02/27/2025
বিশেষ প্রতিবেদক | Published: 2023-12-21 02:52:28
বিএনপি-জামায়াতের চলমান সরকারবিরোধী আন্দোলন চলাকালে কিছুদিন পরপরই নাশকতার শিকার হচ্ছে রেলওয়ে। গত এক মাসে বড় আকারের কয়েকটি দুর্ঘটনায় যাত্রীদের প্রাণহানীসহ বড় ক্ষতির শিকার হয়েছে রেলওয়ে কর্তৃপক্ষ।
নাশকতা ও দুর্ঘটনা প্রতিরোধে এবার নতুন প্রযুক্তি আনছে বাংলাদেশ রেলওয়ে। একইসঙ্গে রেলের নিরাপত্তা বাড়াতে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় থেকে দুই হাজার ৭০০ সশস্ত্র আনসার সদস্য রেলে যুক্ত করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে কর্তৃপক্ষ।
রেলপথ মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা গেছে, দুর্ঘটনা প্রতিরোধে পুরো রেলপথকে অটোমেটিক সিমুলেশন সিস্টেমের (এসিএস) আওতায় নিয়ে আসার পরিকল্পনা নেওয়া হয়েছে। এই প্রযুক্তি চালু হলে চলমান ট্রেনের সামনে কোথাও লাইন কাটা থাকলে বা প্রতিবন্ধকতা থাকলে স্বয়ংক্রিয় ব্লক সিস্টেমের মাধ্যমে ট্রেনটি বন্ধ হয়ে যাবে। একইসঙ্গে এসিএস প্রযুক্তি বাস্তবায়নের জন্য পুরো রেলওয়েকে অনলাইনে নিয়ন্ত্রণ করার ব্যবস্থাও নেওয়া হচ্ছে বলে জানা গেছে।
এ প্রযুক্তি বাস্তবায়ন হলে দুর্ঘটনা কমলেও এর ব্যবহার কঠিন এবং ব্যয়সাপেক্ষ বলে মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা।
বাংলাদেশের মতো দেশে এসিএস প্রযুক্তি কতটা কার্যকর জানতে চাইলে নিরাপদ সড়ক বিশেষজ্ঞ ও বুয়েটের অধ্যাপক ড. শামসুল হক বলেন, এসিএস বা অটোমেটিক সিমুলেশন সিস্টেম মূলত উচ্চ গতির ট্রেনগুলোর সংখ্যাসূচক মডেল এবং অবজেক্ট ওরিয়েন্টেড মডেলের ভিত্তিতে তৈরি একটা সিমুলেশন বিশ্লেষণ। চীন ও জাপানে এ প্রযুক্তি দুর্ঘটনা শূন্যে নামিয়ে এনেছে। তবে বাংলাদেশের ক্ষেত্রে এ প্রযুক্তি ফলপ্রসূ করতে হলে আগে ব্লক সিস্টেমের অন ডেভেলপিং কম্পিউটার পরীক্ষা এবং চালকদের উচ্চতর প্রশিক্ষণ নিশ্চিত করতে হবে।
এই প্রযুক্তি বাস্তবায়নের প্রক্রিয়া ও অগ্রগতি সম্পর্কে রেলপথ মন্ত্রণালয়ের প্রধান পরিকল্পনা কর্মকর্তা সলিমুল্লাহ বাহার বলেন, এসিএস প্রযুক্তি চালু করতে ইতোমধ্যে রেলওয়ের পুরো কাঠামো অনলাইনে নিয়ন্ত্রণের প্রক্রিয়া চলছে। এ প্রক্রিয়া শেষ হলেই নতুন এ প্রযুক্তির পাইলটিং শুরু করতে পারবো।
এসিএস প্রযুক্তি সম্পর্কে সলিমুল্লাহ বাহার বলেন, এ প্রযুক্তি উচ্চগতির রেলওয়ে সিস্টেমে দুর্ঘটনা প্রতিরোধে কার্যকর। এর স্বয়ংক্রিয় নিয়ন্ত্রণ ব্যবস্থার কারণে যেকোনও ধরনের দুর্ঘটনা আমরা এড়াতে পারবো। এ প্রযুক্তি ব্যবহারে অভ্যস্ত করতে লোকোমাস্টারদের প্রশিক্ষণের আওতায় আনা হবে বলেও জানান তিনি।
এদিকে রেলে নাশকতা ঠেকাতে জনবল বাড়ানোর উদ্যেগ নিয়েছে রেলওয়ে কর্তৃপক্ষ। বাংলাদেশ রেলওয়ে সূত্রে জানা গেছে, সারা দেশে তিন হাজার কিলোমিটারেরও বেশি রেললাইনে অন্তত ৩০০টি ঝুঁকিপূর্ণ স্পট চিহ্নিত করা হয়েছে। এর মধ্যে ঢাকা রেলওয়ে জেলায় রয়েছে ৫০টিরও বেশি স্পট। এসব ঝুঁকিপূর্ণ স্পটের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে ইতোমধ্যে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের কাছে দুই হাজার ৭০০ আনসার সদস্য চাওয়া হয়েছে। স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় এরই মধ্যে তা অনুমোদন দিয়েছে বলেও জানা গেছে।
এ বিষয়ে রেলপথ মন্ত্রী নুরুল ইসলাম সুজন বলেন রেললাইনে নাশকতা ঠেকাতে আমরা স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের কাছে চিঠি পাঠিয়েছি, ট্রেন চলাচল করে এমন এলাকায় নিরাপত্তা জোরদার করতে আইন প্রয়োগকারী সংস্থার সহায়তা চাওয়া হয়েছে চিঠিতে। এছাড়া রেল রাইনের নিরাপত্তায় আমরা দুই হাজার ৭০০ আনসার সদস্য চেয়েছি যা অনুমোদন দেওয়া হয়েছে। দুয়েক দিনের মধ্যেই রেলওয়েতে এ জনবল যুক্ত হবে।
এর আগে গত ২৮ অক্টোবর বিএনপির সমাবেশের পরে নিয়মিত বিরতিতে ডাকা হরতাল-অবরোধের মধ্যে এখন পর্যন্ত ছোট-বড় মিলে অন্তত ৩০টি দুর্ঘটনা ঘটেছে বলে জানা গেছে। চলন্ত ট্রেনে আগুন দেওয়া এবং রেললাইন কেটে ফেলার মতো ঘটনায় প্রাণহানীসহ অনেকে আহত হয়েছেন।
Editor & Publisher : Md. Motiur Rahman
Pritam-Zaman Tower, Level 03, Suite No: 401/A, 37/2 Bir Protik Gazi Dastagir Road, Purana Palton, Dhaka-1000
Cell : (+88) 01706 666 716, (+88) 01711 145 898, Phone: +88 02-41051180-81