02/24/2025
বিশেষ প্রতিবেদক | Published: 2020-09-29 05:11:30
দশ বছর ধরে তিস্তার পানির জন্য অপেক্ষা করেছে বাংলাদেশ। মনমোহন সিংহের ঢাকা সফরে চুক্তি হবার কথা ছিল। কিন্তু মমতার আপত্তিতে আটকে যায় সেই চুক্তি। তারপর তিস্তায় অনেক জল গড়িয়েছে।
মোদীর শাসনকালের দ্বিতীয় মেয়াদ চলছে। কিন্তু চুক্তি হয়নি। বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাও অন্য ধাতুতে গড়া। পানির জন্য হাত পেতে অপেক্ষার মানুষ নন তিনি। এজন্য পানিসম্পদ মন্ত্রণালয়কে দিয়ে কাজ করিয়েছেন। সীমান্ত সংলগ্ন অঞ্চলে তিস্তার দুপাশে জলধার নির্মাণের পরিকল্পনা চূড়ান্ত করেছেন। চীন এর জন্য আর্থিক সহায়তা দিতেও সম্মত হয়েছে। ১০০ কোটি ডলারের ঋণ মঞ্জুরি হয়েছে।
এই জলাধার হলে তিস্তার পানির জন্য অপেক্ষা করতে হবে না বাংলাদেশকে। বর্ষা মৌসুমে বাড়তি পানি জলাধারে জমা হবে। শুকনো মৌসুমে জলাধারের পানি যাবে মূল নদীতে। এটাতেই ভারতের আপত্তি। ভারত বলছে এই জলাধার হলে, তিস্তার স্বাভাবিক পানি প্রবাহ বন্ধ হয়ে যাবে। শুকিয়ে যাবে তিস্তার ভারতের অংশ। এই জলাধার এখন ভারতের প্রধান মাথা ব্যাথা। মনে করা হচ্ছে, ভারত-বাংলাদেশ সম্পর্কের প্রধান অস্বস্তির জায়গা এখন এটিই।
আরো বিষয় আছে, যেমন চীনের সঙ্গে বাংলাদেশের অতিরিক্ত মাখামাখি কিংবা বিভিন্ন টেন্ডারে চীনের একচেটিয়া সাফল্য ইত্যাদি। কিন্তু এসব ছাপিয়ে আগে জলাধার নির্মাণ বন্ধ চায় ভারত। আর একারণেই বলা হচ্ছে, ভারতের নতুন রাষ্ট্রদূত দোরাইস্বামীর প্রথম অ্যাসাইনমেন্ট হলো, এই জলাধার বন্ধ করা। কিন্তু বাংলাদেশ এখন পর্যন্ত তাদের অবস্থানে অনড় আছে। বাংলাদেশ বলছে, তিস্তার পানির জন্য বাংলাদেশের উত্তরাঞ্চলে ব্যাপক ক্ষতি হচ্ছে। সরকারকে জনগণের কথা ভাবতেই হবে।
২০০৮ সালে আওয়ামী লীগ সরকার ক্ষমতায় আসার পর বাংলাদেশ-ভারত সম্পর্কের নতুন মেরুকরণ শুরু হয়। দীর্ঘদিনের অমীমাংশিত অনেক সমস্যার সমাধান হয়। বিশেষ করে ছিটমহল হস্তান্তর ছিল একটি ঐতিহাসিক সমঝোতা। ভারতের বিছিন্নতাবাদীদের সব ধরনের আশ্রয়-প্রশ্রয় দেয়া বন্ধ করে বাংলাদেশ। কংগ্রেসের পর মোদীর নেতৃত্বে বিজেপি সরকার ক্ষমতায় এলে, দুদেশের সম্পর্ক একই গতিতে এগোতে থাকে। বিশেষ করে নরেন্দ্র মোদী শেখ হাসিনার সঙ্গে কাজ করে যেতে বিশেষ আগ্রহ দেখান।
এরকম সম্পর্কের মাঝেই গত এক বছর ধরে দুই দেশের সম্পর্কের টানাপোড়েনের খবর পাওয়া যায়। এর মধ্যেই ভারতের পররাষ্ট্র সচিব হর্ষবর্ধন শ্রিংলা গত মাসে ঢাকায় এসেছিলেন।
ভারতীয় কূটনীতিক সূত্রগুলো বলছে, ভারতের প্রধান মাথা ব্যথা তিস্তা। সামনে বিজেপি যে পশ্চিম বাংলা দখলের মহাপরিকল্পনা করেছে, তাতে দেয়াল হয়ে উঠেছে এই জলাধার প্রকল্প। আর এজন্যই বাংলাদেশকে চাপ দিচ্ছে ভারত।
সেই চাপেরই একটি বহিঃপ্রকাশ হলো পেঁয়াজ রপ্তানি বন্ধ। সামনে হয়তো আরো অস্বস্তিকর খবর আসবে। কিন্তু চাপ দিয়ে শেখ হাসিনাকে টলানো যায়- এমন নজীর একটিও নেই।
Editor & Publisher : Md. Motiur Rahman
Pritam-Zaman Tower, Level 03, Suite No: 401/A, 37/2 Bir Protik Gazi Dastagir Road, Purana Palton, Dhaka-1000
Cell : (+88) 01706 666 716, (+88) 01711 145 898, Phone: +88 02-41051180-81