02/25/2025
বিশেষ প্রতিবেদক: | Published: 2024-05-30 16:42:47
সরকারি চাকরিতে প্রবেশে বয়স না থাকায় জাল-জালিয়াতির মাধ্যমে বয়স কমিয়ে ভোটার আইডি কার্ড বানিয়ে সরকারি চাকরি করার অভিযোগ উঠেছে ঢাকা দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশনের বর্জ্য ব্যবস্থাপনা ও পরিবহন শাখার গাড়ি চালক মুরাদ মিয়ার বিরুদ্ধে।
সিটি কর্পোরেশনের একাধিক কর্মচারীর অভিযোগ ও নির্বাচন কমিশন কার্যালয়ে খোঁজ নিয়ে জানা গেছে,কিশোরগঞ্জ সদর উপজেলার-গ্রাম/রাস্তা:সগড়া বিশ্বরোড,কিশোরগঞ্জ এলাকার ফজলুর রহমান এর দ্বিতীয় পুত্র মুরাদ প্রথম ভোটার আইডি কার্ডে (জাতীয় পরিচয়পত্র নং- ২৩৬৮১৭৫৮৬১) জন্ম তারিখ :২৬/৬/১৯৮৯ সেখানে ঠিকানা ব্যবহার করা হয়েছে বাসা/হোল্ডিং ১৩/৫ বি' কে এম দাস লেন ওয়ারী-১২০৩ সুত্রাপুর সিটি কর্পোরেশনে তথ্য মতে আনুমানিক ২০০৭ সালে দৈনিক ১০৫ টাকা মজুরি দরে অস্থায়ী ভিত্তিতে নিয়োগ পান মুরাদ মিয়া।
দীর্ঘ সময় চাকরি করার পর ২০২৩ সালে ঢাকা দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশনের রাজস্ব খাতে নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি প্রকাশিত হয়।
যেখানে প্রথম শর্তই ছিল বয়স ১৮ থেকে ৩০ বছর ও ৮ম শ্রেনীর পাশ হতে হবে।
যেহেতু সেই নিয়োগ প্রকাশের সময় মুরাদ মিয়ার বয়স ছিল আনুমানিক ৩৬ এর কাছাকাছি, যা সেই নিয়োগের কোনভাবেই আবেদনের যোগ্য না থাকায় সনদ জালিয়াতির আশ্রয় নেয়।
২য় ভোটার আইডি কার্ডে (জাতীয় পরিচয়পত্র ২৩৬৮১৭৫৮৬১ নাম্বার ঠিক রেখে জন্ম তারিখ পরিবর্তন করেন, সেখানে দেখা যায় জন্ম তারিখ:-২৬/০৩/১৯৯৪ ৩য় ভোটার আইডি কার্ডে আগের মত এন আই ডি নাম্বার ঠিক রেখে পুনরায় জন্ম সাল পরিবর্তন করানো হয়।সেখানেও দেখানো হয় জন্ম তারিখ:-২৬/০৬/১৯৯৬ এই জালিয়াতির মাধ্যমেই ৩৭ বছরের মুরাদ ২৯ বছরে উন্নতি হয়।
মুরাদ মিয়া ১৯৮৯ সালে জন্ম হলে ২০২৩ সালে সরকারি চাকরিতে প্রবেশে বয়সসীমা না থাকায় প্রথম ভোটার আইডির কথা গোপন রেখে বয়স কমিয়ে পুনরায় জন্ম তারিখ দেখিয়ে ভোটার আইডি বানান। আর সেই আইডি দিয়ে ঢাকা দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশনে হিসেবে চাকরি নেন ২০২৪ সালে।
সবচেয়ে অবাক করার বিষয় হলো, তিনি যে শিক্ষা সনদ দাখিল করেছেন সেখানে উল্লেখ করা হয়েছে যে জিয়াউদ্দিন মাধ্যমিক বিদ্যালয় থেকে অষ্টম শ্রেণী পাস করেন এবং সেখান থেকে একটি সার্টিফিকেট নেন, প্রতিবেদনের স্বার্থে সরেজমিনে গিয়ে জিয়া উদ্দিন মাধ্যমিক স্কুলের প্রধান শিক্ষক জনাব,মজিবুর রহমান এর কাছে সনদের ব্যাপারে জানতে চাওয়া হলে তিনি সরাসরি বলেন এটি তার প্রতিষ্ঠান থেকে দেওয়া হয় নাই, এবং আমার যে স্বাক্ষর দেখানো হয়েছে সেটি জাল করা।
প্রধান শিক্ষক আরো বলেন এই নামে এবং পিতার নাম ফজলুর রহমান,মাতা: আম্বিয়া বেগম, অত্র বিদ্যালয়ের কোন দিন শিক্ষার্থী ও ছিলো না। তিনি ১৯৯৫ সাল থেকে অত্র বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছেন। অতএব অত্র সদন ভূয়া ও জাল।
দ্বৈত ভোটার আইডি কার্ড বহন ও ব্যবহার করা এবং সরকারি চাকরিতে যোগদানের বিষয়ে নির্বাচন ভবনের এক কর্মকর্তা বলেন,বয়স কমিয়ে আইডি বানালে পরবর্তী আইডি কার্ড বাতিল করা হবে।
এ বিষয়ে ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য ইতোমধ্যেই ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের সাথে, যোগাযোগ করা হলে তারা নিজেদের অবস্থান পরিস্কার করে বলেন তথ্য গোপন ও দুর্নীতির আশ্রয় নিয়ে সরকারি চাকরিতে প্রবেশের বিষয়ে কোনো সুযোগ নেই।
মুরাদ মিয়া মুলত: দক্ষিন সিটি কর্পোরেশনের একজন পরিবহন শাখার গাড়ী চালক ।যদিও সে গাড়ী অকেজো অজুহাত দেখিয়ে সে মূলত সিটি কর্পোরেশনের বিভিন্ন ধরনের তদবির,বানিজ্য নিয়ে ব্যস্ত থাকে। এ ছাড়াও ঢাকা দক্ষিন সিটি কর্পোরেশনের দৈনিক হাজিরা ভিত্তিক মাস্টাররুল এর কর্মী হিসেবে মুরাদ মিয়া দীর্ঘদিন কাজ করেছে। তিনি চাকুরীর বাহিরে ও তদ্বির বানিজ্য করে বিভিন্ন মানুষের নিকট থেকে বহু টাকা হাতিয়েছেন।
ঢাকা দক্ষিন সিটি কর্পোরেশনের মেয়র ব্যরিষ্টার ফজলে নুর তাপস তার কর্পোরেশনে দুর্নীতির বিরুদ্ধে জিরো টলারেন্স নীতি গ্রহন করলেও তারই একজন উর্ধ্বতন কর্মকর্তার গাড়ী চালক একজন দুর্নীতিবাজ ড্রাইভার,যিনি ভূয়া,জন্মসনদ ও জাল সার্টিফিকেট দিয়ে চাকুরী করেছেন একইে বলে “বাতির নীচে অন্ধকার”।
সিটি কর্পোরেশনের একাধিক নাম প্রকাশ্যে অনিচ্ছুক কর্মকর্তা বলেন একমাত্র মেয়র মহোদয়ের হস্তক্ষেপ ছাড়া তার কিছুই হবে না। কারন মুরাদ নিজেকে অত্যন্ত ক্ষমতাধর ব্যক্তি মনে করে। তার অনুসারী রয়েছে শত শত ড্রাইভার।
Editor & Publisher : Md. Motiur Rahman
Pritam-Zaman Tower, Level 03, Suite No: 401/A, 37/2 Bir Protik Gazi Dastagir Road, Purana Palton, Dhaka-1000
Cell : (+88) 01706 666 716, (+88) 01711 145 898, Phone: +88 02-41051180-81