02/26/2025
নেহাল আহমেদ | Published: 2024-02-15 18:21:06
আমাদের পরবর্তী প্রজন্ম বসন্ত ঋতু বলে একটা ঋতু আছে এটা কি বিশ্বাস করবে? এই যে কবিতা, গল্প, গান ফাগুন নিয়ে সব মিথ্যা হয়ে যাবে না তো কোন এক সময়।
বাংলাদেশকে বলা হয় ষড়ঋতুর দেশ। এখন আর সেই ঋতুবৈচিত্র্য নেই বললেই চলে। ঋতুবৈচিত্র্যের এই বদলে যাওয়ার জন্য দায়ী কে? জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে এখন বৃষ্টি, খরা, বন্যা, শীত, গ্রীষ্মের জন্য ঋতুর অপেক্ষার দরকার হয় না।
বন ধ্বংস করে নষ্ট হচ্ছে পাহাড়ের প্রাকৃতিক ভারসাম্য। প্রাকৃতিক বন ধ্বংসের ফলে বৃক্ষশূন্য হয়ে পড়ছে বান্দরবানের পাহাড়। শুকিয়ে যাচ্ছে ঝিরি-ঝর্ণা, বিলুপ্ত হচ্ছে প্রাকৃতিক জীববৈচিত্র্য।
প্রকৃতিতে রংয়ের ছোঁয়া কোথায়? কোথায় দক্ষিণা দুয়ারে ফাগুনের হাওয়া। কোকিলের কণ্ঠে বসন্তের আগমনী গান এখনো পাইনি। কোথাও কি ফুলে ফুলে ভ্রমর খেলা করছে? গাছে গাছে পলাশ আর শিমুলের সমরাহ তেমন আর চোখে পড়ে না। এখনো পাতা ঝড়া শুরু হয়নি।
সম্ভবত বায়ু দুষণের ব্যাপারে আমরা সবাই উদাসীন। ঢাকা এখন দুষিত শহরের তালিকায় প্রথম স্থানে উঠে এসেছে। বায়ুতে দূষক নির্গমনের ফলে জলবায়ুতে পরিবর্তন হতে পারে হচ্ছে। গ্রিনহাউস গ্যাসকে প্রায়ই জলবায়ু শক্তি হিসাবে উল্লেখ করা হয়। এই দূষণগুলো জলবায়ুকে উষ্ণ করে বৃষ্টিপাত হ্রাস করে।
জীবাশ্ম জ্বালানি পোড়ানো, ব্যাপক বন উজাড়ের ফলে নির্গমন বৃদ্ধি পায় যা বায়ুমণ্ডলের ভিতরে তাপ আটকে রাখে পিএম জলবায়ুকে উষ্ণ করে।
বাংলাদেশে জলবায়ু পরিবর্তন কৃষি, মানবস্বাস্থ্য, জীববৈচিত্র্যের ক্ষতি, সমুদ্রপৃষ্ঠের উচ্চতা সহ অনেক খাতকে প্রভাবিত করে। জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে দেশে ছোট থেকে মাঝারি আকারের বন্যা, ঘূর্ণিঝড়ের সম্মুখীন হয়।
বিশ্বব্যাংকের প্রতিবেদন অনুযায়ী গড় ক্রান্তীয় ঘূর্ণিঝড়ের কারণে বাংলাদেশে বছরে প্রায় ১ বিলিয়ন ডলার ক্ষতি হয়। ২০৫০ সালের মধ্যে জলবায়ু পরিবর্তনশীলতার চরম ঘটনার কারণে কৃষি জিডিপির এক তৃতীয়াংশ হারিয়ে যেতে পারে। সমুদ্রপৃষ্ঠের উচ্চতা বৃদ্ধির ফলে উপকূলীয় এলাকার মানুষ উপকূলীয় বন্যায় ক্ষতিগ্রস্ত হবে।
সব কিছুই পরিবেশ বিপর্যয়ের ফল। বুড়ো শীত এখনো জেকে বসে আছে। ক্যালেন্ডারেই আর শরীরেই বসন্ত। কর্পোরেট নাগরিকরা হয়তো ক্ষেপে যাবেন এমন কথায়। কিন্ত সত্যিটা হচ্ছে প্রকৃতি বদলে যাচ্ছে। প্রকৃতি ছাড়া কথায় কবিতায় বা আনুষ্ঠানিকতায় বসন্ত আসে না। বন উজাড় হচ্ছে। বড় বড় অট্রালিকা সোনা রোদ ঢেকে দিচ্ছে।
বিষাক্ত কার্বন বাতাসে বিষ ছড়াচ্ছে। পাখির বাসস্থান সংকুচিত হচ্ছে। বসন্ত যেটুকু দেখা যাচ্ছে আসলে সেটা হচ্ছে আপনার মেকাপে ঢাকা মুখ অথবা মুখোশ।
বসন্ত আসে প্রকৃতিতে। সবার আগে প্রকৃতিকে রক্ষা করতে হবে। তাহলেই বসন্ত আসবে। পাখি গান গাইবে। বাগানে বাহারী ফুল ফুটবে। ধরায় ফাগুন আসবে।
সেটা না হলে কিছুদিন পর হয়তো বসন্ত শুধু গল্পেই শোভা পাবে। বাস্তবে আর আসবে না।
Editor & Publisher : Md. Motiur Rahman
Pritam-Zaman Tower, Level 03, Suite No: 401/A, 37/2 Bir Protik Gazi Dastagir Road, Purana Palton, Dhaka-1000
Cell : (+88) 01706 666 716, (+88) 01711 145 898, Phone: +88 02-41051180-81