02/23/2025
নিজস্ব প্রতিবেদক | Published: 2024-04-22 03:03:16
সচিবের নির্দেশনা ফাঁকি দিয়ে ঘাপটি মেরে আছে সম্পদের পাহাড় গড়া দূনীতিবাজরা
দেশের বহুল চর্চিত দ্যা ফিন্যান্স টুডে-র ১৫ এপ্রিল ২০২৪ তারিখের এক অনুসন্ধানী প্রতিবেদনে পরিবার পরিকল্পনা অধিদপ্তরের দুর্নীতিবাজ সাঁটমুদ্রাক্ষরিক এম শাহজাহান আলী কর্তৃক সংগঠিত দুর্নীতির তথ্য প্রকাশের ধারাবাহিকতায় আজ দুর্নীতির তথ্য প্রকাশিত হবে প্রশাসন ইউনিটে ঘাপটি মেরে বসে থাকা আরেক ভয়ংকর দুর্নীতিবাজ কর্মচারী সাঁটমুদ্রাক্ষরিক নাজমুল হক মোড়লের।
তিনি একসময় পরিকল্পনা ইউনিটে যে কাজ করতো তারই রিপ্লেসমেন্ট শাহজাহান; যে যাবতীয় দূর্ণীতির রসদ ও চুরির ফাঁদ সমূহ শিখেছেন মোড়ল এর কাছ থেকে।
তাদের আরেক সহচর দুর্নীতির অর্থের পাহাড়ে বসা মোঃ শওকত আলী, সুকৌশলে বদলি হয়ে অর্থ ইউনিটেই রয়ে গেছেন।
গত ২১/১১/২০২৩ খ্রিঃ তারিখে “৩০ বছর একই চেয়ারে” “পরিবার পরিকল্পনা অধিদপ্তরে সচিবের নির্দেশনা বাস্তবায়নে ধীরগতি “ শিরোনামে একটি নিউজ “দ্য ফিন্যান্স টুডে”-র টিম অনুসন্ধানের মাধ্যমে প্রকাশিত হয়।
প্রকাশিত হয় ৩০ বৎসর বা তার কমবেশি একই চেয়ারে আছে ঐ সকল কর্মচারীর নাম। প্রকাশিত সংবাদের পরপরই দুর্নীতিবাজ কর্মচারীরা বাচাঁর জন্য মরিয়া হয়ে ওঠে। রক্ষা পায় সুকৌশলী মোঃ গোলাম সারওয়ার ও মোঃ শওকত আলী।
মোঃ গোলাম সারওয়ারের বদলি সংক্রান্ত ফাইল উপস্থাপনের দায়িত্বে থাকায় ২৮ বছর যাবৎ অধিদপ্তরে কর্মরত থাকা মোঃ শওকত আলী, কোষাধ্যক্ষকে অর্থ ইউনিটে বদলীর প্রস্তাব পেশ করেন এবং সফল হন। বর্তমানে জনাব মোঃ শওকত আলী অর্থ ইউনিটে সুবিধাজনক অবস্থানে দায়িত্ব নিয়ে দুর্নীতির সুযোগ পেয়েছেন।
জনাব মোঃ গোলাম সারওয়ার পরিস্থিতি বেগতিক দেখে নিজেই নিজের বদলীর ফাইল উপস্থাপন করে তার বাড়ীর পাশে নারায়নগঞ্জ জেলায় বদলী হয়ে চলে যান। তদুপরি প্রকাশিত ঐ তালিকার এখনো অনেকেই বহাল তবিয়াতে রয়েছে অধিদপ্তরে।
শওকত ও শাহজাহান আলীর পক্ষে ফাইল নিয়ে নবযোগদানকৃত কর্মকর্তাগণকে বোকা বানানোর চেষ্টায় আছেন নাজমুল হক মোড়ল। তার এমন কাজে সদ্য যোগদানকৃত অফিস সুপার সাইফউদ্দিনও বিরক্তি প্রকাশ করেছেন।
মোড়ল প্রশাসন ইউনিটের উপপরিচালকের পিএ-র দায়িত্বপালন করেন। এই সুযোগে কমিউনিটি মেডিকেল অফিসার (সেকমো) ও ফার্মাসিস্ট পদের নিয়োগ, বদলী, গ্রেডেশন সংক্রান্ত কাজ তার হাতে। মোটা অংকের অর্থ না পেলে তার টেবিল নড়ে না। তিনি পরোক্ষভাবে অর্থ গ্রহণ করেন।
“দ্য ফিন্যান্স টুডে”-র টিম অনুসন্ধানে বেশ কিছুদিন পর্যবেক্ষণ করে দেখা যায়, তিনি যে কক্ষে বসেন সে কক্ষে আড়াল করে বসে ইমরান মিজি নামের একজন চতুর্থ শ্রেণীর কর্মচারী কম্পিউটারে কাজ করেন। তার মাধ্যমে মোড়ল পার্টির কাছ থেকে অর্থ গ্রহণ করেন। স্থায়ীকরণ ও উচ্চতর গ্রেড এর কাজে মিজির মাধ্যমে তিনি ১০-২০ হাজার করে নেন।
মোড়লের পাওয়ারে টিম অনুসন্ধানে সম্মুখে মিজি ফাইলের তথ্য অনুসন্ধানে আসা একজন এমও-এমসিএইচ-কে ধমক দিয়ে শাসন করতে দেখা যায়। লজ্জায় ঐ এমও নিজের তথ্য প্রকাশ করেননি। শুধু জানা যায় তিনি সিলেট বিভাগ থেকে এসেছেন। নীলফামারীর জলঢাকা উপজেলার সুমাইয়া খাতুন নামের একজন ফার্মাসিস্টসহ সিলেটের কানাইঘাট উপজেলার ২ জন সেকমোর স্থায়ীকরণ সংক্রান্ত ফাইলে সে তাঁর সহারীকে দিয়ে ২০ হাজার করে ৬০ হাজার টাকা গ্রহণ করেছেন।
তিনি ১৯৯১ সাল হতে উন্নয়ণ প্রকল্পভূক্ত পরিকল্পনা ইউনিটে কর্মরত থাকলেও তথ্যগোপন করে সচিব মহোদয়কে বিভ্রান্ত করার জন্য মিথ্যা তথ্য প্রদান করেন।
পরিকল্পনা ইউনিটে বিভিন্ন এনজিও-র রেজিস্ট্রেশন নবায়নের নামে কোটি কোটি টাকা লোপাট করে ঢাকা শহরে ৬(ছয়) টি ফ্ল্যাটের মালিক। কেরানীগঞ্জে ২ টি, আগারগাঁওয়ে ১ টি, মোহাম্মদপুর ঢাকা উদ্যানে ১ টি এবং মোহাম্মদপুর চন্দ্রিমায় ২ টি ফ্ল্যাট রয়েছে।
এছাড়াও তাঁর নামে বেনামে রয়েছে কয়েক কোটি টাকার সম্পদ। ২০২৩ সালে পরিবার কল্যাণ পরিদর্শিকা নিয়োগের ৯৫২ টি রোল নং জালিয়াতির নীরব কুশিলবের অন্যতম নামজুল আড়ালেই রয়ে গেছেন। তাঁর এক সহচর জুয়েল ঘোষ, প্রশাসন ইউনিটের পার-১ শাখায় কাজ করেন। ডাক্তারগণের ফাইল জালিয়াতি, নিয়োগ বানিজ্য, পোষ্টিং বানিজ্যসহ তার বিরুদ্ধে অনেক অভিযোগ থাকলেও কোনরুপ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়নি। তিনি নাজমুল হকের গৃহশিক্ষক হিসেবে থাকায় দুজনে মিলে রাজশাহী, রংপুর, বরিশাল ও খুলনা বিভাগের যাবতীয় নিয়োগ, পোস্টিং বানিজ্যের সকল অর্থ তাঁর মাধ্যমে লেনদেন করেন।
সাবেক পরিচালক (প্রশাসন) খান মোঃ রেজাউল করিম বিদেশ যাতায়াতে সবসময় জুয়েল ঘোষকে বিমানবন্দরে প্রটোকল অফিসার হিসেবে ব্যবহার করতেন। এই সুযোগে জুয়েল ঘোষকে দিয়ে লিয়াজো করে রাজশাহী, রংপুর, বরিশাল ও খুলনা বিভাগের শত শত পরিবার কল্যাণ পরিদর্শিকা নিয়োগপ্রার্থীর শত কোটি টাকা লোপাট করেন। তিনি বিমানবন্দরের ভিআইপি লবিতে বসে ভিডিওকলে মানুষকে দেখিয়ে বিশ্বাস যুগিয়ে নিয়োগ বানিজ্যের অর্থ আদায় করতেন। এই বিষয়ে জুয়েল ঘোষের নামে সুনির্দিষ্ট অভিযোগ শৃঙ্খলা শাখায় জমা থাকলেও নাজমুল আড়ালেই রয়েছেন।
ফার্মাসিস্ট পদায়নেও জনপ্রতি ১-২ লক্ষ টাকা নিয়ে তাঁরা দুজন গোপন কক্ষে বসে পছন্দমতো পোস্টিং দেন, এসময় টানা ৩ দিন তাঁদের দুজনকে কেউ দেখতে পায়নি মর্মে দ্য ফিনান্স টুডে’র টিম অনুসন্ধানে বেরিয়ে আসে।
যারা যোগাযোগ করতে পারেনি তাদেরকে দূর্গম এলাকায় পোস্টিং দেন। অনুসন্ধান করলেই এই তথ্য বেরিয়ে আসবে।
রাজশাহী, বগুড়া, পাবনা, নাটোর, নওগা, সিরাজগঞ্জ, রংপুর, দিনাজপুর, ঠাকুরগাঁও জেলাসমূহে ফার্মাসিস্ট, সেকমো, মেডিকেল টেকনোলজিস্ট, এফডব্লিউভি যাবতীয় টেকনিক্যাল পদের ডিমান্ড অনেক বেশি হওয়ায় এসব অঞ্চল হতে উচ্চ হারে অর্থ নিয়োগ বানিজ্য, পোষ্টিং বানিজ্যসহ লোপাট করেন। ধারাবাহিক প্রতিবেদনের পরের পর্বে শিঘ্রই প্রকাশ করা হবে।
Editor & Publisher : Md. Motiur Rahman
Pritam-Zaman Tower, Level 03, Suite No: 401/A, 37/2 Bir Protik Gazi Dastagir Road, Purana Palton, Dhaka-1000
Cell : (+88) 01706 666 716, (+88) 01711 145 898, Phone: +88 02-41051180-81