29798

10/15/2025

টাঙ্গাইল-৪ কালিহাতী আসনে ইঞ্জিনিয়ার হালিম জনমানুষের স্পন্দনে

শাহীন আবদুল বারী | Published: 2025-10-15 04:00:14

প্রধান উপদেষ্টার ঘোষণা অনুযায়ী ত্রয়োদশ জাতীয় সাংসদ নির্বাচন আগামী বছরের ফেব্রুয়ারি মাসে অনুষ্ঠিত হবে। এই উপলক্ষে রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে বেশ চাঞ্চল্য ফিরে এসেছে। বিশেষ করে যারা প্রার্থী হতে ইচ্ছুক তারা নির্বাচনী প্রচারণায় নিজ নিজ এলাকায় ব্যস্ত সময় পাড় করছেন। দীর্ঘ ১৭ বছর পরে হলেও চায়ের আড্ডা জমে উঠেছে জমজমাট।

কিন্তু প্রকৃত রাজনীতিবিদ এবং দলের জন্য যারা নিবেদিত প্রাণ তাদের সাথে পাল্লা দিয়ে কিছু চাঁদাবাজ, দখলবাজরাও মাঠ দখলের চেষ্টা করছেন। বিশেষ করে বিএনপির কিছু দাগি নেতা নিজেদের আখের গোছাতে দলের নেতাকর্মীদের বিভ্রান্তমূলক তথ্য পরিবেশন করছে। কেউ কেউ রীতিমতো মনোনয়ন পেয়ে গেছে বলেও মিথ্যার আশ্রয় গ্রহণ করেছে। তবে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে কোন প্রকার কুন্ঠাবোধ করবেন না।

গত ১৩ অক্টোবর টাঙ্গাইল-৪ কালিহাতী আসনে সরেজমিনে গিয়ে সর্বস্তরের মানুষের সাথে কথা হয় এই প্রতিবেদকের। আসন্ন জাতীয় নির্বাচনে কে হবেন কালিহাতীর আসনে বিএনপির কান্ডারী। কাকে নির্বাচিত করলে করলে কালিহাতীর মানুষের ভাগ্য পরিবর্তন ও উন্নয়ন হবে।

ভোটাররা নানান ধরনের মত প্রকাশ করেন। জরিপে একটি নাম খুব জোরেশোরে উঠে আসে। তিনি হলেন বীর মুক্তিযোদ্ধা ইঞ্জিনিয়ার মোঃ আব্দুল হালিম। তিনি বিএনপি থেকে মনোনয়ন পেলে কালিহাতীর মানুষের দুঃখ দুর্দশা মুছে যাবে। কালিহাতি উপজেলা হবে উন্নয়নের মডেল শহর। এই মুক্তিযোদ্ধা নিজের অর্জিত টাকা দল তথা অসহায় মানুষের পেছনে খরচ করে অনন্য নজির স্থাপন করেছেন।

কালিহাতীর কয়েকজন মুক্তিযোদ্ধা এই প্রতিবেদককে জানান, স্বাধীনতার লাল সূর্য ছিনিয়ে আনতে অস্ত্র তুলে নিয়েছিলেন যাঁরা, তাঁদের অনেকেই সময়ের স্রোতে হারিয়ে গেছেন। কিন্তু মোঃ আব্দুল হালিম মিঞা শুধু একজন মুক্তিযোদ্ধাই নন, তিনি রাজনৈতিক লড়াকু সৈনিক। তিনি এলাকায় ‘হালিম ইঞ্জিনিয়ার’ নামে সুপরিচিত। সবাই তাকে হালিম ইঞ্জিনিয়ার বলেই ডাকেন এবং চিনেন।

বিএনপির নেতৃবৃন্দ বলেন, তিনি কেবল একজন বীর মুক্তিযোদ্ধা নন—একজন সাহসী সংগঠক, ত্যাগী রাজনৈতিক নেতা, মানবিক সমাজসেবক এবং নির্ভরতার প্রতীক। পুরো জীবনজুড়ে তিনি মানুষের জন্য কাজ করে গেছেন নিরলসভাবে। 

মুক্তিযুদ্ধের সংগঠক থেকে যুদ্ধে সক্রিয় অংশগ্রহণ

ইঞ্জিনিয়ার হালিমের রাজনৈতিক জীবনের সূচনা ছাত্রাবস্থায়। ১৯৭১ সালে স্বাধীনতা যুদ্ধ শুরু হলে তিনি থানা পর্যায়ের সংগঠক ও মুক্তিযোদ্ধা সংগ্রহ সমন্বয়কের দায়িত্ব পালন করেন। শুধু সংগঠক হিসেবেই নয়, নিজেও সরাসরি যুদ্ধে অংশ নেন। অস্ত্র হাতে দেশের স্বাধীনতার জন্য যুদ্ধ করে বীরত্বের স্বাক্ষর রাখেন।

দলের প্রতি শতভাগ নিষ্ঠা, আন্দোলনে রাজপথে অবিচল পদচারণা তাকে সকলের কাছে পরিচিত করেছে।

২০১২ সালের ২ জুলাই আনুষ্ঠানিকভাবে বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী মুক্তিযোদ্ধা দলে যোগ দেন তিনি। এর পর থেকে বিএনপির সব আন্দোলন-সংগ্রামে রাজপথে সক্রিয় অংশগ্রহণ করেছেন। গুম-গ্রেফতার-হয়রানি কিছুই তাঁকে দমাতে পারেনি। কঠিন সময়ে তিনি রাজপথে থেকেছেন, মিছিল-সমাবেশে ছিলেন সাহসী নেতৃত্বে।

দলের দুঃসময়ে নেতা-কর্মীদের পাশে দাঁড়ানো ছিল তাঁর দায়িত্ব নয়, বরং ভালোবাসা। দলের যে কোনো কর্মসূচিতে প্রচার কার্যক্রমের সময় বিএনপির দলীয় লিফলেট নিজ হাতে সাধারণ মানুষের হাতে তুলে দিয়েছেন তিনি। বাজার, হাট কিংবা পাড়া-মহল্লার অলিগলিতে তাঁকে দেখা গেছে জনগণের সঙ্গে কথা বলতে, দলের বার্তা পৌঁছে দিতে। তারেক রহমানের ৩১ দফা বাস্তবায়নে তিনি লিফলেট বিতরণ সহ মানুষের ঘরে ঘরে গিয়ে বক্তব্য আকারে ধরে তুলছেন।

একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে মনোনয়নপ্রাপ্ত হয়েও ত্যাগের অনন্য নজির

দলের প্রতি তাঁর নিষ্ঠা ও জনপ্রিয়তার স্বীকৃতিস্বরূপ একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে টাঙ্গাইল-৪ (কালিহাতী) আসনে তিনি বিএনপির প্রাথমিক মনোনয়ন লাভ করেন। তবে দলের বৃহত্তর স্বার্থে এবং ঐক্যফ্রন্টের কৌশলের অংশ হিসেবে মনোনয়ন ত্যাগ করে শরিক দলের জন্য আসনটি তিনি ছেড়ে দেন। তাঁর এই ত্যাগী সিদ্ধান্তকে আজও নেতাকর্মীরা সম্মানের চোখে দেখেন।

আসন্ন জাতীয় সংসদ নির্বাচনে দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়া এবং বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান ইঞ্জিনিয়ার মোঃ আব্দুল হালিমকেই মনোনয়ন দিবেন বলে তৃণমূলের নেতাকর্মীর আশাবাদ ব্যক্ত করেন।

নেতৃত্বে বহুমাত্রিকতা ও সংগঠনে সক্রিয় ভূমিকা

ইঞ্জিনিয়ার হালিম প্রকৌশল শ্রমিক ইউনিয়ন, ভ্যান শ্রমিক ইউনিয়ন, রিক্সা শ্রমিক ইউনিয়ন, হকার সমিতি এবং বাউল শিল্পী সমিতির প্রধান উপদেষ্টা হিসেবে দীর্ঘদিন দায়িত্ব পালন করছেন। এ ছাড়াও তিনি বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী মুক্তিযোদ্ধা দলের কেন্দ্রীয় নির্বাহী কমিটির সহ-সভাপতি। ঢাকা মহানগরীর সভাপতি, এসোসিয়েশন অব ইঞ্জিনিয়ার্স বাংলাদেশের সহ-সভাপতি এবং জিয়াউর রহমান ফাউন্ডেশনের আজীবন সদস্য। ইঞ্জিনিয়ার হালিম শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমানের আদর্শে অনুপ্রাণিত একজন কর্মী।

ইঞ্জিনিয়ার আব্দুল হালিম মিয়ার ঘনিষ্টজনেরা জানান, নিজ এলাকায় বিএনপিকে ঐক্যবদ্ধ রাখতে দুুর্দিনে দলের কেন্দ্রীয় কর্মসুচি পালন করেছেন। এমনকি ঢাকায় কেন্দ্রীয় কর্মসুচিগুলোতেও তিনি নিয়মিত সরব থেকেছেন। জাতীয়তাবাদী মুক্তিযোদ্ধা দলের কেন্দ্রীয় কমিটির সহসভাপতি পদে থাকার সুবাদে হালিম মিয়া ফ্যাসিস্ট আওয়ামী লীগে সরকারের গত ১৫ বছর নানা বাঁধা আর নির্যাতন জুলুমের মধ্যেও ঢাকায় কর্মসুচিতে অংশ নিয়েছেন। দুঃসময়ে যখন শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমানের কবরস্থানে যাওয়া অনেকটা অসম্ভব ছিল, সে সময়েও মুক্তিযোদ্ধাদের সাথে তিনি পুস্পস্তবক অর্পন করতে যেতেন।

করোনাকালে জনসেবায় ইতিহাস গড়া মানবিক কর্মযজ্ঞ

মহামারি যখন চরমে, মানুষ যখন কর্মহীন, বাজারে খাদ্যদ্রব্য যখন সোনার হরিণ—তখন হালিম ইঞ্জিনিয়ার ছুটে গেছেন কালিহাতী উপজেলার প্রতিটি ইউনিয়নের প্রতিটি গ্রামে। কোকডহরা, গোহালিয়াবাড়ী, দশকিয়া, দুর্গাপুর, নাগবাড়ী, নারান্দিয়া, পাইকড়া, সহদেবপুর, এলেঙ্গা, সল্লা, বাংড়া—এই সব ইউনিয়নের মানুষের হাতে তিনি নিজ হাতে খাদ্যসামগ্রী পৌঁছে দিয়েছেন। তাঁর বিতরণ করা খাদ্যপ্যাকেটে শুধু চাল-ডাল ছিল না, ছিল আশার আলো। স্থানীয় এলেঙ্গা ও কালিহাতীর প্রতিটি গ্রামের মানুষের হৃদয়ে গেঁথে আছে তাঁর সেই মানবিক অবদান। তাই তো জনমানুষের নেতা হয়ে উঠেছেন ইঞ্জিনিয়ার মোঃ আব্দুল হালিম।

শিক্ষা ও ধর্মীয় প্রতিষ্ঠান উন্নয়নে অক্লান্ত প্রয়াস

কালিহাতীর বিভিন্ন ইউনিয়নে তাঁর সহায়তায় গড়ে উঠেছে একাধিক প্রাথমিক ও মাধ্যমিক বিদ্যালয়, কলেজ, মসজিদ, মন্দির ও মাদ্রাসা। শুধু প্রতিষ্ঠানই নয়, অনেক জায়গায় তিনি ব্যক্তিগত অর্থে ভবন নির্মাণ এবং শিক্ষার্থীদের বৃত্তি প্রদানের মাধ্যমে শিক্ষা বিস্তারে রেখেছেন দৃষ্টান্তমূলক অবদান। আজ অনেক তরুণ-তরুণীর শিক্ষা জীবনের পেছনে রয়েছে এই হালিম ইঞ্জিনিয়ারের নিঃশব্দ অবদান।

ছাত্র রাজনীতি থেকেই নেতৃত্বের প্রমাণ

রাজশাহী ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজে অধ্যয়নকালে তিনি আব্দুল হামিদ ছাত্রাবাসের জিএস নির্বাচিত হন। পরে কলেজ ছাত্র সংসদের জিএস পদে নির্বাচনেও প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেন। ছাত্রজীবনের সেই নেতৃত্ব গুণ আজ তাঁকে একজন পরিপূর্ণ রাজনৈতিক নেতায় পরিণত করেছে। জনগণের মুখে প্রশংসার ফুলঝুরি, করোনায় তিনি নিজের হাতে খাবার দিয়েছেন। উনার মতো মানুষ রাজনীতিতে খুব দরকার। তার জনপ্রিয়তা তরুণ প্রজন্মেও তুঙ্গে। তরুণরাও তাঁকে দেখেন সাহস ও আস্থার প্রতীক হিসেবে। তিনি বিএনপি থেকে মনোনয়ন পেলে তরুণরা খুশিতে তার জন্য মাঠে কাজ করবে বলে অসংখ্য তরুণ এই প্রতিবেদকের কাছে মত প্রকাশ করেছে।

দল ও জনগণের নির্ভরতার প্রতীক

বিএনপির রাজনীতিতে যারা আদর্শ, ত্যাগ আর মানবিকতাকে শ্রেষ্ঠ গুণ বলে মানেন—তাঁদের কাছে হালিম ইঞ্জিনিয়ার এক জীবন্ত কিংবদন্তি। দলীয় দায়িত্ব পালনে যেমন তিনি দক্ষ, তেমনি কর্মীদের পাশে থেকেছেন বিপদ-আপদে। কালিহাতী এলেঙ্গা থেকে জাতীয় পর্যায়ের নেতৃত্ব পর্যন্ত তাঁর গ্রহণযোগ্যতা এখন ব্যাপক।

ইঞ্জিনিয়ার হালিম শুধুই একজন রাজনীতিক নন —তিনি ইতিহাসের এক আলোকিত অধ্যায়। তাঁর সংগ্রাম, নেতৃত্ব, ত্যাগ ও ভালোবাসা আজও মানুষকে আলো দেখায়। দল ও জনগণের কাছে তাঁর নাম এক আস্থার দুর্গ।

বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের কাছে কালিহাতীবাসির আবেদন ইঞ্জিনিয়ার মোঃ আব্দুল হালিমকে মনোনয়ন দিয়ে আওয়ামী লীগের ঘাটি বলে পরিচিত এই আসনটি পুনরুদ্ধার করবেন।


Editor & Publisher : Md. Motiur Rahman

Pritam-Zaman Tower, Level 03, Suite No: 401/A, 37/2 Bir Protik Gazi Dastagir Road, Purana Palton, Dhaka-1000
Cell : (+88) 01706 666 716, (+88) 01711 145 898, Phone: +88 02-41051180-81