02/24/2025
সুরাইয়া মাহমুদা মিষ্টি | Published: 2024-10-02 13:18:05
জাতীয় ক্যান্সার গবেষণা ইসস্টিটিউট ও হাসপাতালের ক্যান্সার রোগীদের বেহাল দশা। হাসপাতালটিতে রোগীদের নার্সিং ও যত্নের অভাবে ক্যান্সার রোগীরা সুচিকিৎসা থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন। শুধু রোগীদের গলা কেঁটে হাজার হাজার টাকা নেওয়া হচ্ছে বলে রোগীর স্বজনদের অভিযোগ রয়েছে। চিকিৎসা নিতে আসা রোগীদের স্বজনেরা গোয়েন্দা ডায়রি’র প্রতিনিধিকে জানান, ডাক্তাররা প্রেসক্রিপশন দিয়ে ইঙ্গিতে তাদের নির্ধারিত ফার্মেসী থেকে ওষুধ কেনার জন্য বলে থাকে। ওইসব ফার্মেসী গুলো থেকে ডাক্তাররা কমিশন বানিজ্য করছেন বলেও অভিযোগ করেন রোগীর স্বজনরা। ক্যান্সার হাসাপাতালটি অনিয়ম ও দুর্নীতির আখড়া বলে জানিয়েছেন ভুক্তভোগীরা। একেক জন ক্যান্সার রোগী লাখ লাখ টাকা খরচ করেও তারা কাঙ্খিত সেবা পাচ্ছেন না। শিকার হচ্ছেন ভোগান্তি ও হেনস্থার । জাতীয় ক্যান্সার গবেষণা ইসস্টিটিউট ও হাসপাতালে সরেজমিনে গিয়ে রোগী ও স্বজনদের সাথে কথা বলে জানা যায়, তাদের দুর্দশা এবং প্রত্যক্ষ অবস্থা। প্রতিটি ওয়ার্ডে ডাক্তার, নাসর্, ওয়ার্ড বয়রা সবসময় দুর্ব্যবহার এবং কটাক্ষ করে থাকেন। এমন দৃশ্য চোখে পড়লেও কে শোনে কার কথা। বিশেষ করে নার্স এবং ওর্য়াড বয়দের আচরণ এতোটাই হিংস্র এবং বদ মেজাজী যা কেউ দেখার নেই। রোগীদের স্বজনরা একটু প্রতিবাদ করলে তাদের কে গলা চিপে ধরা হয়। বাধ্য হয়ে তাদের নির্মম আচরণ সহ্য করছেন ক্যান্সার রোগী ও স্বজনরা। ক্যান্সার হাসপাতালটিতে আরও একটি সমস্যা যখন তখন রোগীদের ভর্তি করা হচ্ছে না। কোনভাবে ভর্তি করা হলেও সিট বরাদ্দ দেয়া হয়না। বলা হয় সিট খালি নেই । তবে ওর্য়াড মাস্টার বা ওর্য়াড বয়দের সাথে যোগাযোগ রক্ষা করলে তারা টাকার বিনিময়ে ওর্য়াডের সিটের এর ব্যবস্থা করে দেন। এ বাবদে ৫ হাজার-১০ হাজার টাকা র্পযন্ত তারা নিয়ে থাকেন বলে গুরুতর অভিযোগ ও জানা গেছে। হাসপাতালের বারান্দা গুলোতে ক্যান্সার রোগীরা অসহায়াত্বের মত পড়ে আছেন। এ ব্যাপারে একজন নার্স এর সাথে জানতে চাওয়া হলে তিনি ক্ষিপ্ত হয়ে ওঠেন। বলেন হাসপাতাল ওয়ার্ডে সিট না থাকলে আমরা কি বানিয়ে দিব? এসময় ওই নার্স মিডিয়ার পরিচয় জানতে পেরে কিছুটা নমনীয় হন।
এদিকে একজন মুমূর্ষ রোগীর স্বজন প্রেসক্রিপশন নিয়ে ডাক্তারের কাছে যেতে চাইলে হাসপাতালের ডিউটিরত কর্মচারী লিমন (লিফট ম্যান) তাকে বাধাঁ প্রদান করে। এসময় দুজনের মধ্যে বাকবিতন্ডা শুরু হয়। তর্কাতর্কির এক পর্যায়ে রোগীর স্বজনকে গলা চিপে ধরে লিমন। ময়মনসিংহের ধুপপাড়া থেকে ১০ দিন আগে শাশুড়ীর জরায়ু ক্যান্সার চিকিৎসার জন্য এসে শাশুড়ীকে ভর্তি করাতে পারেননি দিপক নামের এক ব্যক্তি। ওর্য়াড বয়কে টাকা দিয়ে হাসপাতালের বারান্দায় ফেলে রাখা হয়েছে। কেন ভর্তি করা হচ্ছেনা জানতে চাওয়া হলে দিপক জানান, হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ জানিয়েছেন ওর্য়াডে বেড খালি নেই। টাকার অভাবে শাশুড়ীকে ভর্তি করাতে না পেরে হিমশিম খাচ্ছেন দিপক। তার অভিযোগ যদি টাকা দিতে পারতাম তাহলে খুব সহজে শাশুড়ীকে ভর্তি করাতে পারতাম। হাসপাতালটি শুধু নামে সরকারী কিন্তু কাজের ক্ষেত্রে অগণিত টাকা দিয়ে চিকিৎসা করাতে হয় বলে ভুক্তভোগীরা অভিযোগ করেছেন। মূলত গরীবদের জন্য চিকিৎসা ব্যবস্থা খুবই ব্যয়বহুল। বাইরে থেকে মানুষ মনে করে হাসপাতাল টিতে খুব কম টাকায় চিকিৎসা-সুবিধা রয়েছে। কিন্তু চিকিৎসার নামে রোগিদের গলাকাটা হচ্ছে। আরেক জন ক্যান্সার রোগি জানান, ১৫ দিন ধরে ফ্লোরে পড়ে আছেন তিনি। তাকে ওয়ার্ডে ভর্তি করতে বিশ হাজার টাকা দাবি করেন ওয়ার্ড মাস্টার। তার অসুস্থতার কথা জানাতে তিনি কান্নায় ভেঙ্গে পড়েন। এভাবে শত শত রোগি ভোগান্তির শিকার হচ্ছেন । তবে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ এসব অভিযোগ মানতে নারাজ।
জাতীয় ক্যান্সার গবেষণা ইসস্টিটিউট ও হাসপাতালের নার্স ষ্টেশন থেকে নার্সরা রোগিদের স্বজনদেরকে ওয়েটিং রুমে বসতে দেয়ানা। দুর দুর করে তাড়িয়ে দেয়া হয় রোগির স্বজনদের। আর গুরুত্বর রোগিদের জন্য তাৎক্ষণিক ভাবে কোন ব্যবস্থা নেয়া হয়না। রোগিদের স্বজনরা কান্নাকাটি করা স্বত্ত্বেও মূর্মষ রোগিদেরকে ভেতরে নেয়া হয়না। কোন ধরনের অনুরোধ শুনতেও রাজি নন ডাক্তার-নার্সরা।
হাসপাতালের পরিবেশ এতটাই নোংড়া যে, দুর্গন্ধ সহ্য করা যায় না। হাসপাতালের সামনে ময়লা আবর্জনা। বারান্দা গুলোতে রোগিদেরকে ময়লার মধ্যেই শুয়ে রাখা হয়েছে। দুগর্ন্ধে নাক ধরে হাটতে হয়। টয়লেট গুলোকে রাখা হয়েছে অপরিস্কার। প্রত্যক্ষদর্শীরা বলেন, এভাবেই চলছে রোগিদের জীবন-যাপন। বলার এবং ব্যবস্থা নেয়ার কেউ নেই বললেই চলে।
Editor & Publisher : Md. Motiur Rahman
Pritam-Zaman Tower, Level 03, Suite No: 401/A, 37/2 Bir Protik Gazi Dastagir Road, Purana Palton, Dhaka-1000
Cell : (+88) 01706 666 716, (+88) 01711 145 898, Phone: +88 02-41051180-81