02/25/2025
নেহাল আহমেদ | Published: 2024-06-05 00:31:30
সংস্কৃতি পরিবর্তনশীল। পরিবর্তন আসবেই।আমাদের বেছে নিতে হবে কোনটা ভালো আর কোনটা মন্দ। এখন প্রয়োজনীয় হওয়ার চেয়ে জনপ্রিয় হতে চায় সবাই। এখন আর্টিস্ট হওয়ার চেয়ে টিকটকার হতে চায় অনেকেই। ব্লগার হয়ে আয় করতে চায়।
রাষ্ট্রকে বেছে নিতে হবে কৌশল। টেকসই অর্থনৈতিক উন্নয়ন ও প্রান্তিক মানুষের সংস্কৃতির বিকাশে এই খাতে ন্যূনতম এক শতাংশ বরাদ্দের দরকার। সাথে দরকার সঠিক পরিকল্পনা এবং জবাবদিহিতা।
স্বাধীনতার ৫২ বছর পরও সংস্কৃতি খাতে বিরাজ করছে অবহেলা ও হতাশা। অথচ বাংলাদেশের অভ্যুদয় হয়েছিল প্রগতিশীল ও সাংস্কৃতিক রাষ্ট্র হিসেবে। যে অর্থ বরাদ্দ দেওয়া হয়, তা খরচ করারও একটা সক্ষমতা থাকে। বরাদ্দের অর্থ যদি ঠিকভাবে ব্যয় করা না যায়, তাহলে বাজেট বাড়িয়ে লাভ হবে না। এক্ষেত্রে পরিকল্পনাটা জরুরি। আমরা যে সমাজ চেয়েছিলাম তা আজো গড়ে ওঠেনি।
আমাদের যে সাংস্কৃতিক বলয়ের মধ্যে থাকার প্রয়োজন ছিলো তা আজো পাইনি। সারা পৃথিবীতে নব্বই ভাগ মানুষের যে সম্পদ তার চেয়ে বেশী সম্পদ দশ ভাগ ধনীর হাতে। ধনীরা তাদের সুবিধা ঠিকই নিশ্চিত করতে পেরেছে।গরীররা বুঝতে পারেনি তাদেরকে বঞ্চিত করে রাখা হয়েছে। সম্পদের সুষম বন্টন তারা বোঝে না। যে মধ্যবিত্ত গড়ে উঠেছে তাকে কার্যকর সমাধানে না যেয়ে নিক্রিয় মধ্যবিত্ত বলা যায়।সংস্কৃতির চর্চায় কোন আগ্রহ নেই। শুধু নিজের বৈশিষ্ট্য ধরে রাখার চর্চা আর লোক দেখানো চরিত্রের। মানসিকভাবে দরিদ্র এই মধ্যবিত্ত পঞ্চাশ হাজার টাকার মোবাইল কিনবে কিন্তু বই কিনবে না। বাগান করবে না।
বিশেষত দেশভাগের পরে ভাষা আন্দোলন ও বিবিধ সংগ্রামের পথ ধরেই মুক্তিযুদ্ধের রক্তক্ষয়ী আত্মত্যাগ ও সংগ্রামে আসে আমাদের বিজয়। প্রতিষ্ঠিত হয় সোনার বাংলাদেশ। সে সময় শক্তি হিসেবে প্রেরণা দেয় সাংস্কৃতিক মানুষজন।
সংস্কৃতির ক্রমবর্ধমান বিকাশ ও উৎকর্ষ সাধনে ব্যর্থ হলে দেশের অর্থনৈতিক উন্নয়ন যতই হোক না কেন, তা একসময় বালির বাঁধের মত ভেঙে পড়বে। সুতরাং সবার আগে এই খাতকে গুরুত্ব দিয়ে বিবেচনায় নিতে হবে।
“বর্তমানে এই খাতে যে বরাদ্দ দেওয়া হয় তা উন্নয়ন প্রকল্পের ব্যয়, সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারীদের বেতন ভাতা পরিশোধ আর শিল্পকলা একাডেমি কেন্দ্রিক শহুরে মানুষের চিত্ত বিনোদনের কিছু কর্মসূচি বাস্তবায়নে শেষ হয়ে যায়। গ্রামীণ জনপদের মানুষ বা শ্রমজীবী মানুষের সংস্কৃতি বিকাশে কণামাত্র অর্থও অবশিষ্ট থাকে না।”
প্রতি বছর আমাদের সংস্কৃতি মন্ত্রণালয় কিছু সাংস্কৃতিক সংগঠনকে ৫০/৬০ হাজার টাকা করে অনুদান দেন।কখনো কখনো বলা হয়ে থাকে দুস্থ শিল্পিদের সাহায্য। এটা এমনভাবে দেওয়া হয় যেন মনে হবে তারা দয়া করছেন। এটা অনুদান, দয়া নয়; এটা সংস্কৃতিকর্মীদের অধিকার।”
সংস্কৃতি মন্ত্রণালয় সংস্কৃতিকর্মিদের হাতে নেই।যাদের হাতে আছে তারা সংস্কৃতির উন্নয়নের কোনো কাজ করে না। কেন আমরা বরাদ্দ চাইছি, সে বিষয়েও স্পষ্ট হতে হবে। এক শতাংশ বরাদ্দ দিলেই সেটা যথাযথ ব্যয় করার সক্ষমতা আছে কিনা, তাও দেখতে হবে।”
প্রতিটি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে সংস্কৃতির জন্য আলাদা বাজেট জরুরী। শিক্ষার সঙ্গে সংস্কৃতির একটা সম্পর্ক আছে জানিয়ে স্কুল-কলেজে সংস্কৃতির জন্য আলাদা বাজেট দেওয়া দরকার। পুজিবাদী রাষ্ট্র ব্যবস্থায় দরকার সঠিক পরিকল্পনা, চিন্তায় অগ্রসর না হলে অচিরেই ধসে পড়বে সংস্কৃতির কাঠামো।
লেখক একজন কবি ও সাংবাদিক
Editor & Publisher : Md. Motiur Rahman
Pritam-Zaman Tower, Level 03, Suite No: 401/A, 37/2 Bir Protik Gazi Dastagir Road, Purana Palton, Dhaka-1000
Cell : (+88) 01706 666 716, (+88) 01711 145 898, Phone: +88 02-41051180-81