02/24/2025
বিশেষ প্রতিবেদক | Published: 2024-10-08 20:58:38
হলমার্ক ও বিসমিল্লাহ গ্রুপসহ অন্তত ২৪টি প্রতিষ্ঠানের ৯২ হাজার কোটি টাকার আর্থিক কেলেঙ্কারিতে নীরব ছিল বাংলাদেশ ফাইন্যান্সিয়াল ইন্টেলিজেন্স ইউনিট (বিএফআইইউ)।
এইসব প্রতিষ্ঠান থেকে ঘুষ নিয়ে সহায়তা করার অভিযোগে সংস্থাটির সাবেক প্রধান মাসুদ বিশ্বাসের বিরুদ্ধে অনুসন্ধানের সিদ্ধান্ত নিয়েছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। গতকাল রাজধানীর সেগুনবাগিচায় দুদকের প্রধান কার্যালয় থেকে এই বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।
দুদক বলছে, গোয়েন্দা ইউনিটের অনুসন্ধানে প্রাথমিক সত্যতা পাওয়ার পর তার বিরুদ্ধে প্রকাশ্যে অনুসন্ধানের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।
সূত্র জানায়, অর্থ পাচার ঠেকানোর দায়িত্ব বিএফআইইউর। কিন্তু উল্টো বিএফআইইউর সদ্য পদত্যাগ করা প্রধান মাসুদ বিশ্বাসের বিরুদ্ধে অর্থ পাচারে সহায়তা ছাড়াও নানাভাবে ঘুষ নেওয়ার অভিযোগ উঠেছে। এছাড়া তার বিরুদ্ধে ব্যাংকগুলোকে চাপ দিয়ে প্রশিক্ষণ প্রোগ্রাম, বিভিন্ন অপ্রয়োজনীয় ইভেন্ট আয়োজন ও বিদেশ সফরের মাধ্যমে অর্থ অপব্যয় করার অভিযোগ রয়েছে।
গত কয়েক বছর বিএফআইইউর পক্ষ থেকে বছরে গড়ে ৮-১০টির মতো বড় তদন্ত দায়সারাভাবে করে সেসব প্রতিষ্ঠানের পক্ষ থেকে আর্থিক সুবিধা নেওয়ার অভিযোগ ওঠে।
দুদকের প্রাথমিক অভিযোগে দেখা যায়, বিএফআইইউ প্রধান চট্টগ্রামভিত্তিক একটি ব্যবসায়ী গ্রুপ ও আবদুল কাদির মোল্লার থার্মেক্স গ্রুপ থেকে অনৈতিক সুবিধা গ্রহণ করে বিদেশে অর্থ পাচারের বিষয়ে অবহিত থেকেও পাচার ঠেকাতে কোনো ব্যবস্থা নেয়নি। এমনকি জিনাত এন্টারপ্রাইজের পাচারের ঘটনায় ৫০ লাখ টাকা ঘুষের বিনিময়ে সেটি ধামাচাপা দিয়েছে।পাশাপাশি ইউসিবি ব্যাংকের বিভিন্ন শাখার মাধ্যমে থার্মেক্স গ্রুপের বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের অনুকূলে মঞ্জুরি করা ঋণের টাকা ব্যাংকটির চেয়ারম্যানের স্বার্থ-সংশ্লিষ্ট কয়েকটি প্রতিষ্ঠানের হিসাবে স্থানান্তর করার গুরুতর অনিয়ম বিএফআইইউর তদন্তে ধরা পড়লেও এই বিষয়ে কোনো ব্যবস্থা নেয়নি। এছাড়া একটি বেসরকারি ব্যাংকের অবজারভার থাকা অবস্থায় ওই ব্যাংকের কাছ থেকে নিয়ম বহির্ভূতভাবে ২ হাজার বর্গফুটের একটি ফ্ল্যাট ঘুষ হিসেবে নিয়েছেন মাসুদ বিশ্বাস।
রূপালী ব্যাংকের গ্রাহক ডলি কনস্ট্রাকশনের অনুকূলে একক গ্রাহক ঋণসীমা অতিক্রম করে ৪০০ কোটি টাকার আর্থিক সুবিধা দিয়েছে সংশ্লিষ্ট ব্যাংক। বিষয়টি বিএফআইইউর তদন্তে ধরা পড়লেও মাসুদ বিশ্বাস ঘুষ নিয়ে তার কোনো ব্যবস্থা নেননি। পাশাপাশি ন্যাশনাল ব্যাংকের গ্রাহক সান্ত¡না এন্টারপ্রাইজসহ কয়েকটি প্রতিষ্ঠানের অনুকূলে ব্যাংকটির চারটি শাখা থেকে প্রায় ১৫০০ কোটি টাকা প্রধান কার্যালয়ের অনুমোদন ছাড়াই বিতরণ করে।
মাসুদ বিশ্বাস শাখা ব্যবস্থাপকদের থেকে অবৈধ সুবিধা নিয়ে ব্যাংকের সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের দায়মুক্তি দেওয়ার ব্যবস্থা করেছেন।
এছাড়াও সাদ-মুসা গ্রুপ একাধিক ব্যাংক থেকে প্রায় ১ হাজার কোটি টাকার গৃহীত ঋণের অনিয়ম যাচাইকালে বিভিন্ন ব্যাংকের গাফিলতি, দুর্নীতি ও অনিয়ম উদঘাটিত হলেও তিনি দাপ্তরিক ক্ষমতাবলে অবৈধ সুবিধা নিয়ে কোনো ব্যবস্থা গ্রহণ করেননি।
এদিকে ব্যাংকের গ্রাহক সাজিদা ফাউন্ডেশনের ভুয়া ডেবিট ইন্সট্রাকশনের বিপরীতে ২০২১ সালে ৮২ হাজার ৪১৬ ডলার ডাচ মালিকানাধীন আইএনজি ব্যাংকের একজন গ্রাহকের অনুকূলে পাঠানোর মাধ্যমে পাচার করে। মাসুদ বিশ্বাস ব্যাংকটির কাছ থেকে অবৈধ সুবিধার বিনিময়ে অনিয়মটি ধামাচাপা দিয়েছেন।
যমুনা ব্যাংকের ধানমন্ডি শাখার গ্রাহক শিরিন স্পিনিং মিলসের অনুকূলে ১০ কোটি ডলার রেমিট্যান্স প্রেরণ এবং এনআরবিসি ব্যাংকের গ্রাহক বিশ্বব্যাংকের কালো তালিকাভুক্ত কোম্পানি টাইগার আইটির নামে ১ হাজার কোটি টাকার ব্যাংক গ্যারান্টি প্রদানে অনুমোদনের জন্য মাসুদ বিশ্বাস অবৈধভাবে প্রভাব বিস্তার করেন। এছাড়া তিনি মার্কেট সিস্টেমস ও নগদের আর্থিক কেলেঙ্কারি ধামাচাপা দিতে ইতালি সফরের জন্য সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠানগুলো থেকে অর্থ গ্রহণ করেছেন বলে দুদকের অভিযোগে উঠে এসেছে।
Editor & Publisher : Md. Motiur Rahman
Pritam-Zaman Tower, Level 03, Suite No: 401/A, 37/2 Bir Protik Gazi Dastagir Road, Purana Palton, Dhaka-1000
Cell : (+88) 01706 666 716, (+88) 01711 145 898, Phone: +88 02-41051180-81