02/24/2025
আবু তাহের বাপ্পা | Published: 2020-08-11 12:11:38
রিজেন্ট হাসপাতালের প্রতারক সাহেদকে অর্থ পাচারের মামলায় আরো ৭ দিনের রিমান্ড দেওয়া হয়েছে। এর আগে অস্ত্র মামলায় তাঁকে সাতক্ষীরায় নিয়ে যাওয়া হয়েছিল, সেখানে তিনি কারাগারে কয়েকদিন যাপন করেন, এখন তাঁকে আবার রিমান্ডে নেওয়া হচ্ছে।
র্যাব রিজেন্ট হাসপাতালের প্রতারক সাহেদের বিষয়ে তদন্ত করছে এবং তাঁর বিরুদ্ধে দুই শতাধিক অভিযোগ এসেছে বিভিন্ন ভুক্তভোগীর কাছ থেকে।
র্যাব সূত্রে জানা গেছে যে, সাহেদের ব্যাপারে যে অভিযোগগুলো এসেছে, তার সত্যতা যাচাই করা হচ্ছে। প্রতারণার মাধ্যমে শত-শত কোটি টাকা হাতিয়ে নিয়েছে এই সাহেদ এবং তাঁর প্রতারণার জাল সর্বত্র বিস্তৃত ছিল। শুধুমাত্র ভূয়া রিপোর্ট দিয়েই সাহেদ কয়েক কোটি টাকা হাতিয়ে নিয়েছে। কিন্তু এখন পর্যন্ত তার টাকার উৎসের সন্ধান পায়নি আইনপ্রয়োগকারী সংস্থা।
র্যাবের একটি সূত্র বলছে যে, সে কি পরিমাণ অর্থ বিদেশে পাচার করেছে এবং কোথায় পাচার করেছে এই বিষয়টি তদন্তের জন্যে তাঁরা সিআইডি’র সহায়তা নেবেন এবং সিআইডি’র মাধ্যমে তাঁরা অর্থের অনুসন্ধান করবে। তাঁর অর্থগুলো কোথায় আছে এবং কিভাবে সে খরচ করেছে সে ব্যাপারে কোন কূলকিনারা পাচ্ছে না আইনপ্রয়োগকারী সংস্থা।
অথচ তথ্য-উপাত্ত বলছে যে, সাহেদ প্রতারণার মাধ্যমে প্রায় শতকোটি টাকা আত্মসাৎ করেছে বিভিন্ন ব্যক্তি-প্রতিষ্ঠানের কাছ থেকে।
প্রশ্ন উঠেছে যে, এই আত্মসাতের টাকা তাহলে গেল কোথায়? এই ব্যাপারে আইনপ্রয়োগকারী সংস্থা এখন পর্যন্ত অনুসন্ধান করছে এবং এখন পর্যন্ত চূড়ান্ত কোন তথ্য দিতে পারছে না।
কিন্তু সাহেদের কার্যক্রম যদি পর্যালোচনা বা বিশ্লেষণ করা যায় তাহলে ধারণা করা যায় যে, সাহেদ প্রতারণার এই টাকা হয়তো ৩ ভাবে সরিয়ে ফেলতে পারে।
প্রথম ধারণা, বেনামে বিনিয়োগ করেছে সাহেদ। সাহেদ অত্যন্ত ধূর্ত এবং প্রতারক। কাজেই সে জানতো যে, আজ বা কাল হোক তাঁকে আইনের আওতায় আসতেই হবে। বিশেষ করে ২০১৬ সালে যখন প্রতারণার অভিযোগে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় তাঁকে তালিকাভুক্ত প্রতারক ঘোষণা করে তখন থেকেই সে জানতো যে একদিন না একদিন তাঁকে ধরা পড়তেই হবে। এরপর থেকেই সে সতর্ক ছিল এবং নিজের নামে বা নিজের একাউন্টে তেমন কোন টাকা রাখেনি। বরং বিভিন্ন স্থানে টাকা গুলো বিনিয়োগ করেছে বেনামে। কাজেই এটা খুঁজে বের করা অত্যন্ত কষ্টসাধ্য ব্যাপার।
দ্বিতীয় যে আশঙ্কা করা হচ্ছে তা হলো, সাহেদ হয়তো টাকাগুলো বেনামে বিদেশে পাচার করেছে। কারণ জানা গেছে যে, সাহেদ বাংলাদেশ থেকে ভারতে এবং ভারত থেকে সিঙ্গাপুরে পালাতে চেয়েছিল। সিঙ্গাপুরে কেন পালাতে চেয়েছিল সেই উত্তর খোঁজা হলে সাহেদের টাকার উৎসের একটি যোগসূত্র পাওয়া যেতে পারে বলে মনে করেন অনেকে। কারণ সাহেদ হয়তো তাঁর মোটা অঙ্কের টাকা চোরাই পথে বা হুন্ডির মাধ্যমে সিঙ্গাপুর বা অন্য কোথাও পাচার করেছে।
তৃতীয় ধারণা হচ্ছে, সাহেদের অনেক গডফাদার ছিল, যারা সাহেদকে এই অবস্থানে নিয়ে আসতে সহায়তা করেছে। এই সমস্ত গডফাদাররা সাহেদকে পৃষ্ঠপোষকতা দিতো এবং সাহেদকে অপকর্মগুলো করার ক্ষেত্রে সহযোগিতা করতো। এমনও হতে পারে যে, সাহেদ তাঁদের হয়ে অর্থগুলো উপার্জন করেছে। তাঁরা নিজেদের অংশ পেয়েছে এবং সাহেদ নিজের অংশ হয়তো অন্যত্র সরিয়ে ফেলেছে। আর এইজন্যেই হয়তো তাঁর কাছে তেমন বেশি টাকা পাওয়া যাচ্ছে না।
আইনপ্রয়োগকারী সংস্থা বলছে, যেহেতু তাঁরা সাহেদকে ধরেছে এবং সাহেদের বিরুদ্ধে যে সমস্ত প্রতারণা- অর্থ জালিয়াতির অভিযোগগুলো আসছে সেগুলো প্রমাণিত। যেমন করোনা পরীক্ষার নামে তিনি কোটি-কোটি টাকা কামিয়ে নিয়েছে- যা প্রমাণিত, বিভিন্ন মানুষকে সে ভুয়া চেক দিয়েছে- তাও প্রমাণিত। এই অর্থগুলো কোথাও না কোথাও অবশ্যই আছে। কারণ সাহেদ কোথাও ঠিকভাবে টাকা দিতো না। এমনকি রিজেন্ট হাসপাতাল যে বাড়িতে ছিল, সেই বাড়ির ভাড়াও দিতো না।
কাজেই সাহেদের টাকার খোঁজ পাওয়াটাই এখন তদন্তের একটি বড় উপজীব্য বিষয়। কারণ সাহেদের টাকা কোথায় আছে, এটা খোঁজ পেলে তাঁর অপরাধের সঙ্গে কারা কতটুকু সংযুক্ত তাও বেরিয়ে আসবে।
Editor & Publisher : Md. Motiur Rahman
Pritam-Zaman Tower, Level 03, Suite No: 401/A, 37/2 Bir Protik Gazi Dastagir Road, Purana Palton, Dhaka-1000
Cell : (+88) 01706 666 716, (+88) 01711 145 898, Phone: +88 02-41051180-81