02/24/2025
সামি | Published: 2020-06-25 19:13:48
বাংলাদেশের করোনা সংক্রমণ নিয়ে অনেকে উদ্বিগ্ন, আতঙ্কিত। প্রতিদিন বেড়ে চলেছে করোনা রোগীর সংখ্যা, বাড়ছে মৃত্যুর সংখ্যাও। কিন্তু এই বাস্তবতার পরেও বাংলাদেশের কিছু কিছু সূচক এবং তথ্য-উপাত্ত আশার কথা শোনাচ্ছে। আর এই কারণে করোনা সংক্রমণ তীব্র হওয়ার পরেও মানুষ উদ্বিগ্ন নয় এবং জীবনযাত্রা থেমে নেই। বরং মানুষ করোনা পরিস্থিতির থেকে অর্থনৈতিক সংকটকে বেশি প্রকট মনে করছে এবং অর্থনৈতিক সঙ্কট কাটিয়ে ওঠাকেই বড় চ্যালেঞ্জ মনে করছে।
মানুষ করোনার সঙ্গে বসবাসের এক কৌশল রপ্ত করে ফেলেছে এবং যে কারণে করোনায় এখনো বিপর্যস্ত হয়নি বাংলাদেশ। করোনায় বাংলাদেশের যে সুখবরগুলো রয়েছে এবং বিশেষজ্ঞরা বলছেন যে কারণগুলোতে বাংলাদেশকে করোনা নাস্তানাবুদ করতে পারছে না তাঁর মধ্যে রয়েছে-
নব্বই শতাংশ মানুষ বাসায় চিকিৎসা নিচ্ছে
বাংলাদেশে করোনা আক্রান্তের সংখ্যা প্রায় সোয়া লাখ ছাড়িয়ে গেছে। করোনায় যারা আক্রান্ত হচ্ছে তাঁদের নব্বই শতাংশ রোগী বাসায় থেকে চিকিৎসা নিচ্ছেন এবং সুস্থ হয়ে যাচ্ছেন। অনেকে কোন চিকিৎসকের কাছেও যাচ্ছেন না, বিভিন্ন গণমাধ্যম, বিভিন্ন অনলাইন প্লাটফর্ম বা শুভাকাঙ্ক্ষীদের কাছ থেকে পরামর্শ নিয়ে যে চিকিৎসাগুলো নেওয়া দরকার তা নিচ্ছেন এবং সুস্থ হয়ে উঠছেন। এর ফলে আস্তে আস্তে করোনায় অভ্যস্ততা তৈরি হচ্ছে মানুষের মাঝে।
মৃত্যুহার কম
এটা বারবার বলা হচ্ছে যে, বাংলাদেশে করোনায় মৃত্যুর হার অন্যান্য দেশগুলোর তুলনায় কম। এখন পর্যন্ত বাংলাদেশে মৃত্যুর হার শতকরা ১.৩ শতাংশের কাছাকাছি। যেটা খুব একটা উদ্বেগজনক নয় বলে মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা। আর এই মৃত্যুহার কম হওয়াটাও বাংলাদেশের জন্য সুখবর।
অধিকাংশ জেলার পরিস্থিতি ভালো
করোনা সংক্রমণ সারাদেশে ছড়িয়ে পড়েছে এটা যেমন সত্যি, তেমনি এটাও বাস্তবতা যে, বাংলাদেশের ঢাকা, চট্টগ্রাম, নারায়ণগঞ্জ, গাজীপুরসহ কিছু উল্লেখযোগ্য এলাকায় করোনা সংক্রমণ ব্যাপক। তবে অন্য জেলাগুলোতে করোনা সংক্রমণ অপেক্ষাকৃত কম। বিশেষ করে প্রত্যন্ত অঞ্চলে করোনা পরিস্থিতি ভালো। এর ফলে বাংলাদেশে যেমন কৃষি উৎপাদন ব্যহত হওয়ার সম্ভাবনা কম, তেমনি যে সমস্ত এলাকাগুলোতে চিকিৎসা সুবিধা দেওয়া কঠিন হয়ে পড়বে সেই সমস্ত এলাকাগুলোতে আক্রান্ত কম থাকায় তা দেশের চিকিৎসা ব্যবস্থার প্রতি একটা সুখবর বটে।
গরীব মানুষদের আক্রান্তের হার কম
করোনায় গরীব মানুষদের জন্য একটি বড় সুখবর হলো, গরীব মানুষরা এখন পর্যন্ত আক্রান্ত কম হচ্ছেন, হচ্ছেন না বললেই চলে। বিশেষ করে যারা খেটে-খাওয়া দিনমজুর, বস্তিতে বসবাস করে, কৃষক, শ্রমিক- এদের মধ্যে করোনা সংক্রমণের হার অনেক কম। এটার কারণ নিয়ে গবেষণার তাগিদ দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রীর ব্যক্তিগত চিকিৎসক এবং আন্তর্জাতিক খ্যাতিসম্পন্ন মেডিসিন বিশেষজ্ঞ ডা. এবিএম আবদুল্লাহ।
আইইডিসিআর-এর পক্ষ থেকেও বলা হয়েছে যে, তাঁরা এই বিষয়টি নিয়ে গবেষণা করতে আগ্রহী। তবে গবেষণা যাই হোক না কেন বাংলাদেশের গরীব মানুষদের করোনা সংক্রমণের হার কম হওয়াটি আমাদের জন্য একটি সুখবর।
জনপ্রিয় হচ্ছে টেলিমিডিসিন
যেকোন সঙ্কটে সবসময় কিছু সম্ভাবনা বেড়িয়ে আসে। বাংলাদেশে যখন করোনা সংক্রমণ শুরু হয় তখন স্বাস্থ্যগত বিষয়ে একাধিক সঙ্কট শুরু হয়েছিল। করোনা চিকিৎসা নিয়ে যেমন সঙ্কট তৈরি হয়েছিল, তেমনি সঙ্কট তৈরি হয়েছিল আমাদের অন্যান্য চিকিৎসা নিয়েও। সরকারি-বেসরকারি হাসপাতালে চিকিৎসক আসা প্রায় বন্ধ হয়ে গিয়েছিল। বন্ধ হয়ে গিয়েছিল জরুরী সেবা প্রদান পর্যন্ত।
আর এরকম পরিস্থিতিতে ডিজিটাল বাংলাদেশের কল্যাণে টেলিমেডিসিন সেবা চালু হয় এবং ক্রমশ এখন তা জনপ্রিয় হয়ে উঠছে। করোনাকালে বাংলাদেশের জন্য অন্যতম সুখবর হচ্ছে যে, টেলিমেডিসিনের উপর নির্ভরতা বাড়ছে এবং এই নির্ভরতা বাংলাদেশের চিকিৎসা ক্ষেত্রে একটি নতুন যুগের সূচনা করতে যাচ্ছে বলে মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা।
আর এই সমস্ত সুখবরের কারণে করোনা যদি বাংলাদেশে আরো কিছুদিন থাকে তাহলেও তা বাংলাদেশকে চোখ রাঙাতে পারবে না। বরং মানুষ করোনাকে বশীভূত করে জীবন এবং জীবিকা চালাবে।
Editor & Publisher : Md. Motiur Rahman
Pritam-Zaman Tower, Level 03, Suite No: 401/A, 37/2 Bir Protik Gazi Dastagir Road, Purana Palton, Dhaka-1000
Cell : (+88) 01706 666 716, (+88) 01711 145 898, Phone: +88 02-41051180-81