02/25/2025
নিজস্ব প্রতিবেদক | Published: 2022-04-29 17:09:56
অনলাইনে রেলের টিকেট বিক্রির দায়িত্বে থাকার সুবাদে সার্ভার থেকে আগেই টিকেট সরিয়ে কালোবাজারে বিক্রি করে দিতেন’ রেজাউল করিম। প্রতি ঈদে এভাবে টিকেট সরিয়ে আয় করতেন ১০-১২ লাখ টাকা।
ঈদের আগে অনলাইনে টিকেট ছাড়ার ‘কিছুক্ষণের মধ্যেই’ শেষ হয়ে যাওয়ার অভিযোগ পেয়ে ‘সহজ ডটকম’ এর এই কর্মীকে গ্রেপ্তারের পর এমন কৌশলের কথা জানিয়েছে র্যাব।
বৃহস্পতিবার বিকালে রাজধানীর কারওয়ান বাজার র্যাবের মিডিয়া সেন্টারে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে টিকেট বিক্রির সঙ্গে জড়িত ওই কর্মীসহ তার এক সহকারীকে গ্রেপ্তারের কথা জানানো হয়।
গ্রেপ্তারকৃতরা হলেন- ‘সহজ ডটকম’ এর কর্মী মো. রেজাউল করিম (৩৮) এবং তার সহযোগী এমরানুল আলম সম্রাট (২৮)। তাদের স্মার্টফোন থেকে ‘বিপুল পরিমাণ’ ট্রেনের ই-টিকিট জব্দ করা হয়।
র্যাব জানায়, মঙ্গলবার কমলাপুর স্টেশন থেকে রেজাউল করিমকে প্রথমে গ্রেপ্তার করা হয়। পরে শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর স্টেশন থেকে গ্রেপ্তার করা হয় তার সহকারী এমরানুলকে।
তাদের জিজ্ঞাসাবাদের তথ্য তুলে ধরে সংবাদ সম্মেলনে র্যাব-১ এর অধিনায়ক লেফটেন্যান্ট কর্নেল আব্দুল্লাহ আল মোমেন বলেন, “এ সময় রেজাউল টিকেট কালোবাজারির বিষয়ে বিস্তারিত তথ্য দেন।”
তার দেওয়া তথ্যের ভিত্তিতে বুধবার রাতে বিমানবন্দর স্টেশন থেকে এমরানুলকে গ্রেপ্তার করা হয় বলে জানান তিনি।
রেজাউলের টিকেট কালোবাজারির কৌশল ব্যাখ্যা করে র্যাব কর্মকর্তা বলেন, “সিস্টেম ইঞ্জিনিয়ার হওয়ার সুবাদে সার্ভার থেকে টিকেট বুক করে কিনে নিতেন। পরে তা কালোবাজারে বিক্রি করতেন।
“রেজাউল পরিচিতজনদের মাধ্যমে অবৈধ উপায়ে টিকিট প্রত্যাশীদের একটি বড় শ্রেণি গড়ে তোলেন। এর বাইরেও কালোবাজারিতে তার টিকিট বিক্রেতা রয়েছে।”
সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয়, ‘ভিআইপিদের’ টিকেটের ব্যবস্থা করে দেওয়ার সুযোগ নিয়ে তিনি এ কাজ করে আসছিলেন বলে জিজ্ঞাসাবাদে বলেছেন রেজাউল।
“পরিচিতজনদের কাছে তিনি ৫০০ টাকা লাভে টিকিট বিক্রি করতেন। অন্যদের কাছে নির্ধারিত দামের চেয়ে এক থেকে দেড় হাজার টাকা বেশিতে বিক্রি করতেন।”
র্যাব জানায়, টিকেট বেচা-বিক্রির বিষয়ে যোগাযোগ হতো বিভিন্ন ‘অ্যাপ’ এর মাধ্যমে। মোবাইল ব্যাংকিংয়ের পরিবর্তে লেনদেন করতেন নগদ অর্থে।
সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয়, প্রতি ঈদে ২-৩ হাজার ট্রেনের টিকিট সরিয়ে নিতেন রেজাউল। পরে কালোবাজারিতে বিক্রির মাধ্যমে প্রতি মৌসুমে আয় করতেন ১০-১২ লাখ টাকা।
গত মার্চের শেষে বাংলাদেশ রেলওয়ের টিকেট বিক্রির দায়িত্ব পায় সহজ-সিনেসিস-ভিনসেন জয়েন্ট ভেঞ্চার। এর আগে দেড় যুগ কম্পিউটার নেটওয়ার্ক সিস্টেম (সিএনএস) এ দায়িত্বে ছিল।
গ্রেপ্তার রেজাউল করিমকে র্যাব ‘সিস্টেম ইঞ্জিনিয়ার’ বললেও সহজ-সিনেসিস-ভিনসেন জেভি’র জনসংযোগ বিভাগের ব্যবস্থাপক ফারহাত আহমেদ বলছেন, ‘স্টেশন সাপোর্ট স্টাফ’ হিসেবে তাকে নিয়োগ দেওয়া হয়েছিল।
“আটক রেজাউল গত কয়েক বছর ধরে বাংলাদেশ রেলওয়ের টিকেট বিক্রয় সংক্রান্ত সাপোর্টের কাজে নিয়োজিত ছিলেন। সহজ-সিনেসিস-ভিনসেন জেভি গত ২১ মার্চ তাকে নিয়োগ দেয়।”
গত মঙ্গলবার ঢাকার কমলাপুর রেল স্টেশন থেকে আটক হওয়ার পর রেজাউল করিম নামের ওই কর্মীকে চাকরিচ্যুত করা হয়েছে বলে সহজের তরফ থেকে জানানো হয়েছে।
সংবাদ সম্মেলনে র্যাব কর্মকর্তা মোমেন জানান, রেজাউল গত ৬ বছর ধরে ট্রেনের ‘টিকেটিংয়ের’ সঙ্গে জড়িত।
সহজ ডটকমের আগে অনলাইনে টিকেট বিক্রির দায়িত্বে থাকা প্রতিষ্ঠান সিএনএস বিডিতেও কর্মরত ছিলেন উল্লেখ করে তিনি বলেন, “অভিজ্ঞ কর্মী হিসেবে সহজ ডটকম তাকে নিয়োগ দেয়।”
Editor & Publisher : Md. Motiur Rahman
Pritam-Zaman Tower, Level 03, Suite No: 401/A, 37/2 Bir Protik Gazi Dastagir Road, Purana Palton, Dhaka-1000
Cell : (+88) 01706 666 716, (+88) 01711 145 898, Phone: +88 02-41051180-81