02/25/2025
নেহাল আহমেদ | Published: 2021-09-11 22:02:18
পাঠকাটি থেকে উৎপাদিত চারকোল পার্টিকেল বোর্ড সহ নানান উপকরণ এখন বিভিন্ন কাজে ব্যবহৃত হচ্ছে প্রযুক্তির উৎকর্ষে ক্রমেই বাড়ছে পাটকাঠির কদর। উন্মোচন হচ্ছে অর্থনীতির নতুন দুয়ার।
সাধারণত পাঠকাঠি দিয়ে গ্রামে গঞ্জে অসচ্ছল পরিবারের ঘরের বেড়া তৈরি করা হত। বেশীরভাগ জ্বালানি হিসাবেও ব্যবহৃত হতো। ক্রমশ প্রযুক্তির কল্যানে যেখানে সেখানে ফেলে রাখা পাটকাঠি এখন অর্থকরী পণ্য হয়ে উঠেছে।
একসময়ের হেলাফেলার পাটকাঠি দ্বারা পানের বরজ, পার্টিকেল বোর্ড ও চারকোল কারখানায় পাটখড়ির ব্যাপক চাহিদা দেখা দিয়েছে।
পাটের উপজাত এই পাটখড়ি বা পাটকাঠি গ্রামের গৃহিণীদের কাছে বেশ কদরও ছিল। যেমন কদর ছিল বাঁশ, ধানের তুষ কিংবা কাঠ-খড়। অবহেলায় যে পাটখড়ি নষ্ট হয়ে যেত সময়ের পরিক্রমায় বেড়েছে এর বহুমুখী ব্যবহার যার কারনে পাটখড়ির কদর বেড়েছে বহু গুণ। চড়া দামে বিক্রি হচ্ছে পাটকাঠি।
বলা যেতে পারে, এই পাটখড়ি সোনালী আঁশ পাটের হারানো গৌরব ফিরিয়ে আনতে পারে।কারণ এই পাটখড়ি বিশেষ এক চুল্লিতে পুড়িয়ে তৈরি হচ্ছে কার্বন বা চারকোল। এই কার্বন এখন বিদেশেও রফতানি হচ্ছে।
কার্বন পাউডার বা চারকোল এখন কিনে নিচ্ছে চীনসহ বেশ কয়েকটি দেশ। তারা এই পাটখড়ির কার্বন থেকে কার্বন পেপার, কম্পিউটার ও ফটোকপিয়ারের কালি, আতশবাজি, ফেসওয়াশের উপকরণ, প্রসাধন পণ্য, মোবাইল ব্যাটারি, দাঁত মাজার ওষুধ, খেতের সারসহ অনেক ধরনের পণ্য তৈরি করছে।
রাজবাড়ীর কয়েকটি এলাকা ঘুরে দেখা গেছে, সর্বত্র চলছে পাট পচানো, আঁশ ছাড়ানো ও শুকানোর কাজ শেষে কৃষকরা এখন পাটকাঠিও বেশ যত্নের সঙ্গে মজুদ করে রেখেছে।
রাজবাড়ী জেলার সদর, আলীপুর বালিয়াকান্দী, নারুয়া, বহরপুর সহ বিভিন্ন উপজেলার কৃষক পরিবারগুলো পাট ও পাটকাঠি শুকিয়ে ঘরে তোলার কাজে ব্যস্ত।
বালিয়াকান্দির কুদ্দুস জানান, রান্নার জ্বালানি, ঘরের বেড়া, পানের বরজের ছাউনি ছাড়া আর অন্য কোনো কাজে লাগত না পাটকাঠি। কিন্তু এখন পাটকাঠি বিক্রি করতে পারছি। শুনেছি পাঠখড়ি দিয়ে ছাই তৈরি করে বিদেশে রফতানিও করা হচ্ছে।
বালিয়াকান্দি উপজেলার আবাস এলাকার পাট চাষিরা জানান, দূর-দূরান্ত থেকে ব্যবসায়ীরা এসে পাটকাঠি কিনে নিয়ে যাচ্ছেন, দামও দিচ্ছেন ভালো। ১০০ মোঠা পাটকাঠি বিক্রি হচ্ছে ৪০০ থেকে ৫০০ টাকায়, যা এক সময় ১০০ থেকে ১২০ টাকায় বিক্রি হতো।
তারা জানান, পাট আবাদের খরচ পাট বিক্রি করে উঠে আসে। আর পাটকাঠি তাদের লাভের মুখ দেখিয়েছে।
রাজবাড়ীর পাট ও বস্ত্র মন্ত্রনালয়ের উপ-সহকারী মোঃ সোহান হোসেন জানান, মূলত গত এক দশক ধরেই এই জ্বালানি বস্তুটির বাজার বাড়ছে। শুধু তাই নয়, দেশে উদীয়মান রফতানিপণ্য হিসেবে শিল্পের মর্যাদাও পাচ্ছে পাটকাঠির ছাই।
কৃষকরা বলছেন, বাজারে পাট বিক্রি করে কোনো রকম উৎপাদন খরচ ওঠে। কিন্তু পাটকাঠি বিক্রির পুরো টাকাটাই লাভ! অনেকেই পাটকাঠি কেনাবেচাকে ব্যবসা হিসেবে নিয়েছেন। এতে সৃষ্টি হয়েছে নতুন কর্মসংস্থানও।
সরকারী বেসরকারী প্রতিষ্ঠান গবেষনার মাধ্যমে এবং কৃষকদের প্রশিক্ষনের মাধ্যমে সঠিক ভাবে সংরক্ষণ করে তৈরি করতে পারে পাটকাঠি রপ্তানীর নতুন বাজার। পাঠকাঠির ব্যবহারে ঘুরে দাঁড়াতে পারে দেশের পাটশিল্প।
Editor & Publisher : Md. Motiur Rahman
Pritam-Zaman Tower, Level 03, Suite No: 401/A, 37/2 Bir Protik Gazi Dastagir Road, Purana Palton, Dhaka-1000
Cell : (+88) 01706 666 716, (+88) 01711 145 898, Phone: +88 02-41051180-81