02/24/2025
মো: হুমায়ূন কবির | Published: 2024-10-15 11:23:51
শরিয়তপুর জেলার ভেদরগঞ্জ উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে জয়লাভ করার জন্য মরিয়া হয়ে উঠেন দূর্নীতিবাজ হুমায়ুন কবির মোল্লা। এজন্য তিনি তৎকালীন সখিপুর থানার ওসি মাসুদুর রহমানের মাধ্যমে ঘৃণ্য কৌশল অবলম্বন করেছিলেন। ওসি মাসুদের নানা ধরনের নিপীড়ন নির্যাতনের শিকার রেস্টুরেন্ট ব্যবসায়ী সহ বিভিন্ন শ্রেণি পেশার মানুষ।
তৎকালীন সখিপুর থানার অফিসার ইনচার্জ মাসুদুর রহমান ছিলেন কঠোর আওয়ামীপন্থী। পতিত সরকারের অন্যতম একজন দোসর ছিলেন এই কর্মকর্তা। মাসুদের বাড়ি মাদারীপুর। তিনি কথায় কথায় বলতেন আমি লিটন চৌধুরীর আস্থাভাজন তাই বিএনপি জামায়াত মুক্ত সখিপুর গরবো। সখীপুরে কোন নাম গন্ধ রাখবনা। সেটা তিনি বাস্তবে করেও দেখিয়েছেন। কিছু ঘটলেই মামলা দিয়ে রিমান্ডের নামে নির্যাতন করা হতো। নেয়া হতো মোটা অংকের টাকা। ১ দিন রিমান্ড মওকুফ করার জন্য এক লাখ টাকা ছিলো তার রেইট। ২ দিন ১ লাখ ৫০ হাজার এবং ৩ দিন ২ লাখ টাকা নিতেন পাষণ্ড ওসি। এভাবেই সখিপুরে রিমান্ড বানিজ্য চালিয়েছেন।
ওসি মাসুদুর রহমান ছিলেন সাবেক সাংসদ ও পানি সম্পদ উপমন্ত্রী এনামুল হক শামিমের বিশ্বস্ত। তিনিই মাসুদকে সখিপুরে বদলি করে নিয়ে আসেন। যতো অপকর্ম, মামলা, হামলা সব কিছুই সম্ভব করেছেন তিনি। তার থানায় আওয়ামীপন্থীদের বিরুদ্ধে কোন মামলা দায়ের হতো না। সালিশ বাণিজ্যের নামে সামাজিক ভাবে সমাধান করার কথা বলে সাধারন মানুষকে নানাভাবে হয়রানি করা হতো। আর এসব সমস্যা সমাধান করতেন স্থানীয় আওয়ামীলীগের নেতাকর্মীরা। এটা ছিলো তাদের অবৈধ অর্থ উপার্জনের অন্যতম একটা পথ।
জানা যায়, বিগত উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে ভেদরগঞ্জ উপজেলার ৯০% মানুষ হুমায়ুন কবির মোল্লার দূর্নীতি এবং ক্ষমতার অপব্যবহারের কারণে তার বিরুদ্ধে চলে যায়। নির্বাচনে যারা বিরোধিতা করে ছিলেন তাদেরকে শায়েস্তা করার জন্য ভিন্ন ভিন্ন অপকৌশল এপ্লাই করতেন হুমায়ুন কবির মোল্লা।
সখিপুর ফুড কর্নারের ( রেস্টুরেন্ট ) মালিক জাহিদ হোসেন, গ্রীন সিটি রেস্টুরেন্টের মালিক আবু তাহের রাকিব এবং ক্যাফের মালিকদের দমন করার জন্য সাবেক উপমন্ত্রী এনামুল হক শামিমের নির্দেশে ওসি মাসুদুর রহমান রেস্টুরেন্টে অভিযান চালিয়ে তাদের গ্রেফতার করে টাকা কামাতেন। এ সকল বিষয় গুলো ছিলো তাদের সাজানো নাটক। জাহিদের রেস্টুরেন্টে থেকে এক নবদম্পতিকেও গ্রেফতার করা হয়েছিল। পতিতাবৃত্তির অভিযোগে একদিন পরে মোটা অংকের টাকার বিনিময়ে তাদের মুক্তি দেয়া হয়েছিলো বলেও অভিযোগ রয়েছে ।
সখিপুর ফুড কর্নার রেস্টুরেন্টটি অবস্থিত রাজিব সরদারের ভবনে। রাজিব সরদার হুমায়ুন কবির মোল্লার বিপক্ষ প্রার্থী ইঞ্জিনিয়ার ওয়াছেল কবির গুলফাম বকাউল কে সমর্থন করেছিলেন বিধায় তার সাথে রাজনৈতিক মতপার্থক্য ঘটে।
রাজিব সরদার সখিপুর থানা যুবদলের সাধারণ সম্পাদক। শুধু মাত্র এই কারণে এমপি এনামুল হক শামিম ওসির মাধ্যমে রাজিব সরদারসহ তাঁর অনুসারীদের দমন করার লক্ষ্যে মানসিক চাপ ও সামাজিক ভাবে কোনঠাসা করার ষড়যন্ত্রে লিপ্ত ছিলেন। এজন্য লাখ লাখ টাকাও দিতে হয়েছে ওসিকে।
তৎকালীন ওসি মাসুদুর রহমান সখিপুরের প্রভাবশালী পরিবারের কর্নধার বিশিষ্ট সমাজসেবক কামরুল হাসান ওরফে রাজিব সরদারকে তার জন্মস্থান সখিপুর থেকে চলে যাওয়ার জন্য হুমকিও দিয়ে ছিলেন। পরবর্তীতে জনগণের অকুন্ঠ সমর্থনে ষড়যন্ত্র সফল হয়নি। তিনি তার জন্মস্থানে বহাল তবিয়তে রয়ে গেছেন।
ওই ঘটনার সময় সখিপুর ফুড কর্ণারে বিভিন্ন কলেজ ও বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা সখিপুর নিমতলা খুবই মনোরম পরিবেশে ঘুরতে এসে খাবার খেতে এসে ঘটনা দেখে হতভম্ব হয়ে যান। তাদের বিরুদ্ধে মানব পাচার আইন ২০১২ এর ১২ ধারায় মিথ্যা মামলা দায়ের করে চরম ভাবে হয়রানি করা হয়েছিল ওই সময় ।
সরেজমিনে গিয়ে জানা যায়, সখিপুর গ্রীন সিটি রেস্টুরেন্টে ঘটনার দিন কোন কাস্টমার ছিলো না। তারপর ও তাকে গ্রেফতার করা হয়েছিল। স্টাফ রুমের সাইনবোর্ড ফেলে দিয়ে পতিতাবৃত্তির অভিযোগ করে। যদি ওই রেস্টুরেন্ট সিসি ক্যামেরা দ্বারা নিয়ন্ত্রিত থাকার পর ওসি সাহেবের স্বেচ্ছাচারীতার কারণে " উপরের নির্দেশ " বলে এড়িয়ে যান। সখিপুর ক্যাফে হাউজেও কোন কাস্টমার ছিলো না তারপরও তাদের গ্রেফতার করা হয়েছিল।
এনামুল হক শামিম ও হুমায়ুন কবির মোল্লার দালাল হিসেবে সখিপুর বাসির কাছে পরিচিত আওয়ামীলীগের দলীয় সাংবাদিক শাকিল আহমেদ কিছু দিন আগে দূর্নীতি প্রমানিত হওয়ায় দৈনিক যুগান্তর পত্রিকার ভেদরগঞ্জ উপজেলা প্রতিনিধি থেকে অব্যাহতি দিয়েছে । ফেসবুকে পোস্ট দিয়ে ছিলেন সখিপুর ফুড কর্ণারে কপোত-কপোতী সহ রেস্টুরেন্টে মালিককে গ্রেফতার করা হয়েছে।
কিন্তু মামলার এজাহারে বিকাল ০৪:০০ টা সময় উল্লেখ করা হয় । এই অভিযান ছিলো সম্পূর্ণ সাজানো নাটক। এই অভিযানে প্রশাসনের কোন কর্মকর্তা ছিলো না। এএসপি মুসফিকুর রহমান খবর পেয়ে রাত ০৮:০০ টার দিকে ঘটনাস্থলে এসে সত্যতা না পেয়ে কৌশলে ধামাচাপা দেয়া হয়। আদালতে রিমান্ডের আবেদন করা হলে আদালত রিমান্ড নাকোচ করে দেয়।
হুমায়ুন কবির মোল্লা বিভিন্ন ভাবে তার বিপক্ষে সমর্থনকারী জনসাধারণকে হুমকি দিতেন। তৎকালীন ওসির মাধ্যমে স্থানীয় জনসাধারণকে হুমকি দিয়ে আওয়ামী লীগ করতে বাধ্য করতেন। ওসি সরাসরি বলতেন জামাত বিএনপি আমার আমার চোখের বিষ পাইলেই রিমান্ডে দিমু। স্থানীয় বিএনপি সহ ভিন্ন মতপোষণকারীদের বাড়িতে পুলিশ নানা অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ করতো বিনাকারণে আটক করে রাখতো ওসির নির্দেশে। সেই কারণে তিনি এবং এনামুল হক শামিমের ভাই ডাঃ সিয়াম , ও খালেক খালাসিকে ( সভাপতি সখিপুর থানা যুবলীগ) একাধিক বার শোকজ নোটিস দিয়েছেন শরীয়তপুর জেলা নির্বাচন অফিস। কোন নোটিশকে তোয়াক্কা না করে হুমায়ুন কবির মোল্লা তাদের রামরাজত্ব কায়েম রাখেন।
রেস্টুরেন্টের অভিযান সম্পূর্ণ নাটক বুঝতে পেরে দৈনিক গনমুক্তির সাংবাদিক জিকে সানজিদ তৎকালীন ওসির কাছে এ সম্পর্কে জানতে চাইলে তিনি সাংবাদিকদের সাথে অকথ্য ভাষায় কথা বলেন। এনামুল হক শামিমের নির্দেশের বাইরে কোন কাজ করতেন না। যে কোন ছোট খাটো সমস্যা নিয়ে থানায় গেলে মোটা অংকের টাকা দাবি করতেন। অন্যথায় জামায়াত বলে চালান দেওয়ার হুমকি দিতেন।
তৎকালীন ওসি থানা মিডিয়া সেলে দলীয় সাংবাদিক সাকিলের কথা ছাড়া কাউকে এড করতেন না। সখিপুর রিপোর্টার্স ইউনিটির ইফতার ও দোয়া মাহফিলের দাওয়াত দিতে গেলে তিনি বলেন আওয়ামী সাংবাদিক ব্যতিত অন্য কোন সাংবাদিকের দাওয়াতে যাওয়া নিষেধ আছে। আওয়ামীলীগের দলীয় সাংবাদিক সাকিলের মাধ্যমে বিভিন্ন বিয়ে বাড়ি থেকে মোটা অংকের টাকা নিতেন ওসি। অবৈধ ভাবে বালুর ব্যবসা করতেন সাকিল পারসেন্টেজ নিতেন ওসি। টিসিবি পণ্যের ডিলার নিয়ে নিম্ন মানের পণ্য দিতেন কেও প্রতিবাদ করলে ওসি নানা কৌশলে তাকে হেনস্তা করতেন।
শরীয়তপুর জেলা বিএনপি সভাপতি শফিকুর রহমান কিরন সখিপুর বাজারে ত্রান দেয়ার সময় আওয়ামী পন্থীদের সাথে পুলিশ ও হামলা চালায়। শফিকুর রহমান কিরনের বাড়িতেও একই ভাবে হামলা চালায় ওসির নির্দেশে।
বর্তমানে অন্তর্বতীকালীন সরকারের শাসনকালে সাধারণ মানুষের প্রত্যাশা সাংবাদিক এবং পুলিশ প্রশাসন যেনো ক্ষমতার অবৈধ প্রভাব খাটিয়ে সখিপুরের কোন নিরপরাধ নাগরিকদের হয়রানি না করেন। জেলা প্রশাসক ও পুলিশ সুপারের নিকট আকুল আবেদন সখীপুর বাসির।
Editor & Publisher : Md. Motiur Rahman
Pritam-Zaman Tower, Level 03, Suite No: 401/A, 37/2 Bir Protik Gazi Dastagir Road, Purana Palton, Dhaka-1000
Cell : (+88) 01706 666 716, (+88) 01711 145 898, Phone: +88 02-41051180-81