02/26/2025
বিশেষ প্রতিবেদক | Published: 2023-09-27 11:07:15
স্বাধীনতা ব্যাংকার্স পরিষদ কেন্দ্রীয় কার্যনির্বাহী কমিটির আহ্বানে জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) অযৌক্তিকভাবে সোনালী, জনতা, অগ্রণী, রূপালী ও বিডিবিএল ব্যাংকের কর্মকর্তা ও কর্মচারীদের ওপর করারোপ করার প্রতিবাদে একটি মানববন্ধন কর্মসূচি পালন করা হয়।
এ সময় সভাপতি মোহাম্মদ আককাছ আলী আকাশ বলেন, "সোনালী, জনতা, অগ্রণী, রূপালী ও বিডিবিএল ব্যাংক স্বশাসিত ও রাষ্ট্রীয় মালিকানাধীন হওয়া সত্ত্বেও অযৌক্তিকভাবে এনবিআর বেসরকারি ব্যাংক বীমা প্রতিষ্ঠানের মতো করারোপের সিদ্ধান্ত নিয়েছে, যা সম্পূর্ণ অগ্রহণযোগ্য ও অন্যায়।"
এই বিষয়ে স্বাধীনতা ব্যাংকার্স পরিষদ কেন্দ্রীয় কমিটির সাধারণ সম্পাদক আশরাফ উল আলম ব্যাকুল বলেন, জাতীয় বেতন স্কেল-২০১৫-এর এসআরও-৩৭০ অনুযায়ী, সোনালী, জনতা, রূপালী, অগ্রণী ও বিডিবিএল স্বশাসিত ও রাষ্ট্রায়ত্ত প্রতিষ্ঠান। কিন্তু এনবিআরের এই ব্যাংকগুলোকে বেসরকারি প্রতিষ্ঠান বলার কোনো সুযোগ নেই।
তিনি আরও বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা যেখানে সর্বজনীন পেনশন সুবিধাসহ নানাবিধ উন্নয়ন কর্মকাণ্ড প্রসারিত করেছেন, সেখানে প্রশাসনে ঘাপটি মেরে থাকা সরকারবিরোধী লোকজন সরকারকে বেকায়দায় ফেলতে এমন সিদ্ধান্ত নিচ্ছে। যদি আগামীকালের (২৭ সেপ্টেম্বর) মধ্যে এনবিআর তার সিদ্ধান্ত থেকে সরে না আসে, তবে ভবিষ্যতে কঠিন ও কঠোর কর্মসূচি ঘোষণা করা হবে।
মূলত, জাতীয় বেতন স্কেল-২০১৫-এর এসআরও-৩৭০ অনুযায়ী, স্বশাসিত ও রাষ্ট্রায়ত্ত প্রতিষ্ঠান হিসেবে সোনালী, জনতা, রূপালী, অগ্রণী ও বিডিবিএল ব্যাংকের কর্মকর্তারা আয়কর দিতেন। কিন্তু এখন বলা হচ্ছে, জাতীয় বেতন স্কেল-২০১৫-এর এসআরও-৩৭১-এর অনুযায়ী আয়কর নেয়া হয়। এসআরও-৩৭১ আওতায় পড়ে ব্যাংক, বীমা ও আর্থিক প্রতিষ্ঠান।
জানা গেছে, কর অঞ্চলগুলো অর্থ মন্ত্রণালয়ের জারি করা পে-স্কেল ২০১৫-এর প্রজ্ঞাপন অনুযায়ী অতিরিক্ত আয়করের নোটিশ দিচ্ছে। এই প্রজ্ঞাপনে সোনালী, অগ্রণী, জনতা, রূপালী ও বাংলাদেশ ডেভেলপমেন্ট ব্যাংকের নাম নেই। ওই সময়ে বেসামরিক প্রশাসন, স্বশাসিত ও রাষ্ট্রায়ত্ত প্রতিষ্ঠান, ব্যাংক বীমা ও আর্থিক প্রতিষ্ঠান, পুলিশ, বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ এবং বিচার বিভাগের জন্য পে-স্কেলের পৃথক পৃথক প্রজ্ঞাপন জারি করা হয়। এতে ব্যাংক বীমা ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানের মধ্যে এসব ব্যাংককে অন্তর্ভুক্ত না করে স্বশাসিত ও রাষ্ট্রায়ত্ত প্রতিষ্ঠান হিসেবে অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছিল।
সুতরাং এতদিন প্রতিমাসে এই পাঁচ ব্যাংকের কর্মকর্তাদের বেতন, ভাতা বা বোনাসের ওপর ১ হাজার টাকা বা একটি নির্দিষ্ট পরিমাণ অর্থ কর হিসেবে কেটে রাখা হতো। পরে ব্যাংক তা দিয়ে আয়কর হিসেবে দাখিল করে দিত। কিন্তু এই নতুন নিয়ম অনুসারে, প্রোভিডেন্ট ফান্ডের লভ্যাংশ থেকে ২৫ শতাংশ কেটে নেয়া হবে। এতে ব্যাংকের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের মাসে দেড় থেকে আড়াই লাখ টাকা কর দিতে হচ্ছে।
কাজেই এই ৫ ব্যাংকের কর্মকর্তাদের দাবি, জাতীয় রাজস্ব বোর্ডকে এ থেকে সরে আসতে হবে। যদি তা না করা হয়, তাহলে তারা ২ অক্টোবর এনবিআর ঘেরাও কর্মসূচি দেবেন বলে গোপন সূত্রে জানা গেছে।
গত ১৮ সেপ্টেম্বর এ সংক্রান্ত একটি স্মারকলিপি এনবিআর বরাবর দিয়েছিল স্বাধীনতা ব্যাংকার্স পরিষদ। এ ব্যাপারে এসব ব্যাংকের উচ্চপদস্থ কর্মকর্তাদের সঙ্গে এনবিআর কয়েক দফা বসলেও এর কোনো সুরাহা হয়নি বলে জানা গেছে।
এদিকে চলতি বছরের ২২ ফেব্রুয়ারি এনবিআরকে চিঠি দেয় অর্থ মন্ত্রণালয়। এতে বলা হয়, রাষ্ট্রায়ত্ত প্রতিষ্ঠানভুক্ত সোনালী ব্যাংক লিমিটেড, জনতা ব্যাংক লিমিটেড, অগ্রণী ব্যাংক লিমিটেড, রূপালী ব্যাংক লিমিটেড এবং বাংলাদেশ ডেভেলপমেন্ট ব্যাংক লিমিটেডের জন্য নিজস্ব বেতন কাঠামো নির্ধারিত না হওয়া পর্যন্ত প্রধান নির্বাহী ও ব্যবস্থাপনা পরিচালক ব্যতীত অন্য কর্মকর্তা-কর্মচারীর ক্ষেত্রে এ ব্যাংকগুলোর অর্থ বিভাগ, অর্থ মন্ত্রণালয় হতে জারি করা চাকরি (স্বশাসিত এবং রাষ্ট্রায়ত্ত প্রতিষ্ঠানগুলো) (বেতন ও ভাতাদি) আদেশ, ২০১৫ অনুসরণ করতে পারে বিধায় এ ব্যাংকগুলোর নাম চাকরি (ব্যাংক, বীমা ও আর্থিক প্রতিষ্ঠান) (বেতন ও ভাতাদি) আদেশ ২০১৫-এ অন্তর্ভুক্ত করার প্রয়োজন নেই।
প্রসঙ্গত, সরকারি কর্মচারীদের মূল বেতন, উৎসব ভাতা ও বোনাস ছাড়া বাকি সব ভাতা ও সুবিধা আয়করমুক্ত। কিন্তু রাষ্ট্রমালিকানাধীন এই পাঁচ ব্যাংকের কর্মকর্তা-কর্মচারীদের সরকারি কর্মচারী হিসেবে মানছে না (এনবিআর)। এ কারণে এসব ব্যাংকের কর্মকর্তা-কর্মচারীদের সব আয়ের ওপর করারোপ করা হচ্ছে। অতিরিক্ত আয়কর আদায়ে সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের নোটিশও দিচ্ছে এনবিআর। এমনকি বাড়তি কর আদায়ে কাউকে কাউকে জরিমানাও করা হয়েছে।
স্বাধীনতা ব্যাংকার্স পরিষদের দাবি, রাষ্ট্রীয় মালিকানাধীন এই ৫ ব্যাংকে প্রায় ৬০ হাজার কর্মকর্তা-কর্মচারী রয়েছেন।
Editor & Publisher : Md. Motiur Rahman
Pritam-Zaman Tower, Level 03, Suite No: 401/A, 37/2 Bir Protik Gazi Dastagir Road, Purana Palton, Dhaka-1000
Cell : (+88) 01706 666 716, (+88) 01711 145 898, Phone: +88 02-41051180-81