02/24/2025
মো: মাহবুবুর রহমান | Published: 2024-10-02 18:18:53
উন্নয়নের অক্সিজেন হলো রাজস্ব। দেশের অর্থ বছরের মোট বাজেটের ৬৫ শতাংশ সংস্থান হয় জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের মাধ্যমে । জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষ কর এবং মূল্য সংযোজন কর বা ভ্যাট আভ্যন্তরীন ব্যবসা বানিজ্য শিল্প কল-কারখানা ও উৎপাদিত পন্যের উপর আরোপিত কর থেকে আদায় করা হয়। দেশের প্রতিটি সেবামূলক খাত বা উৎপাদিত পণ্যের উপরই ভ্যাট বসানো হয়। যা দ্বারা দেশে মোট বাজেট পূরণ করা হয়। উক্ত ভ্যাট আদায়ের দায়িত্বে রয়েছে জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের দেশব্যাপী বিস্তৃত ভ্যাট অফিস সমূহ। দেশের সাধারন জনগন প্রতিনিয়ত ভ্যাট প্রদান করছে। যে সেবা বা পণ্যই ব্যবহার করা হোক না কেন ভ্যাট প্রদান বাধ্যতামূলক। কিন্তু উৎপাদনকারী বা সেবা প্রদানকারী প্রতিষ্ঠৃানগুলো ভ্যাট প্রদানের ক্ষেত্রে দুর্নীতি ও অনিয়মের আশ্রয় নিচ্ছে।সে ক্ষেত্রে সরকার লাভবান হতে চাইলে যারা এই দায়িত্ব পালন করেছেন তাদের পেছনে শক্তিশালী ট্রাস্কফোর্স গঠন করা অতীব জরুরি বলে বিশ্লেষকমহল মনে করেন। মাঠ পর্যায়ে ভ্যাট আদায়কারী কর্মকর্তা বা ইন্সপেক্টরগন ভ্যাট আদায়ের ক্ষেত্রে অসাধূ ব্যবসায়ীদের সাথে যোগসাজস করে ভ্যাট ফাঁকির উপায় বাতলে দেয়ার অভিযোগ অতি পুরানো।এই অভিযোগটি উপরের কর্তা ব্যক্তিরা আমলে নিতে আগ্রহী নন। কারন যারা মাঠে কাজ করেন তারা স্যারদের আনুগত্য। একেকটি ভ্যাট সার্কেল অফিস যেন দুর্নীতির আখড়ায় পরিনত হয়েছে। কিভাবে ভ্যাট কম দেখিয়ে নিজেদের পকেট ভারী করবেন সে ধান্দায় প্রতিনিয়ত থাকেন ব্যস্ত।
এই প্রতিনিধি দেশের বিভিন্ন সার্কেলের ভ্যাট অফিস ও সেবা প্রদানকারী সংস্থা অথবা উৎপাদিত পণ্যের ছোট বড় কারখানায় গিয়ে নানারকম অনিয়ম ও দুর্নীতির তথ্য পেয়েছে। কাস্টমস এক্সাইজ ভ্যাট কমিশনারেট (পূর্ব) অঞ্চলের বিভিন্ন সার্কেল অফিসে যথাক্রমে-টিকাটুলী সার্কেল, কোনাপাড়া, রায়েরবাগ, ডেমরা, শ্যামপুর, সূত্রাপুর, মিরহাজিরবাগ, পোস্তাগোলা, গেন্ডারিয়া, দনিয়া, কদমতলী, ধলেশ্বর, সার্কেল অফিসগুলোতে সরেজমিন গিয়ে দেখা গেছে যে, একেকটি অফিস এর ইন্সপেক্টরদের রুম যেন ঘুষের হাট-বাজার। গোয়েন্দা ডায়রির অনুসন্ধানী টিম খুব বেশি ক্লোজ মনিটরিং চালাতে গিয়ে ব্যবসায়ী সেজে ভ্যাট কর্মকর্তাদের সাথে কথা বলে জানা যায় ঘুষ লেনদেনের নানা রহস্য।এসব সার্কেলের আওতাধীন ছোট ছোট ব্যবসা প্রতিষ্ঠানগুলোর ভ্যাট সংক্রান্ত কার্যক্রমে অনিয়মের অভিযোগ এতোটাই ভয়াবহ যা প্রত্যক্ষ না দেখলে বিশ্বাস করার মতো নয়। প্রকাশ্যে একজন ব্যবসায়ী কিভাবে সরকারের রাজস্ব ঠকিয়ে নিজেরা এবং বাজস্ব কর্মকর্তারা লাভবান হচ্ছেন তা নিয়ে সর্ব মহলে প্রশ্ন উঠলেও জাতীয় রাজস্ব বোর্ড কর্তৃপক্ষের টনক নড়েনি। ভ্যাট দাতারা ভ্যাট চালান নিয়ে প্রতিটি ভ্যাট চালান গ্রহনের ক্ষেত্রে তাদের নির্ধারিত পরিমান টাকা ঘুষ হিসেবে দিতে দেখা গেছে। যার তথ্য প্রমান ও ফুটেজ ।প্রতিবেদকের কাছে লিপিবদ্ধ রয়েছে।
সরজমিনে দেখা গেছে,কোনাপাড়া সার্কেল অফিস ১৯, হাটখোলা রোড, ঢাকায় কাজ করেন ভ্যাট পরিদর্শক মাহবুবুর রহমান। ছদ্মবেশে ব্যবসায়ীসেজে তার রুমে গেলে তিনি বসতে বলেন। একই সময়ে একজন ব্যবসায়ী ইন্সেন্টের মাহবুবুর রহমান এর নিকট আসলে তিনি সরাসরি ব্যবসায়ীর নিকট থেকে ৫০০ টাকার নয়টি নোট ঘুষ হিসেবে গ্রহণ করেন। পরবর্তীতে ছদ্মবেশে থাকা প্রতিনিধির নিকট ইন্সপেক্টর মাহবুব জিজ্ঞাসা করেন আপনার চালান দেন। প্রতিনিধি নিজেকে সংবাদকর্মী হিসেবে পরিচয় দেন সাথে সাথে প্রতিনিধির উপর চরমভাবে ক্ষিপ্ত হয়ে ওঠেন এবং মারতে ধেয়ে আসেন। এরপর মাহবুবের কয়েকজন সহকর্মী সংঘবদ্ধ হয়ে গণমাধ্যমকর্মীকে গালমন্দ করেন এবং পরবর্তীতে আর যাতে অফিসে না আসে সে জন্য হুমকি প্রদান করা হয়। এ পর্যন্তই শেষ নয়,ইন্সপেক্টর মাহবুব তাির বাহিনী দিয়ে গোয়েন্দা ডায়রির প্রতিনিধিকে জোর পূর্বক বের করে দেন। এ সময় তারা বলেন, আর আসলে মরে ফেলা হবে।
একজন গনমাধ্যম কর্মী সংবাদ সংগ্রহ করতে গিয়ে দুর্নীতি পরায়ন কর্মকর্তা দ্বারা নাজেহাল ও হুমকির ঘটনাটি মিডিয়ায় ছড়িয়ে পড়ে।বিক্ষুদ্ধ সাংবাদিক সমাজ এর প্রতিবাদ জানিয়েছেন। যদি এর প্রতিকার না নেয়া হয় তাহলে পরবর্তীতে কর্মসূচি দেয়া হবে সাংবাদিক মহল মনে করেন এ ধরনের সংবাদ এর জন্য অনিরাপদ। যা কাম্য নহে।
দেশে বর্তমানে যে সংস্কার শুরু হয়েছে সর্বপ্রথম দুর্নীতিবাজ কর্মকর্তা ও কর্মচারীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া জরুরী। পতিত সরকারের রেখে যাওয়া এসব দূর্নীতিবাজ কর্মকর্তাদের কন্ট্রোল করতে না পারলে অন্তবর্তী সরকার বেকায়দায় পড়েবেন। এ চিত্র দেশের বেশিরভাগ ভ্যাট সার্কেল অফিসের। রাজধানীর বিভিন্ন ভ্যাট অফিস গুলোতে চলছে ঘুষের মহা উৎসব। ব্যবসায়ীরা কর ফাঁকি দিতে অভ্যস্ত হয়ে গেছেন।বিশেষ করে মাঝারি ও ছোট-খাটো-ফ্যাক্টরীগুলো মাসোহারা দিয়ে তাদের ব্যবসা-বাণিজ্য ঠিক রাখছেন। ব্যবসায়ী ও মাঠ পর্যায়ের ভ্যাট কর্মকর্তারা যেভাবে পাড়ছেন সরকারের রাজস্ব ফাকিঁ দিয়ে কোটি কোটি টাকা হাতিয়ে নিচ্ছেন। প্রতিজন সুপারিন্টেড এবং ইন্সপেক্টর বাদেও তাদের পিয়নরাও গাড়ি বাড়ির মালিক। অন্তবর্তী সরকারের কাছে বিভিন্ন শ্রেনী পেশার মানুষ জাতীয় রাজস্ব বোর্ডকে ঢেলে সাজানোর দাবি জানিয়েছেন।দেশের জাতীয় সেক্টর জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের মাঠ পযায়ের কর্মকর্তাদের অনিয়মগুলো খুব বেশি তদারকি করা দরকার বলে মনে করেন বিজ্ঞমহল। তাতে দুটোলাভ রয়েছে। একটি হচ্ছে, সরকারের রাজস্ব বাড়বে, অন্যটি অসাধু ব্যবসায়ীরা মাঠ পর্যায়ের কর্মকর্তাদের, সাথে যোগসাজস করতে পারবেনা। শক্ত হাতে দমনের এখনই সময়।
Editor & Publisher : Md. Motiur Rahman
Pritam-Zaman Tower, Level 03, Suite No: 401/A, 37/2 Bir Protik Gazi Dastagir Road, Purana Palton, Dhaka-1000
Cell : (+88) 01706 666 716, (+88) 01711 145 898, Phone: +88 02-41051180-81