02/24/2025
আলিফ | Published: 2020-07-17 22:51:36
স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালক অধ্যাপক ডা. আবুল কালাম আজাদ তাঁর আনুগত্যের দালিলিক প্রমাণ দিয়েছেন। তিনি একান্ত অনুগত সরকারি কর্মকর্তা হিসেবে নিজেকে উপস্থাপন করেছেন কারণ দর্শানোর নোটিশের জবাবে।
সেখানে তিনি বলেছেন যে, স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের সাবেক সচিব আসাদুল ইসলাম তাঁকে টেলিফোন করে রিজেন্ট হাসপাতালের সঙ্গে চুক্তি করার জন্য অনুরোধ করেন এবং এই প্রেক্ষিতে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালক এই চুক্তি স্বাক্ষর করেন।
যারা স্বাস্থ্য অধিদপ্তর এবং স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় সম্পর্কে খোঁজখবর রাখেন তাঁরা জানেন যে, স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালক মন্ত্রণালয়কে পাত্তাই দিতেন না এবং মন্ত্রণালয়ের কোন নির্দেশ শুনতে তাঁর তীব্র অনীহা ছিল। সেই স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালক এত অনুগত হলেন যে, একজন সচিবের মৌখিক কথায় তিনি রিজেন্টের সঙ্গে চুক্তি স্বাক্ষর করলেন, তাঁর সঙ্গে খোশগল্প-আড্ডায় মশগুল হলেন!
স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালকের এই ‘অতিভক্তি’ নিয়ে জনমনে প্রশ্ন উঠেছে। যে মহাপরিচালক স্বাস্থ্য সচিবকে পাত্তাই দিতেন না, স্বাস্থ্য সচিবকে এড়িয়ে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের একের পর এক সিদ্ধান্ত নিতেন সেই মহাপরিচালক কিভাবে এত অনুগত হলেন তা এক প্রশ্ন।
২০১৯ সালের জানুয়ারি মাসে নতুন মন্ত্রিসভা গঠিত হওয়ার পর স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের দায়িত্ব গ্রহণ করেন জাহিদ মালেক। এরপর থেকেই স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালকের উত্থানপর্ব শুরু হয়।
মন্ত্রণালয়ের যে কোন নিয়োগ-বদলি ইত্যাদি কোনকিছুই তৎকালীন সচিব আসাদুল ইসলামের মাধ্যমে হতো না বলে জানা গেছে।
সেই সময় অতিরিক্ত সচিব হিসেবে বসানো হয় হাবিবুর রহমান খানকে, যিনি মন্ত্রীর ঘনিষ্ঠ। হাবিবুর রহমান খান, মহাপরিচালক এবং মন্ত্রী মিলে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের সব নিয়োগ-বদলি-পদোন্নতির কাজ করতেন বলে তথ্যপ্রমাণ পাওয়া যায়।
এই বাস্তবতায় যেখানে স্বাস্থ্যসচিবকে পাত্তাই দিতেন না স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালক সেখানে স্বাস্থ্যসচিবের এক টেলিফোনে তিনি এরকম চুক্তি করে ফেললেন সেটা কতটুক বিশ্বাসযোগ্য?
দ্বিতীয়ত, সচিব-মন্ত্রীরা অনেক টেলিফোনই করেন। অধস্তন কর্মকর্তারা কি আইনের বাইরে গিয়ে সেই টেলিফোনের নির্দেশনা প্রতিপালন করতে পারেন? সেই প্রশ্ন উঠেছে।
একাধিক সরকারি কর্মকর্তা বলেছেন যে, কোন টেলিফোন নির্দেশনা মানতে আইনত কোন সরকারি কর্মকর্তা বাধ্য নয়। লিখিত নির্দেশনা এবং আইনসম্মত নির্দেশনা পালন করাই তাঁর জন্যে যৌক্তিক। যেকোন নির্দেশনা দেওয়ার পর অধস্তন কর্মকর্তাকে দেখতে হবে যে এই নির্দেশটি আইনসম্মত কিনা। আইনসম্মত হলেই কেবল তিনি প্রতিপালন করবেন।
এই ব্যাপারে একাধিক প্রশাসন বিশেষজ্ঞের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে যে, মৌখিক নির্দেশ রুলস অব বিজনেসের কোনরকম পদ্ধতি নয় এবং মৌখিক নির্দেশের ভিত্তিতে কোন কাজ করলে যিনি কাজ করবেন দায়-দায়িত্বটা তাঁরই এবং স্বাস্থ্য সেবা বিভাগের তৎকালীন সচিব যে নির্দেশনা দিয়েছিলেন তা স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালক কিভাবে প্রমাণ করবেন সেটাও একটি বড় প্রশ্ন।
তাছাড়া স্বাস্থ্যসেবা সচিব যদি সত্যিই চাইতেন তাহলে তিনি লিখিত চিঠি দিতেন। এরকম নির্দেশনা পাওয়ার পর স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের প্রথম কাজ হওয়া উচিত ছিল রিজেন্ট হাসপাতাল সম্পর্কে খোঁজ নেওয়া, যাচাইবাছাই করা এমনকি এটা অনুমোদিত হাসপাতাল কিনা তা খতিয়ে দেখা। কিন্তু তা না করে কেবলমাত্র একটি টেলিফোনের ভিত্তিতে ম্যাজিকের মতো করে চুক্তি স্বাক্ষর কতটা বৈধ, আইনসম্মত এবং এতে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালক দায় এড়াতে পারেন কিনা তা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে।
Editor & Publisher : Md. Motiur Rahman
Pritam-Zaman Tower, Level 03, Suite No: 401/A, 37/2 Bir Protik Gazi Dastagir Road, Purana Palton, Dhaka-1000
Cell : (+88) 01706 666 716, (+88) 01711 145 898, Phone: +88 02-41051180-81