03/14/2025
A H Khan | Published: 2018-08-05 02:28:56
শিক্ষার্থীদের উপর পুলিশের হামলার পুরনো কিছু ছবি ঘুরছে ইন্টারনেটে; আবার পুলিশ ধরে নিয়ে গেছে, এমন শিক্ষার্থীর নাম আসার পর ওই শিক্ষার্থীরাই আবার তা গুজব বলে উড়িয়ে দিচ্ছেন।
এক ছাত্রের কলার ধরে আছেন এক পুলিশ সদস্য- এরকম একটি ছবি গত কয়েকদিন ধরে ঘুরছে ফেইসবুকে, যা দেখে সরকারবিরোধী রাজনৈতিক নেতাদের মধ্য থেকেও প্রতিবাদ এসেছে, অথচ ওই ছবিটি ২০১৫ সালের আরেক ঘটনার।
গত ২৯ জুলাই ঢাকার শহীদ রমিজউদ্দিন ক্যান্টনমেন্ট কলেজের দুই শিক্ষার্থী বাসচাপায় নিহত হলে তাদের বিক্ষুব্ধ সহপাঠিরা সড়কে নেমে আসে। পরদিন সারা ঢাকায় শিক্ষার্থীরা সড়কে অবস্থান নিলে পরিবহন ব্যবস্থা প্রায় অচল হয়ে পড়ে।
এই বিক্ষোভের মধ্যে কয়েকটি স্থানে শিক্ষার্থীদের উপর পুলিশও চড়াও হয়। তবে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খাঁন কামাল দাবি করেছেন, পুলিশ চূড়ান্ত ধৈর্য ধরে পরিস্থিতি মোকাবেলা করছে।
এর মধ্যে আফজাল হোসেন রহিম নামে একটি ফেইসবুক পাতা থেকে বলা হয়, খিলগাঁওয়ের এক কলেজছাত্রকে পুলিশ বাসা থেকে ধরে নিয়ে গেছে।
এই খবরটি ফেইসবুকে ছড়িয়ে পড়লে ওই কলেজছাত্র তার ফেইসবুকে পাতায় এই ঘটনাটি মিথ্যা বলে জানান।
ওই ছাত্র লিখেছেন, “আপনারা উল্টাপাল্টা নিউজ কই থেকে পান আর এইসব আপলোড দিয়ে আমাকে আর আর ফ্যামিলিকে বিরক্ত করছেন কেন? এটা পুরো ফেইক ঘটনা; পুলিশ আমাকে ধরেনি।”
ঢাকা রেসিডেন্সিয়াল মডেল কলেজের ৪৭ শিক্ষার্থীকে কলেজ থেকে বের করে দেওয়া হয়েছে বলেও ফেইসবুকে অনেকের স্ট্যাটাসে এসেছে।
এ ধরনের খবরকে ‘ভিত্তিহীন ও বিভ্রান্তিকর’ দাবি করে তার নিন্দা জানিয়েছে কলেজ কর্তৃপক্ষ।
তারা বলেছে, গত ১ অগাস্ট কিছু সংখ্যক আবাসিক ছাত্র অনুমতি ছাড়া কলেজের বাইরে যাওয়ায় কর্তৃপক্ষ তাদের নিরাপত্তা নিয়ে উদ্বিগ্ন হয়ে পড়েছিল। ওই ছাত্রদের অভিভাবকদের ডেকে আনা হয় এবং ‘শৃঙ্খলা ও নিরাপত্তার ব্যাপারে মোটিভেশনের’ উদ্দেশ্যে অভিভাবকরা তাদের সন্তানদেরকে সাময়িকভাবে বাসায় নিয়ে যান।
“কলেজ কর্তৃপক্ষ কলেজ কাউকে টিসি প্রদান করেনি, মোটিভেশন শেষে সংশ্লিষ্ট ছাত্ররা ইতোমধ্যে বাসা থেকে হাউসে প্রত্যাবর্তন শুরু করেছে “ বলা হয় বিবৃতিতে।
সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে নানা ধরনের গুজব চলার কথা তুলে ধরে বিভ্রান্ত না হতে সবাইকে সতর্ক করেছে পুলিশও।
এই আন্দোলনকে কেন্দ্র করে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নামে বিকৃত ও বানোয়াট সংবাদও দেখা গেছে নানা অনলাইন পোর্টালে। তাতে বিভ্রান্ত না হওয়ার আহ্বান জানিয়ে বিবৃতি দিয়েছে প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়।
গণ আন্দোলন নিয়ে গুজব ছড়ানো যেন নিয়মিত বিষয় হয়ে গেছে। কোটা সংস্কার আন্দোলনে যেসব গুজবের নমুনা মিলেছে তার মাত্রা ছাড়িয়ে যাচ্ছে নিরাপদ সড়ক চাই আন্দোলনে। বিগত বেশ কয়েকদিন যাবৎ ভুয়া ছবি ও তথ্য প্রকাশ করে মানুষকে বিভ্রান্ত করার চেষ্টা চালিয়েছে একটি সুনির্দিষ্ট গোষ্ঠী। তাদের এই গুজব এবার সকল মাত্রা ছাড়িয়ে গেছে। সম্প্রতি ব্যক্তিগত মেসেঞ্জার ও গ্রুপ মেসেঞ্জারে একটি গুজব ছড়িয়ে দেয়া হচ্ছে যা মেসেঞ্জারে ভাইরাল হয়ে গেছে। সেখানে জানানো হচ্ছে, 'রবিবার স্কুল শিক্ষার্থীদের ওপর হামলা এবং যৌন নির্যাতন চালানোর পরিকল্পনা করা হচ্ছে।'
নিরাপদ সড়কের দাবিতে টানা সাত দিন ধরে সড়কে বিক্ষোভ করছে শিক্ষার্থীরা। শনিবারও ঢাকাসহ সারাদেশে রাজপথ দখল করে বিক্ষোভ করে তারা। এদিকে, এই আন্দোলনকে ঘিরে নানা ধরনের গুজবও উঠছে। আর তা সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে দ্রুত ভাইরাল হচ্ছে। এরই মধ্যে অভিনেত্রী নওশাবার একটি ভিডিও ক্লিপ ভাইরাল হয়েছে। সেখানে তিনি বলেছেন, ঝিগাতলায় দুইজনকে মেরে ফেলা হয়েছে।
কিন্তু এই রিপোর্ট (সন্ধ্যা ৬টা) লেখা পর্যন্ত এ খবরের কোনো সতত্য পাওয়া যায়নি। এমনকি এই বিষয়ে বেশ কয়েকবার নওশাবার মুঠোফোনে যোগাযোগের চেষ্টা করা হয়েছে। কিন্তু তার মুঠোফোন বন্ধ পাওয়া যাচ্ছে।
ভাইরাল হওয়া ভিডিও ক্লিপে নওশাবা বলেন, 'আমি কাজী নওশাবা আহমেদ, আপনাদের জানাতে চাই। একটু আগে ঝিগাতলায় আমাদেরই ছোট ভাইদের একজনের চোখ তুলে ফেলা হয়েছে এবং দুইজনকে মেরে ফেলা হয়েছে। আপনারা সবাই একসাথে হোন প্লিজ। ওদেরকে প্রোটেকশন দেন, বাচ্চাগুলো আনসেভ অবস্থায় আছে, প্লিজ। আপনারা রাস্তায় নামেন, প্লিজ রাস্তায় নামেন, প্লিজ রাস্তায় নামেন এবং ওদেরকে প্রোটেকশন দেন।'
'সরকার প্রোটেকশন দিতে না পারলে আপনারা মা-বাবা, ভাই-বোন হয়ে বাচ্চাগুলোকে প্রোটেকশন দেন, এটা আমার রিক্যুয়েস্ট। এদেশের মানুষ-নাগরিক হিসেবে আপনাদের কাছে রিক্যুয়েস্ট করছি যে, ঝিগাতলায় একটি স্কুলে একটি ছাত্রের চোখ তুলে ফেলা হয়েছে এবং দুইজনকে মেরে ফেলা হয়েছে এবং ওদের অ্যাটাক করা হয়েছে। ছাত্রলীগের ছেলেরা সেটা করেছে। প্লিজ ওদের বাঁচান প্লিজ। তারা ঝিগাতলায় আছে।'
Editor & Publisher : Md. Motiur Rahman
Pritam-Zaman Tower, Level 03, Suite No: 401/A, 37/2 Bir Protik Gazi Dastagir Road, Purana Palton, Dhaka-1000
Cell : (+88) 01706 666 716, (+88) 01711 145 898, Phone: +88 02-41051180-81