কোন অ্যাকাউন্টে তিনি অর্থ পাচার করেছেন-অভিযোগে সেটিরও সুনির্দিষ্ট তথ্য ছিলো। তা সত্ত্বেও দুদক তার বিরুদ্ধে অদ্যাবধি কোনো আইনি ব্যবস্থা নেয়নি। রিটে ড. মইনুল খানের দুর্নীতি অনুসন্ধানে দুদককের প্রতি নির্দেশনা চাওয়া হয়েছে।
Editor & Publisher : Md. Motiur Rahman
Pritam-Zaman Tower, Level 03, Suite No: 401/A, 37/2 Bir Protik Gazi Dastagir Road, Purana Palton, Dhaka-1000
Cell : (+88) 01706 666 716, (+88) 01711 145 898, Phone: +88 02-41051180-81