02/24/2025
কূটনৈতিক প্রতিবেদক | Published: 2024-08-24 02:31:37
আগাম সতর্কতা ছাড়াই গোমতী নদীর ওপর নির্মিত ডম্বুর গেট খুলে দিয়েছে ভারত, এ কারণে বাংলাদেশে ভয়াবহ রূপ ধারণ করেছে বন্যা- এমন অভিযোগ অনেকের। বিশেষ করে তরুণ ছাত্রসমাজকে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে এ নিয়ে বেশ সরব দেখা যাচ্ছে।
ডম্বুর গেট খুলে দেওয়ার প্রতিবাদে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে বিক্ষোভ মিছিলও হয়েছে। বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের কয়েক নেতাও ত্রিপুরায় গোমতী নদীর উজানে ডম্বুর গেট খুলে দেওয়াকে বন্যার কারণ হিসেবে বর্ণনা করেছেন।
এই ঘটনায় এর আগে ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, ডম্বুর গেট ভারত খুলে দেয়নি বরং তা একা একাই খুলে গেছে। আর গেট খোলার কারণে বন্যা হয়নি, অতিবৃষ্টিই বন্যার মূল কারণ।
দেশটির মন্ত্রণালয়ের এ বিবৃতি নিয়ে ফেসবুকসহ নানা মাধ্যমে ট্রল করেন বাংলাদেশি নেটিজেনরা। এবার এর ব্যাখ্যা দিয়েছেন ত্রিপুরার বিদ্যুৎমন্ত্রী রতন লাল নাথ।
ত্রিপুরার বিদ্যুৎমন্ত্রী রতন লাল নাথ
তিনি বলেন, তারা বলছেন যে, আমরা ডম্বুরের গেট খুলে দিয়েছি, সেটা যে সঠিক তথ্য নয়, তা দেখার জন্য তারা যদি সীমান্ত পেরিয়ে ত্রিপুরায় আসেন, আমি নিজে গাড়ি করে তাদের নিয়ে যাব ডম্বুর দেখাতে।
তিনি বলেন, তারা নিজেরা দেখতে পারেন যে, আমরা নিজের থেকে গেট খুলে দিতে পারি কি না! সেটা সম্ভব কি না!
ত্রিপুরার বিদ্যুৎমন্ত্রী রতন লাল নাথ বলেছেন, যে প্রচারটা করা হচ্ছে ডম্বুর গেট খুলে দেওয়া নিয়ে, সেটা অপপ্রচার ছাড়া কিছু না। গোমতী জলবিদ্যুৎ কেন্দ্রের কোনো গেট খুলে দেওয়া হয়নি।
তিনি আরও বলেন, এই বিদ্যুৎ কেন্দ্রের জলাধারটির সর্বোচ্চ ধারণ ক্ষমতা ৯৪ মিটার। জলস্তর এর বেশি উঠলেই একা একাই জল গেট দিয়ে বেরিয়ে যাবে। জলস্তর আবার নিচে নেমে গেলে নিজের থেকেই গেট বন্ধ হয়ে যাবে।
তিনি বলেন, জলস্তর সর্বোচ্চ ধারণ ক্ষমতার বেশি হয়ে যেতেই জলাধারের দুটি গেট দিয়ে জল বেরোচ্ছে। এর মধ্যে একটি গেট দিয়ে ৫০% হারে জল বেরোচ্ছে। সংশ্লিষ্ট এলাকার মানুষকে আগে থেকেই মাইকিং করে সতর্ক থাকার অনুরোধও জানানো হয়েছিল।
বৃহস্পতিবারই তথ্য উপদেষ্টা নাহিদ ইসলাম বলেন, আমরা দেখতে পাচ্ছি-উজানের পানি বাংলাদেশে ধেয়ে এসে এ বন্যা পরিস্থিতি তৈরি করছে। কোনো ধরনের আগাম সতর্কতা ও প্রস্তুতি নেওয়ার সুযোগ না দিয়ে এই যে বাঁধ খুলে দেওয়া হয়েছে; এটির মাধ্যমে ভারত অমানবিকতার পরিচয় দিয়েছে এবং বাংলাদেশের সঙ্গে অসহযোগিতা করছে।
তার প্রতিক্রিয়ায় ত্রিপুরার মন্ত্রী রতন লাল বলেছেন, আমরা যদি অমানবিক হতাম, তাহলে অনেক আগেই সেটা হতে পারতাম- বিদ্যুৎ দেওয়া বন্ধ করে দিয়ে। কারণ বিদ্যুৎ বাবদ প্রায় ১৮০ কোটি ভারতীয় রূপি বাংলাদেশের কাছে আমাদের বকেয়া আছে।
তিনি বলেন, তাও নিয়মিত ৫০-৬০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ আমরা সরবরাহ করে যাচ্ছি। অথচ আমাদের নিজেদের রাজ্যের বহু জায়গায় বিদ্যুৎ নেই এখনও।
তিনি আরও বলেন, ১৯৯৩ সালের ২১শে আগস্ট ত্রিপুরার সাব্রুমে একদিনে ২৪৭ মিলিমিটার বৃষ্টির রেকর্ড ছিল। আর এ বছর ২০শে আগস্ট একদিনে বৃষ্টি হয়েছে ৩৭৫.৮ মিলিমিটার। ঠিক ৩১ বছর পরে একদিনে এত বেশি বৃষ্টি হয়েছে। পুরো মাসের হিসাব যদি দেখি, আগস্ট মাসের ২১ দিনে স্বাভাবিক বৃষ্টি হওয়ার কথা ছিল ২১৪ মিলিমিটার। সেখানে বৃষ্টিপাত হয়েছে ৫৩৮.৭ মিলিমিটার। অর্থাৎ ১৫১% বেশি। এত বেশি বৃষ্টিপাত হওয়ায় স্বাভাবিকভাবেই এত বড় বন্যা দেখা গেছে।
Editor & Publisher : Md. Motiur Rahman
Pritam-Zaman Tower, Level 03, Suite No: 401/A, 37/2 Bir Protik Gazi Dastagir Road, Purana Palton, Dhaka-1000
Cell : (+88) 01706 666 716, (+88) 01711 145 898, Phone: +88 02-41051180-81