02/25/2025
অনলাইন ডেস্ক: | Published: 2024-07-02 11:17:51
কয়েক বছর নানা টানাপোড়েনের পর জাতীয় পরিচয়পত্র (এনআইডি) কার্যক্রম নির্বাচন কমিশন থেকে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের অধীনে সুরক্ষা সেবা বিভাগে নিতে আইন করে সরকার৷ ২০২৩ সালে এ আইন হয়। এখন পুরো বিভাগটি স্থানান্তরে প্রস্তুতি নেওয়া হচ্ছে।
নির্বাচন কমিশনের (ইসি) এনআইডি অনবিভাগের কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, সম্প্রতি সুরক্ষা সেবা বিভাগ থেকে জনবলের বিস্তারিত তথ্য চাওয়া হয়েছে। কমিশন সেভাবে তথ্য দেওয়ার প্রস্তুতিও নিচ্ছে।
ইসি সচিব শফিউজ আজিমকে লেখা সুরক্ষা সেবা বিভাগের উপ-সচিব আবেদা আফসারির এ সংক্রান্ত পত্রে বলা হয়েছে, জাতীয় পরিচয় নিবন্ধন আইন-২০২৩ অনুসারে জাতীয় পরিচয় নিবন্ধনের কার্যক্রম সুরক্ষা সেবা বিভাগের অনুকূলে দেওয়া হয়েছে। ইতোমধ্যে এ বিভাগের অ্যালোকেশন অব বিজনেস অ্যামঙ দ্য ডিফারেন্ট মিনিস্ট্রিজ অ্যান্ড ডিভিশনসও সংশোধিত হয়েছে।
বাংলাদেশ নির্বাচন কমিশন সচিবালয়ের ওয়েবসাইটে প্রদত্ত তথ্য মোতাবেক জাতীয় পরিচয় নিবন্ধন অনুবিভাগের অনুমোদিত জনবলের সংখ্যা ৭১ (একাত্তর)। এক্ষেত্রে জাতীয় পরিচয় নিবন্ধনের কার্যক্রম সুষ্ঠুভাবে পরিচালনার জন্য নির্বাচন কমিশন সচিবালয়ের জাতীয় পরিচয় নিবন্ধন অনুবিভাগের হালনাগাদ তথ্য জানা আবশ্যক।
এ অবস্থায়, বাংলাদেশ নির্বাচন কমিশন সচিবালয়ের জাতীয় পরিচয় নিবন্ধন অনুবিভাগের সর্বশেষ অনুমোদিত জনবলের তথ্য সাংগঠনিক কাঠামো নির্দিষ্ট ছক আকারে প্রদানের জন্য বলেছে মন্ত্রণালয়। এক্ষেত্রে কোন পদে কতজন লোকবল আছে, তাদের মধ্যে কতজন নিজস্ব, কতজন প্রেষণে নিয়োজিত ও কতজন আউটসোর্সিংয়ের তার বিস্তারিত তথ্য দিতে বলা হয়েছে।
২০২১ সালের ১৭ মে প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয় থেকে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগে এনআইডি সরিয়ে নেওয়ার জন্য মতামত দেওয়া হলে ২৪ মে ইসিকে এনআইডি ছেড়ে দেওয়ার কার্যক্রম হাতে নিতে বলে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ। এরপর নির্বাচন কমিশন যুক্তি তুলে ধরে এনআইডি নিজেদের কাছে রাখার পক্ষে মতামত তুলে ধরে চিঠি দেয়। পরবর্তীতে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ গত ২০ জুন ইসিকে একটি চিঠি দেয়। এতে বলা হয়, সরকার এনআইডি কার্যক্রম আইনানুগভাবে নির্বাচন কমিশন থেকে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সুরক্ষা সেবা বিভাগে হস্তান্তরের সিদ্ধান্ত গ্রহণ করেছে। তাই সিদ্ধান্তটি বাস্তবায়নের জন্য নির্দেশনা দেয় মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ।
সেই নির্দেশনার পরিপ্রেক্ষিতে একই বছর ২৩ জুন তৎকালীন প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) কেএম নূরুল হুদা গণমাধ্যমকে বলেন, এনআইডি অনুবিভাগ অনেক বড় প্রতিষ্ঠান। কীভাবে নেবে-না নেবে, এ বিষয়ে অবশ্যই আলোচনা হবে। এটা তো টেবিল চেয়ার না, যে উঠিয়ে নিয়ে গেলাম। এনআইডি সেবা চলে গেলে আমাদের কার্যক্রমে অসুবিধা হবে।
তিনি বলেন, তারা নিতে চায় আমরা দেব না, এরকমও বলা যায় না। সেই রকম অবস্থানে আমরা নেই। আমাদের বসতে হবে তাদের সঙ্গে, এটা হচ্ছে গুরুত্বপূর্ণ কথা। সরকার কী যুক্তিতে চায়, তাদের অবশ্যই কিছু যুক্তি আছে। আমাদেরও কিছু যুক্তি আছে, এগুলো নিয়ে ডায়লগ হবে।
সিইসির সেই বক্তব্যে পর ডায়লগের কোনো উদ্যোগ কোনো পক্ষ থেকেই নেওয়ার খবর পাওয়া যায়নি। উপরন্তু কার্যক্রম ছেড়ে দেওয়ার অগ্রগতি জরুরি ভিত্তিতে জানানোর জন্য ১১ আগস্ট নতুন নির্দেশনা দেয় মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ।
এরপর সরকারকে ইসির অধীনে এনআইডি রাখার গুরুত্ব তুলে ধরে চিঠিও দেয়। সুশীল সমাজের প্রতিনিধি, সাবেক নির্বাচন কমিশনাররা ইসির অধীনে এনআইডি কার্যক্রম রাখার যুক্তি তুলে ধরেন টক শো, কলামে, আলোচনা সভায়। তবে সরকার তার সিদ্ধান্তে অটল থেকে গত বছর আইন সংশোধন করে সুরক্ষা সেবার অধীরে নেয় কার্যক্রমটি। আইনে বলা হয়েছে, এনআইডি শাখা সুরক্ষা সেবার অধীনে গেলেও যতদিন পর্যন্ত সরকার প্রজ্ঞাপন জারি না করবে ততদিন ইসির অধীনেই থাকবে।
ইসি কর্মকর্তারা বলছেন, সুরক্ষা সেবা বিভাগ বর্তমানে সব গুছিয়ে নিচ্ছে। প্রস্তুতি সম্পন্ন হলে হয়তো প্রজ্ঞাপন জারি করবে।
২০০৮ সালে নবম সংসদ নির্বাচনের আগে ড. এটিএম শামসুল হুদার নেতৃত্বাধীন কমিশন দেশের প্রথম ছবিযুক্ত ভোটার তালিকা প্রস্তুত করে। পরবর্তীতে ওই তথ্যভাণ্ডারের ভিত্তিতে নাগরিকদের জাতীয় পরিচয়পত্র সরবরাহের সিদ্ধান্ত ইসি। এনআইডি এখন রাষ্ট্রের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ ও স্বয়ংসম্পূর্ণ তথ্যভাণ্ডার, এখন থেকে তথ্য নিয়ে দেড় শতাধিক প্রতিষ্ঠান নাগরিকের পরিচয় যাচাই করে থাকে।
বর্তমানে দশটি অঞ্চল, ৬৪ জেলা, ৫১০ থানা, উপজেলা অফিসের মাধ্যমে কার্যক্রম পরিচালনা করে ইসির এনআইডি অনুবিভাগ। এতে চার হাজারের মতো লোকবল কাজ করছে।
Editor & Publisher : Md. Motiur Rahman
Pritam-Zaman Tower, Level 03, Suite No: 401/A, 37/2 Bir Protik Gazi Dastagir Road, Purana Palton, Dhaka-1000
Cell : (+88) 01706 666 716, (+88) 01711 145 898, Phone: +88 02-41051180-81