02/25/2025
নিজস্ব প্রতিবেদক | Published: 2023-01-29 02:50:24
যুক্তরাষ্ট্রের একটি গবেষণা প্রতিষ্ঠান ভারতের আদানি গ্রুপের বিরুদ্ধে পুঁজিবাজারে ধোঁকাবাজির অভিযোগ নিয়ে প্রতিবেদন প্রকাশের পর টালমাটাল এশিয়ার শীর্ষ ধনী গৌতম আদানির ব্যবসা; পুঁজিবাজারে অব্যাহত দরপতনে কয়েকদিনেই ৫ হাজার কোটি ডলার হারিয়েছেন তিনি।
হিন্ডেনবার্গ রিসার্চ ফার্ম নামের ওই প্রতিষ্ঠান আদানি গ্রুপের বিরুদ্ধে ‘শেয়ার দরে কারচুপি’র অভিযোগ তুলে চাঞ্চল্যকর প্রতিবেদনটি প্রকাশ করেছে। এরপর তিন দিন ধরে দরপতনে কোম্পানির শেয়ারদর প্রায় ২০ শতাংশ কমে গেছে।
এ গ্রুপের অন্য কোম্পানিগুলোর শেয়ার দরে আরও টালমাটাল অবস্থা দাঁড়িয়েছে, মুম্বাই স্টক এক্সচেঞ্জে তাদের শেয়ারগুলো লেনদেন বন্ধ হয়ে গেছে।
এর প্রভাবে ফোর্বসের তালিকায় বিশ্বের তৃতীয় শীর্ষ ধনী ব্যক্তি থেকে সপ্তমে স্থানে নেমে গেছেন আদানি। তার সম্পদের মূল্য কমে বর্তমান দাঁড়িয়েছে আনুমানিক ৯ হাজার কোটি ডলারে।
তবে যে প্রতিবেদন নিয়ে গৌতম আদানির কোম্পানিগুলোর শেয়ার মুখ থুবড়ে পড়েছে, তাকে ‘ভিত্তিহীন এবং বিদ্বেষমূলক’ বলে দাবি করছেন আদানি। হিন্ডেনবার্গের বিরুদ্ধে আইনি পদক্ষেপের কথাও ভাবছে আদানি গ্রুপ।
অন্যদিকে হিন্ডেনবার্গ তাদের প্রতিবেদনকে সঠিক দাবি করে এর পক্ষে অবস্থানে অনড়। কোনো আইনি পদক্ষেপই কাজে আসবে না বলে মনে করছে তারা।
এদিকে ক্ষমতাসীন বিজেপির ‘কাছের ব্যক্তি’ হিসেবে পরিচিত আদানির এই ‘প্রতারণার’ অভিযোগ নিয়ে তদন্তের দাবি জানিয়েছে ভারতের প্রধান বিরোধী দল জাতীয় কংগ্রেস।
হিন্ডেনবার্গ রিসার্চের প্রতিবেদনে বলা হয়, দশককাল ধরে শেয়ার কারসাজি এবং আর্থিক লেনদেনে প্রতারণা চালিয়ে আসছে আদানি গ্রুপ। কৃত্রিমভাবে শেয়ারের দর বহু গুণ বাড়িয়ে এ গ্রুপ বিশাল সম্পদ গড়েছে। গত কয়েক বছরে আদানি গ্রুপের কোম্পানির শেয়ার গত কয়েক বছরে ৫০০ শতাংশেরও বেশি বেড়েছে।
আদানির বড় ধরনের শেয়ার বিক্রির পরিকল্পনার মধ্যেই মঙ্গলবার ওই প্রতিবেদন প্রকাশ করা হয়।
এরপর বুধবার ভারতে পুঁজিবাজার খোলার পর আদানির শেয়ারে দরপতন হতে থাকে। শুক্রবার ভরাডুবি দেখেছে আদানি গ্রুপ।
আদানি গ্রুপের সাতটি তালিকাভুক্ত কোম্পানির মধ্যে আদানি ট্রান্সমিশন, আদানি টোটাল গ্যাস ও আদানি গ্রিন এনার্জির শেয়ার শুক্রবার ২০ শতাংশ দরপতন হয়েছে। মূল কোম্পানি আদানি এন্টারপ্রাইজের শেয়ার মূল্য কমেছে ১৮ শতাংশ। ফলে শুক্রবার সম্পদ মূল্যে ৩ হাজার ৯০০ কোটি ডলার খুইয়েছে আদানি গ্রুপ।
সম্পদের মান কমলেও এখনও এশিয়ার শীর্ষ ধনী ব্যক্তি গৌতম আদানি, যার ব্যক্তিগত সম্পদের পরিমাণ ১১ হাজার ৩০০ কোটি ডলার। ভারতীয় আরেক ধনকুবের মুকেশ আম্বানির চেয়ে তার সম্পদ ৩ হাজার কোটি ডলার বেশি। তবে শুক্রবারের লোকসানের পর সেই ব্যবধান এখন কমে যাবে।
হিন্ডেনবার্গই প্রথম গবেষণা সংস্থা নয় যারা ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীঘেঁষা আদানির সম্পদের বিশাল সাম্রাজ্য নিয়ে উদ্বেগ জানাচ্ছে, যে সাম্রাজ্য মিডিয়া, ডেটা সেন্টার, সিমেন্ট আর বিমানবন্দরের মতো বিভিন্ন ক্ষেত্রে ব্যাপকভাবে কার্যক্রম বাড়াচ্ছে।
মার্কিন ধনকুবের বিল অ্যাকম্যান হিন্ডানবার্গের প্রতিবেদনকে ‘অত্যন্ত বিশ্বাসযোগ্য’ এবং অত্যন্ত ভালোভাবে গবেষণা করা হয়েছে বলে দাবি করেছেন।
টুইটারে ওই প্রতিবেদন নিয়ে বিতর্কে জড়িয়ে তিনি বলেন, “আদানি কোম্পানির কোনোটিতেই আমরা দীর্ঘ বা স্বল্প বিনিয়োগ করি না…কিংবা আমরা আমাদের নিজস্ব স্বাধীন গবেষণাও করিনি।”
কলেজ ড্রপআউট ৬০ বছর বয়সী আদানি স্ব-প্রতিষ্ঠিত টাইকুন। বিল গেটস এবং ওয়ারেন বাফেটের পরে বিশ্বের চতুর্থ এই ধনকুবের তিন দশক আগে প্রতিষ্ঠা করেছিলেন আদানি গ্রুপ।
মোদীর ঘনিষ্ঠ হওয়ার কারণে আদানির রাজনৈতিক সুবিধা পাওয়ার অভিযোগ বেশ আগে থেকেই করে আসছে ভারতের বিরোধীদলগুলো। আর হিন্ডেনবার্গের প্রতিবেদনের পর ঘটনা তদন্তের দাবি জানিয়েছে কংগ্রেস।
অনেক ভারতীয় ব্যাঙ্ক ও রাষ্ট্রী মালিকানাধীন বীমা কোম্পানি আদানি গ্রুপের কোম্পানিগুলোতে বিলিয়ন ডলার বিনিয়োগ করেছে বা ঋণ দিয়েছে। ভারতের কিছু নেতৃস্থানীয় সরকারি ব্যাংক বলেছে, আদানি গ্রুপের ঋণের ঝুঁকি নিয়ে তারা চিন্তিত নয়।
Editor & Publisher : Md. Motiur Rahman
Pritam-Zaman Tower, Level 03, Suite No: 401/A, 37/2 Bir Protik Gazi Dastagir Road, Purana Palton, Dhaka-1000
Cell : (+88) 01706 666 716, (+88) 01711 145 898, Phone: +88 02-41051180-81