03/15/2025
সামি | Published: 2020-03-15 19:55:50
করোনাভাইরাস আতঙ্কে এখন দেশ। দেশের সব রাজনৈতিক দলগুলোই নানারকম সচেতনতা এবং সতর্কতা বার্তা দিচ্ছে। রাজনৈতিক বিভিন্ন বাহাসের মধ্যেও সাধারণ মানুষ সতর্ক হচ্ছে। পরিস্থিতি মোকাবেলায় সরকারও সব ধরনের চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে। কিন্তু ঠিক এ সময়ে একটা শ্রেণীকে আমরা নীরব দেখছি। যাদেরকে আমরা বলি সুশীল সমাজ।
বিভিন্ন সময়ে যারা সরকারের বিষয়ে নানারকম কথাবার্তা বলেন। সরকার দুর্নীতিবাজ, মানুষের অধিকার হরণ করছে- এই ধরনের ছবক দেন কথায় কথায়। কিন্তু দেশের মানুষের সংকটে তাদেরকে কখনো পাওয়া যায় না। এরকম কয়েকজনকে নিয়েই আজকের এই প্রতিবেদন।
ড. মুহাম্মদ ইউনূস
ড. মুহাম্মদ ইউনূস শান্তিতে নোবেলজয়ী, সবচেয়ে বড় কথা হলো তিনি বাংলাদেশের একমাত্র নোবেলজয়ী। কিন্তু দুর্ভাগ্যজনক হলেও সত্য যে, বাংলাদেশের কোনো সংকটেই তাকে কাছে পাওয়া যায় না। ড. মুহাম্মদ ইউনূস কেবল আছেন নিজের ব্যক্তিগত সামাজিক ব্যবসা এবং বিশ্বের বিভিন্ন স্থানে বক্তৃতা দিয়ে নিজের আর্থিক আর সামাজিক স্ফিতি ঘটানোর কাজেই। সারাবিশ্ব ঘুরে তিনি এখন সামাজিক ব্যবসার পক্ষে প্রচারণা করছেন, তরুণ উদ্যোক্তা তৈরির কাজ করছেন।
কিন্তু বাংলাদেশে যখন কোনো সংকট হয়, তখন তিনি নীরব থাকেন। যুদ্ধাপরাধীদের বিচারপ্রক্রিয়ার সময়ে তিনি যেমন নীরব ছিলেন, তেমনি নীরব আছেন করোনাভাইরাস নিয়েও। অথচ ড. মুহাম্মদ ইউনূস করোনা নিয়ে সতর্কতা দিতে পারতেন, জনগণকে সচেতন করার জন্য কিছু উপদেশও দিতে পারতেন। এমনকি করোনাভাইরাস প্রতিরোধের জন্য তার নোবেল জয়ের অর্থ থেকে কিছু দিতে পারতেন কোনো বেসরকারি সংস্থাকে, যাতে তারা করোনাভাইরাস নিয়ে কাজ করতে পারে। কিন্তু এসবের কিছুই তিনি করেননি। বরং তিনি মিউনিখে অনুষ্ঠেয় ইয়ুথ সামিট নিয়েই ব্যস্ত।
অবশ্য তিনি দেবেনই বা কীভাবে? যে একজন কর্মচারীর বেতনই ঠিকমতো দেন না এবং সেজন্য তিনি শ্রম আদালতে গিয়ে ক্ষমা চেয়ে সাড়ে ৭ হাজার টাকা জরিমানা দেন- তিনি জনগণের কথা ভাববেন, এমনটা ভাবাই তো অন্যায়!
হোসেন জিল্লুর রহমান
এখন ব্র্যাকের চেয়ারপারসন হয়েছেন হোসেন জিল্লুর রহমান। ব্র্যাক বিশ্বের সবচেয়ে বড় বেসরকারি প্রতিষ্ঠান। সেই প্রতিষ্ঠানের কর্ণধার শেখ ফজলে হাসান আবেদ যদি এখন বেঁচে থাকতেন, তাহলে নিশ্চয়ই তিনি ব্র্যাকের স্বাস্থ্য বিভাগকে এই নিয়ে কাজ করার জন্য নির্দেশনা দিতেন। এটুকুই যথেষ্ট ছিল। কারণ সরকারের পরেই ব্র্যাকের স্বাস্থ্যসেবা নেটওয়ার্ক দেশজুড়ে বিস্তৃত। এই নেটওয়ার্ককে কাজে লাগিয়ে সারাদেশের মানুষকে সচেতন করা যেতে পারতো।
শুধু স্বাস্থ্যসেবাই নয়, ব্র্যাকের অভিবাসন বিভাগও এখন যথেষ্ট শক্তিশালী। অভিবাসন ক্ষেত্রে সচেতনতা সৃষ্টিতেও ব্র্যাক বড় ভূমিকা রাখছে। ব্র্যাকের চেয়ারপারসন হোসেন জিল্লুর রহমান, যিনি স্বাস্থ্য বিষয়ক একজন গবেষকও বটে। রকফেলার ফাউন্ডেশনের টাকায় তিনি বাংলাদেশের স্বাস্থ্যখাত নিয়ে অনেক গবেষণা করেন।
কিন্তু করোনাভাইরাস নিয়ে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়া, বাংলাদেশে তিনজন করোনা রোগী শনাক্ত হওয়ার পরেও ব্রাকের কোনো কার্যক্রম চোখে পড়েনি। কারণ সেখানে দিকনির্দেশনা দেওয়ার মতো নেতা বা নেতৃত্ব নেই। হোসেন জিল্লুর রহমান ব্র্যাকের চেয়ারম্যান হিসেবে কি কাজ করছেন, সে প্রশ্ন হতেই পারে। হোসেন জিল্লুর রহমানরা অবশ্য নিজেদের স্বার্থ যেখানে থাকে, সেখানেই কাজ করেন। জনগণের বিষয় নিয়ে তাদের মাথা ঘামানোর সময় কোথায়?
ড. বদিউল আলম মজুমদার
সুশাসনের জন্য নাগরিক (সুজন) এর নির্বাহী পরিচালক ড. বদিউল আলম মজুমদার। তার ‘দি হাঙ্গার প্রজেক্ট’ নামেও আরেকটি এনজিও রয়েছে। সুশাসনের জন্য নাগরিকের সারা দেশব্যাপী নেটওয়ার্ক বিস্তৃত। ড. বদিউল আলম মজুমদার কথায় কথায় সরকারকে কাঠগড়ায় দাড় করান, সরকারের নানারকম সমালোচনাও করেন। কিন্তু করোনাভাইরাস নিয়ে জনগণকে সতর্কতামূলক একটি বক্তব্য বা বিবৃতি তিনি দেননি এখন পর্যন্ত। এমনকি করোনাভাইরাসের ব্যাপারে তার সুজনের কর্মীরা স্বেচ্ছাসেবক হিসেবে কাজ করতে পারে। বিশেষ করে যারা বিদেশ থেকে এসেছে, তাদের সতর্কতার বিষয়েও দেশব্যাপী কাজ করতে পারে। কিন্তু সেসব কাজ তারা করবেন কেন! তাদের একমাত্র কাজ তো সরকারকে ফেলে দেওয়া।
ড. দেবপ্রিয় ভট্টাচার্য
ড. দেবপ্রিয় ভট্টাচার্য সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগের (সিপিডি) সম্মানিত ফেলো। আর এই ফেলো হিসেবে তার অন্যতম কাজ হলো সরকারের বিরুদ্ধে নানা তথ্য উপাত্ত হাজির করে সরকারকে প্রশ্নবিদ্ধ করা, সরকারের উন্নয়নকে প্রশ্নবিদ্ধ করা। অথচ করোনাভাইরাসের কারণে আমাদের অর্থনীতিতে যে নেতিবাচক প্রভাবগুলো পড়তে পারে, সেখানে করণীয় কি, জনগণ কীভাবে এই সংকট মোকাবেলা করতে পারে, অর্থনৈতিক নেতিবাচক দিকগুলো আমরা কীভাবে কাটিয়ে উঠতে পারি- এটা নিয়ে ড. দেবপ্রিয় ভট্টাচার্য এখন পর্যন্ত কোনো কথা বলেননি। কারণ এটার জন্য তিনি এখনো হয়ত কোনো বিদেশী ফান্ড পাননি।
এই হলো বাংলাদেশের সুশীল সমাজের অবস্থা। যারা কেবলমাত্র নিজেদের স্বার্থে এবং ‘আর্থিক সহায়তা’ পেলেই জ্ঞানদান করে, পরামর্শ প্রদান করে। করোনাভাইরাসের কারণে কোনো বিদেশী সংস্থা এখনো হয়ত তাদেরকে আর্থিক সহায়তা দেননি। এজন্যই তারা মৌনব্রত পালন করছেন।
Editor & Publisher : Md. Motiur Rahman
Pritam-Zaman Tower, Level 03, Suite No: 401/A, 37/2 Bir Protik Gazi Dastagir Road, Purana Palton, Dhaka-1000
Cell : (+88) 01706 666 716, (+88) 01711 145 898, Phone: +88 02-41051180-81