02/24/2025
নিজস্ব প্রতিবেদক | Published: 2024-09-19 12:24:33
জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে (জাবি) গত ১৫ জুলাই রাতে উপাচার্যের বাসভবনে আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের ওপর হামলার ঘটনায় জড়িত থাকার অভিযোগে শাখা ছাত্রলীগের সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক ও ৩৯ ব্যাচের শিক্ষার্থী শামীম মোল্লাকে গণপিটুনি দেয় শিক্ষার্থীরা। গণপিটুনির পর রাতে সাভারের গণস্বাস্থ্য হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান তিনি।
বুধবার দিবাগত রাত ১২টার দিকে মৃত্যুর এই ঘটনা ঘটেছে। সাভারের আশুলিয়া থানার পুলিশ পরিদর্শক (তদন্ত) কামাল হোসেন এই তথ্য নিশ্চিত করেন।
তিনি বলেন, গণস্বাস্থ্য হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় শামীম কিছুক্ষণ আগে মারা গেছেন। এই বিষয়ে বিস্তারিত পরে জানানো হবে।
তবে মৃত্যুর বিষয়ে কর্তব্যরত চিকিৎসক ডা. সেলিমুজ্জামান সেলিম বলেন, আমাদের এখানে যখন আনা হয়, তখন আমরা পরীক্ষা করে দেখি যে তিনি মৃত, অর্থাৎ তাকে আমাদের এখানে মৃত অবস্থায় আনা হয়। তার শরীরে সে রকম গুরুতর কোনো ক্ষত পাওয়া যায়নি। আর কী কারণে মারা গেছেন, এটা জানার জন্য ময়নাতদন্ত করতে হবে।
বিশ্ববিদ্যালয়ের নিরাপত্তা কর্মকর্তাদের সূত্রে জানা যায়, মঙ্গলবার বিকেলে বিশ্ববিদ্যালয়ের জয় বাংলা ফটকসংলগ্ন একটি দোকানে অবস্থান করছিলেন শামীম মোল্লা। খবর পেয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের একদল শিক্ষার্থী সেখানে গিয়ে তাকে আটক করে গণপিটুনি দেয়। খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টরিয়াল টিম উপস্থিত হয়।
একপর্যায়ে নিরাপত্তাকর্মীদের সহায়তায় তাকে বিশ্ববিদ্যালয়ের নিরাপত্তা শাখায় নিয়ে আসা হয়। সেখানেও উত্তেজিত শিক্ষার্থীরা তাকে আরেক দফায় গণপিটুনি দেয়৷ একপর্যায়ে রাত পৌনে ৯টার দিকে উপাচার্য অধ্যাপক মোহাম্মদ কামরুল আহসান উপস্থিত হন। পরে আশুলিয়া থানা পুলিশের একটি দল এসে শামীম মোল্লাকে আটক দেখিয়ে থানায় নিয়ে যায়।
এর আগে, পুলিশ ও প্রক্টরিয়াল টিম শামীমকে ১৫ জুলাই রাতে উপাচার্যের বাসভবনে হামলার ঘটনার বিষয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করলে তিনি হামলার ঘটনায় নেতৃত্ব দেওয়ার কথা স্বীকার করেন। হামলাকারীদের সঙ্গে জাবির ভূগোল ও পরিবেশ বিভাগের শিক্ষক মেহেদী ইকবালও অংশ নেয় বলে জানায় শামীম।
শিক্ষার্থীদের অভিযোগ, শাখা ছাত্রলীগের জুয়েল-চঞ্চল কমিটির সাংগঠনিক সম্পাদক থাকাকালে শামীম বিশ্ববিদ্যালয় ও এর পার্শ্ববর্তী এলাকায় মাদক সিন্ডিকেট নিয়ন্ত্রণ, জমি দখল, চাঁদাবাজিসহ বিভিন্ন অপরাধমূলক কর্মকাণ্ডে জড়িত ছিলেন। এছাড়া তার বিরুদ্ধে একাধিক মামলাও রয়েছে। গত ১৫ জুলাই রাতে কোটা আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীদের ওপর হামলার ঘটনায় সামনের সারি থেকে অস্ত্র হাতে নেতৃত্ব দিয়েছেন শামীম মোল্লা।
এই বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর অধ্যাপক এ কে এম রাশিদুল আলম বলেন, ১৫ জুলাই উপাচার্যের বাসভবনে শিক্ষার্থীদের ওপর হামলার অভিযোগে সাবেক এক ছাত্রলীগ নেতাকে শিক্ষার্থীরা আটক করে প্রক্টরিয়াল বডির হাতে তুলে দেয়। আমরা আশুলিয়া থানায় অবহিত করলে পুলিশের একটি টিম আসে। তার নামে আগেও বেশ কয়েকটি মামলা আছে। তাকে পুলিশের হাতে সোপর্দ করা হয়েছে। পরে জেনেছি সে মারা গেছে।
আশুলিয়া থানার পরিদর্শক (ওসি) মো. আবু বকর সিদ্দিক বলেন, রাতে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন থেকে আমাদের একটি টিম পাঠাতে বলা হয়। রাত পৌনে ৯ টার দিকে মারধরের শিকার এক যুবককে উদ্ধার করে গণস্বাস্থ্য কেন্দ্র হাসপাতালে ভর্তি করার হয়। পরে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তার মৃত্যু হয়েছে বলে জেনেছি। প্রাথমিকভাবে মারধরের কারণেই তার মৃত্যু হয়েছে বলে জানা গেছে। ময়নাতদন্তের রিপোর্ট পেলে মৃত্যুর কারণ নিশ্চিত নিশ্চিত হওয়া যাবে।
Editor & Publisher : Md. Motiur Rahman
Pritam-Zaman Tower, Level 03, Suite No: 401/A, 37/2 Bir Protik Gazi Dastagir Road, Purana Palton, Dhaka-1000
Cell : (+88) 01706 666 716, (+88) 01711 145 898, Phone: +88 02-41051180-81