02/24/2025
শাফিন আহমেদ | Published: 2024-10-02 13:38:36
নানা সমস্যায় জর্জরিত হয়ে ১৫০ শয্যার ঢাকা মহানগর জেনারেল হাসপাতাল ধুঁকে ধুঁকে চলছে। চিকিৎসক ও জনবল সংকট, অব্যবস্থাপনা ও অবহেলায় স্বাস্থ্যসেবা ব্যাহত হওয়ায় ন্যায্য সুবিধা থেকে বঞ্চিত হচ্ছে রোগীরা। তবে এসব ব্যাপারে বরাবরের মতোই বরাদ্দ সংকটকে দুষছেন হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ।
হাসাপাতাল কর্তৃপক্ষ জানায়, বিভিন্ন পদমর্যাদার নিয়ম অনুযায়ী পরামর্শক সার্জারী, জরুরী বিভাগে মেডিসিন অফিসার, দন্তবিভাগ, চক্ষু বিভাগ, নাক কান গলা (ইএনটি বিভাগ), পরামর্শক মেডিসিন, অর্থোপেডিকস, শিশু বিশেষজ্ঞ ডাক্তার বরাদ্দ সংকট থাকায় রোগীদের আস্থা অর্জন থেকে দূরে সরে যাচ্ছে এ হাসপাতাল। শুধু তাই নয়, রোগীর পরিমান বেশি সত্ত্বেও পূর্বের নিয়ম অনুযায়ী মেডিসিন বরাদ্দ কম থাকায় রোগীরা ঠিক মতো ঔষধ পাচ্ছেনা।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে হাসপাতালটির তত্ত্বাবধায়ক জানান, ডিএসসিসি থেকে পরিচালকের যাতায়াতের জন্য নিজস্ব গাড়ি বরাদ্দ নাই, হাসপাতালের প্রবেশপথে ময়লার স্তুপ, অপরিষ্কার অপরিচ্ছন্নতা থাকায় রোগীরা স্বাস্থ্যঝুকিতে হুমকির মুখে পরছে, রোগীকে সেবা প্রদানের লক্ষ্যে যা যানবাহন প্রয়োজন তা পর্যাপ্ত নয়। কোভিড ১৯ সময়কালে আইসিইউ চালু হলেও ডাক্তার সংকটের কারনে আইসিইউ কার্যক্রম বন্ধ, পাশাপাশি পর্যাপ্ত পরিমানে অক্সিজেন হাইফ্লো মেশিন না থাকার কারনেও একজন করোনা রোগী অক্সিজেন সুবিধা পেতে বঞ্চিত হচ্ছে।
সরেজমিনে দেখা যায়, হাসপাতালটি পুরোদমে রোগীশুন্য। চারদিকে সুনসান নিরবতা, ওয়ার্ডগুলোর সিট যেনো জং ধরা শুরু করেছে, ওয়ার্ড- কেবিনগুলো ধুলোয় স্তূপ হয়ে পড়েছে। জনবল সংকটের মধ্যেই নানা অনিয়ম ও অব্যবস্থাপনার মধ্যে চলছে হাসপাতালটির ইনডোর এবং আউটডোর সেবা কাযক্রম। অনেকের ধারণা জনবল সংকট আর হাসপাতালটি সম্পর্কে না জানায় রোগীরা যাচ্ছে না। এমন তথ্য যেমন সত্য আবার সীমিত জনবলের দোহাই দিয়ে চিকিৎসা সেবায়ও নানা অনিয়মের চিত্র পাওয়া যায় এই হাসপাতালে। সময়মতো চিকিৎসক না আসা, চিকিৎসকের অভাব, ওষুধ সংকট, টেকনিশিয়ান দিয়ে দাঁতের চিকিৎসাসহ নানা অভিযোগ রয়েছে এই হাসপাতালের বিরুদ্ধে। যদিও আধুনিক অবকাঠামোর হাসপাতালটিতে নেই অর্থ সংকট। সেবা নিতে এসে রোগীদের ফিরে যেতে হচ্ছে ওষুধ ছাড়া। চিকিৎসক দেখিয়ে ব্যবস্থাপত্র নিয়ে ফার্মেসিতে গেলে অধিকাংশ রোগীকে প্যারাসিটামল ট্যাবলেট ও নাপা সিরাপ দিয়ে ফিরিয়ে দেওয়া হচ্ছে।
এ বিষয়ে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ বলছে, চাহিদার তুলনায় কম সরবরাহ থাকায় এমন পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে। অর্থবছরে একবার দেওয়া হয় ওষুধ। শেষ হয়ে গেলে নতুন ওষুধ পেতে বাজেট সংশোধন করে আবেদন করতে হয়। সেটিও পেতে তিন থেকে চার মাস সময় লাগে।
শুধু তাই নয়, ব্লাড ব্যাংক, সিটি স্ক্যান ও এমআরআই মেশিন। এক্স-রে মেশিন থাকলেও তা বন্ধ। প্রয়োজনীয় পরীক্ষা-নিরীক্ষার বেশিরভাগই করা হচ্ছে আশপাশে গড়ে ওঠা বেসরকারি ডায়াগনস্টিক সেন্টারে।
এদিকে, করোনা রোগীর চিকিৎসার জন্য ২০২০ সালের অক্টোবরে পাঁচটি নিবিড় পরিচর্যা কেন্দ্র বা আইসিইউ স্থাপন করা হয়েছিল। এরপর গত বছরের এপ্রিলে ১৫টি হাই ডিপেনডেন্সি ইউনিট (এইচডিইউ) স্থাপন করে স্বাস্থ্য অধিদপ্তর। কিন্তু আইসিইউ ও এইচডিইউ এখনও চালু করা সম্ভব হয়নি। জনবল সংকট থাকায় এগুলো যথাযথ পরিচর্যা না করায় নষ্ট হওয়ার আশঙ্কা তৈরি হয়েছে।
সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, পুরান ঢাকার মানুষের স্বাস্থ্যসেবা নিশ্চিতে ১৯৮৯ সালে ঢাকা মহানগর জেনারেল হাসপাতাল চালু করা হয়। তখন নাম ছিল শ্রমজীবী হাসপাতাল। পরে ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের অধীনে এনে ১৫০ শয্যায় উন্নীত করে নাম দেওয়া হয় ঢাকা মহানগর জেনারেল হাসপাতাল।
Editor & Publisher : Md. Motiur Rahman
Pritam-Zaman Tower, Level 03, Suite No: 401/A, 37/2 Bir Protik Gazi Dastagir Road, Purana Palton, Dhaka-1000
Cell : (+88) 01706 666 716, (+88) 01711 145 898, Phone: +88 02-41051180-81