02/23/2025
বিশেষ প্রতিনিধি | Published: 2024-11-05 17:28:24
বিআইডব্লিউটিএতে পতিত সরকারের সুবিধাভোগী দোসররা এখনো সক্রিয়। তারা নানাভাবে বিভিন্ন কর্মকান্ড চালিয়ে বর্তমান অন্তবর্তী সরকারকে ব্যর্থ করার প্রয়াস চালাচ্ছেন।
উক্ত সিন্ডিকেট বিআইডব্লিউটিএ’তে অচলাবস্থা সৃষ্টির জোর পাঁয়তারা চালিয়ে যাচ্ছেন। এর মূল পরিকল্পনা রয়েছেন হানিফের ভাগ্নে সুলতান আহমেদ খান। সম্প্রতি বিআইডব্লিউটিএ'র শ্রমিক দলের সভাপতি মাজহারুল ইসলামকে মেরে তার ডান হাত ভেঙে দেয় সুলতান বাহিনী। সুলতান নিজেকে সৎ, মেধাবী ও নিষ্ঠাবান পরিচয় দিয়ে মামলা থেকে বাঁচার চেষ্টা করছেন বলে জানা গেছে।
বিআইডব্লিউটিএ নৌ পরিবহন মন্ত্রণালয়ের একটি গুরুত্বপূর্ণ সংস্থা। এই সংস্থায় চাকরি করতেন তত্ত্বাবধায়ক প্রকৌশলী সুলতান আহমেদ খান। তিনি প্রভাবশালী আওয়ামী লীগ নেতা মাহবুবুল আলম হানিফের ভাগ্নে। মামার পরিচয়েই বিগত ১৫ বছর তিনি এককভাবে বিআইডব্লিউটিএ-কে কুক্ষিগত করে রেখেছিলেন। সুলতানের হুকুম ছাড়া কেউ কোন কাজ করলে তার উপর নেমে আসতো খড়গ। বদলি, নিয়োগ ও টেন্ডার বাণিজ্য নিয়ন্ত্রণ করতেন সুলতান সিন্ডিকেট। সুলতানের একান্ত বিশ্বস্ত শ্রমিক লীগের বর্তমান সাধারণ সম্পাদক সনজিব কুমার দাসকে দিয়ে বিভিন্ন মিডিয়ায় নিউজ করিয়ে সুলতান থাকেন ধরাছোঁয়ার বাইরে।
গত ২ অক্টোবর সুলতান আহমেদ খানকে বিআইডব্লিউটিএ থেকে তাৎক্ষনিক অব্যাহতি দেয়া হয়। তার বিরুদ্ধে আনীত অভিযোগের তদন্ত চলছে। কিন্তু এখনো তিনি বেপরোয়া। তিনি তার সাঙ্গঁ-পাঙ্গঁদের দিয়ে বিভিন্ন অনৈতিক কর্মকান্ড চালিয়ে যাচ্ছেন। যেকোন সময় রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষ ঘটতে পারে বলে আকাক্ষা করা হচ্ছে। সুলতান খুব ঠান্ডা মাথায় তার বাহিনীর নেতৃত্ব দিচ্ছেন। বি আইডব্লিউটিএ'র কর্মকর্তা-কর্মচারীরা চিহ্নিত দুর্নীতিবাজ সুলতান ও তার দলবলসহ গ্রেফতার করে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দাবি করেছেন।
সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও আওয়ামী লীগের সাবেক যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মাহবুব-উল আলম হানিফের ব্যবসায়িক পার্টনার ভাগিনা তত্ত্বাবধায়ক প্রকৌশলী মো. সুলতান আহমেদ খানের হাত থেকে বিআইডব্লিউটিএ রক্ষা পেলেও তার দাপট এখনো কমেনি। বিআইডব্লিউটিএ উন্নয়ন প্রকল্পের বাস্তবায়ন বন্ধ করতে পতিত সরকারের দোসররা ষড়যন্ত্র চালিয়ে আসছে। তারা সরকারকে বেকায়দায় ফেলতে নানা ধরনের মন্তব্য করেন অফিসে বসেই।
বিআইডব্লিউটিএতে শ্রমিক লীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক ও অবসরপ্রাপ্ত নিম্নমানসহকারি রফিকুল ইসলামের নেতৃত্বে সংঘবদ্ধ হয়ে শ্রমিক দলের সভাপতি মাজহারুল ইসলামকে (৫৫) হামলা চালিয়ে গুরুত্বর আহত করেছে। হামলার মূল নায়ক ছিলেন হানিফের ব্যবসায়িক পার্টনার ভাগিনা বিআইডব্লিউটিএ'র তত্ত্বাবধায়ক প্রকৌশলী মো.সুলতান আহমেদ খান। এ ঘটনায় মতিঝিল থানায় মামলা করা হয়েছে। মতিঝিল থানা পুলিশ ঘটনাস্থল থেকে দুইজনকে গ্রেফতার করেছে। বিগত ১৫ বছর আওয়ামী লীগের সাবেক যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মাহবুব-উল আলম হানিফের প্রভাব খাটিয়ে বিআইডব্লিউটিএকে কুক্ষিগত করে রেখেছেন ড্রেজিং বিভাগের তত্ত্বাবধায়ক প্রকৌশলী মো. সুলতান আহমেদ খান। এছাড়া সাবেক নৌ মন্ত্রী শাহজানা খান ও তার জামাই সাবেক এমপি ছোট মনিরের প্রভাবখাটিয়ে এসব দুর্নীতি করত বলে অভিযোগ রয়েছে।
সুলতান পাবনা ও কুষ্টিয়া ড্রেজিং প্রকল্পের পরিচালক নিয়োগ পেয়ে সরকারি ১২শ’ কোটি টাকা কাজ না করে লুটপাট করেছেন। অভিযোগ রয়েছে, নদী খনন প্রকল্পের মাটি বিক্রি করেই প্রায় ৬/৭শ কোটি টাকা লোপাট করে নিয়েছেন ড্রেজিং বিভাগের এই তত্ত্বাবধায়ক প্রকৌশলী। এসব ঘটনায় গত ২ অক্টোবর তত্ত্বাবধায়ক প্রকৌশলী মো.সুলতান আহমেদ খানকে নৌপরিবহন অধিদপ্তরে সমপদে প্রেষণে পদায়ন করা হয়েছে। নৌ পরিবহন মন্ত্রণালয়ের উপ-সচিব মোসাম্মত শুকরিয়া পারভীন স্বাক্ষরিত এ আদেশ জারি করা হয়। এছাড়া একই দিনে বিআইডব্লিউটিএ থেকে তাকে তাৎক্ষণিক অব্যাহতি প্রদান করা হয়েছে।
বাংলাদেশ অভ্যন্তরীণ নৌ-পরিবহন কর্তৃপক্ষের চেয়ারম্যান কমডোর আরিফ আহমেদ মোস্তফা বলেন, বিআইডব্লিউটিএ'র তত্ত্বাবধায়ক প্রকৌশলী মো.সুলতান আহমেদ খানকে বদলী করা হয়েছে। তার বিরুদ্ধে অভিযোগ তদন্ত করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়া হবে।
দেশের অভ্যন্তরীণ নৌপথ সংরক্ষণ ও নৌযান ব্যবস্থাপনা এবং আঞ্চলিক ব্যবসা বাণিজ্যের অন্যতম সহায়ক হিসেবে কাজ করে বিআইডব্লিউটিএ (বাংলাদেশ অভ্যন্তরীণ নৌ-পরিবহন কর্তৃপক্ষ)। নারায়ণগঞ্জের শীতলক্ষ্যা, বুড়িগঙ্গা, ধলেশ্বরী, মেঘনা নদীকে ঘিরে নৌপথের মূলব্যবসা-বাণিজ্য পরিচালিত হয়। সদরঘাট থেকে শুরু করে নারায়ণগঞ্জ, মুন্সিগঞ্জ ও চাঁদপুরে নৌপথের নিরাপত্তার দায়িত্বে থাকা বিআইডব্লিউটিএ বিগত আওয়ামী লীগ সরকারের সময় অনিয়ম আর দুর্নীতির আখড়ায় পরিণত হয়েছিল। যার খেসারত দিতে হচ্ছে অন্তর্র্বতী সরকারকে। লোকসানের মুখে এই বিভাগের খুব তাড়াতাড়িই উত্তরণের সম্ভবনা খুবই ক্ষীণ।
১৯৯৬ সালে বিআইডব্লিউটিএতে সম্পূর্ণ অবৈধভাবে চাকুরীতে প্রবেশ করেন সুলতান আহমেদ খান। নিয়োগ বিজ্ঞপ্তিতে ১০ জন নিয়োগের কঠোর সিদ্ধান্ত থাকলেও শুধুমাত্র মামার জোরে ১৩ নম্বর ব্যক্তিসহ সর্বমোট ১৩ জনকেই চাকরি দিতে বাধ্য করা হয় বিআইডব্লিউটিএ কর্তৃপক্ষকে। এতে বেতন ভাতা বাবদ বিপুল পরিমাণ রাজস্ব হারাতে হয়েছে সংস্থাটিকে। মামার আশীর্বাদপুষ্ট হওয়ায় সম্পূর্ণ গায়ের জোরে একের পর এক পদোন্নতি পেয়ে তার কপাল খুলে যায়। সুলতান এখন শতকোটি টাকার মালিক। থাকেন উত্তরার একটি আলিশান ফ্ল্যাটে। তিনি সব সময় বলে বেড়াতেন আওয়ামী লীগ ২০৪১ সাল পর্যন্ত রাস্ট্রীয় ক্ষমতায় থাকবে। তাই তাকে স্পর্শ করার ক্ষমতা কারো নেই বিআইডব্লিউটিএতে। সুলতান নিজেকে অসুস্থ দাবি করে বলেন, আমার একটি কিডনি নষ্ট হয়ে গেছে। কিছু লোক আমার বিরুদ্ধে হয়রানি মূলক নিউজ করাচ্ছেন।
সুলতান খান বিআইডব্লিউটিত্রর ড্রেজিংয়ের মংলা-পাকশী প্রকল্পের প্রকল্প পরিচালক (পিডি) হিসেবে বহাল তবিয়তে রয়েছেন। অবৈধভাবে গায়ের জোরে উপ-সহকারী প্রকৌশলী পদে নিয়োগ পাওয়ার পর ২০০৯ সালে একই স্টাইলে সহকারি পদে পদোন্নতি লাভ করেন। তার খুটির জোর ছিলেন কুষ্টিয়ার আলোচিত সাবেক এমপি মাহবুবুল আলম হানিফ। যিনি এক সময় সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বিশেষ সহকারি হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। সুলতান খানের বিরুদ্ধে আরো অভিযোগ হচ্ছে, তিনি বৈষম্য বিরোধী ছাত্র-জনতার আন্দোলন ঠেকাতে পতিত সরকারের পক্ষে নগদ টাকা বিনিয়োগ করেছেন। মাহবুবুল আলম হানিফের বড় ভাই ১৯৯৬ সালে নৌপরিবহন মন্ত্রণালয়ের যুগ্ম সচিব রাশেদুল হাসানের আশীর্বাদেই মূলত অবৈধভাবে সুলতান আহমেদ খানকে চাকরি দেয়া হয়। প্রকৌশলী সুলতান আহমেদ খানের দুই মামা অত্যন্ত প্রভাবশালী হবার সুবাধে তার ক্ষমতার হাত ছিল অনেক লম্বা। তিনি ৫ আগস্টের আগে কাউকেই পাত্তা দিতেন না। তার দাপটে ভবনের অনেক কর্মকর্তা-কর্মচারি ছিলেন অসহায়। সহকারি প্রকৌশলী হিসেবে পদোন্নতির ক্ষেত্রেও তাকে অনৈতিকভাবে সুবিধা দেয়া হয়েছে বলে অভিযোগ উঠেছে। পদোন্নতির ক্ষেত্রে ৭ টি পদ শূন্য থাকার পরও সুলতান আহমেদ খানকে পদোন্নতি দিতে বাধ্য হয়েছে বিআইডব্লিউটিএ কর্তৃপক্ষ। প্রকৌশলী সুলতান আহমেদ খানের ক্রমিক ছিল ৯ নম্বরে। তার পদোন্নতির ক্ষেত্রেও বিআইডব্লিউটিএ কর্তৃপক্ষ আত্মসমর্পণ করেন সুলতান আহমেদের ক্ষমতার কাছে।২০০৯ সাল থেকে ২০২৪ সাল পর্যন্ত মামা মাহবুবুল আলম হানিফের দাপট দেখিয়ে উর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের কাছ থেকে অনৈতিক সুবিধা নিয়েছেন সুলতান আহমেদ খান। বদলী ও নিয়োগ বাণিজ্যের মাধ্যমে তিনি বিপুল পরিমাণ অর্থ উপার্জন করেন বলেও অভিযোগ রয়েছে তার বিরুদ্ধে। পাবনা জেলার শতাধিক লোকজনের কাছ থেকে মোটা অঙ্কের অর্থ সংগ্রহ করে তাদের চাকরি দিয়েছেন ।জানা যায়, সুলতান আহমেদ খান যে প্রকল্পের প্রকল্প পরিচালক সেই প্রকল্পের দুইজন পিডি যারা মন্ত্রণালয়ের যুগ্ম সচিব তাদেরকে সরিয়ে তাকে প্রকল্প পরিচালক হিসেবে দায়িত্ব দেয়া হয়। মাহবুবুল হানিফের দোহাই দিয়ে নানা ভয়ভীতি দেখিয়ে নির্বাহী প্রকৌশলী পদমর্যাদার একজন (৬ষ্ঠ গ্রেড) কর্মকর্তা সুলতান আহমেদ খান পদটি নিয়েছেন। একজন ডিপ্লোমা প্রকৌশলী হয়েও ভুয়া সার্টিফিকেটের মাধ্যমে তত্ত্বাবধায়ক প্রকৌশলী হিসেবে পদোন্নতি নিয়েছেন। এছাড়া ১২শ’ কোটি টাকার প্রকল্পের পরিচালক হয়ে পাবনা ও কুষ্টিয়া এলাকার ড্রেজিং এর মাধ্যমে খননকৃত মাটি বিক্রি করেই প্রায় ৬/৭শ কোটি টাকা লোপাট করা হয়েছে বলে তার বিরুদ্ধে অভিযোগে বলা হয়েছে। এসব মাটি বিক্রি করে রাস্ট্রীয় কোষাগারে জমা না দিয়ে তিনি সমুদয় রাজস্ব আত্মসাৎ করেন। যা নিয়ে সচেতনমহলে ব্যাপক ক্ষোভ থাকলেও মামার প্রভাবের কারণে এতোদিন কেউ প্রতিবাদ করতে পারেননি। কিন্তু এখন মুখ খুলছেন অনেকেই।এ ব্যাপারে ঢাকা বিভাগের দুর্নীতি দমন কমিশনের উপ-পরিচালকের নেতৃত্বে তদন্ত অব্যাহত । অন্তর্বতীকালীন সরকার ক্ষমতায় আসার পর নৌপথের নাব্য-সংরক্ষণ ও নৌযান ব্যবস্থাপনায় নিয়োজিত এ সংস্থার দায়িত্ব পান ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব:) সাখাওয়াত হোসেন তিনি বলেন, তার নেতৃত্বে সংস্থাটি যখন ঘুরে দাঁড়ানোর চেষ্টা করছে তখন শুরু হয় ষড়যন্ত্র। পতিত সরকারের ঘাপটি মেরে থাকা দোসররা বিআইডব্লিউটিএকে অকার্যকর করতে গোপনে চালিয়ে যাচ্ছে নানারকমের অপতৎপরতা। তবে নৌখাতকে জনগণের ব্যবহারের উপযোগী হিসেবে গড়ে তোলার জন্য নানা কর্মসূচি নিয়েছে সরকার। পাশাপাশি অতীতের মতো এখানে আর কোনো ধরনের দুর্নীতি ও কোনো ধরনের অন্যায় প্রশ্রয় দেয়া হবে না বলে হুঁশিয়ারি দেয়া হয়েছে। বিআইডব্লিউটিএর কর্মকর্তা-কর্মচারীদের অতীত কর্মকান্ড ভুলে সততা এবং নিষ্ঠার সাথে সংশ্লিষ্টদের দায়িত্ব পালনের আহ্বান জানিয়েছেন উপদেষ্টা। একই সাথে ভবিষ্যতে যেকোনো দুর্নীতি ও অনিয়মের ব্যাপারে সতর্ক থাকার হুঁশিয়ারি দেন তিনি। কিন্তু আওয়ামী লীগ সরকারের কতিপয় সুবিধাভোগী উপদেষ্টার এ আহ্বানকে উপেক্ষা করে চলেছে। তারা সংস্থার মেধাবী ও পরিশ্রমী কর্মকর্তাদের নিষ্ক্রিয় ও অকার্যকর করার পাঁয়তারা করছেন।নাম প্রকাশ না করার শর্তে বিআইডব্লিউটিএ'র একজন কর্মকর্তা জানান, বিভিন্ন সংস্থা ও দফতরে বেনামি চিঠি দিয়ে বিভিন্নভাবে অনেককে হয়রানি করছে। এতে সংস্থার সৎ কর্মকর্তারা সামাজিক এবং পারিবারিকভাবে বিব্রতকর পরিস্থিতির মুখে পড়ছেন। অনেকে হারিয়ে ফেলছেন কর্মস্পৃহা। এ চক্রের মূল নেতৃত্বে আছেন ড্রেজিং বিভাগের তত্ত্বাবধায়ক প্রকৌশলী সুলতান খান। আওয়ামী লীগের সাবেক যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মাহবুব-উল আলম হানিফের ব্যবসায়িক পার্টনার হিসেবে পরিচিত সুলতান বিগত ১৫ বছর হানিফের প্রভাব খাটিয়ে বিআইডব্লিউটিএ'তে একক আধিপত্য বিস্তার করে ছিলেন। ওই সময় তার ভয়ে সবাই থাকতেন তটস্থ। আর তার এসব কাজের সহযোগী হচ্ছেন চতুর্থ শ্রেণির কর্মচারী সনজিব কুমার দাস। সাবেক নৌ-পরিবহনমন্ত্রীর প্রভাব খাটিয়ে ওই কর্মচারীকে নিয়োগ দিয়েছেন। ধর্ষণ মামলায় বেশ কিছুদিন কারাভোগী এ কর্মচারী বর্তমানে সাময়িক বরখাস্ত অবস্থায় থাকলেও তার ষড়যন্ত্রমূলক কর্মকান্ড থেমে নেই।সম্প্রতি উপদেষ্টা এম সাখাওয়াত হোসেন নদীবন্দরের সার্বিক কার্যক্রমে সন্তোষ প্রকাশ করে বলেন, বন্দরের প্রত্যেক কর্মকর্তা-কর্মচারীকে সততা ও দক্ষতার সাথে অর্পিত দায়িত্ব পালনে সচেষ্ট থাকতে হবে। ঢাকা নদীবন্দরের ঘাটের রাজস্ব বাড়াতে উদ্যোগী ভূমিকা রাখতে তাগিদ দিয়ে তিনি বলেন, আইনশৃঙ্খলা বাহিনী ও সেনাবাহিনীর সাথে সমন্বয় করে দ্রুত রাজস্ব আদায় কার্যক্রম সচল করতে হবে। প্রতিটি ঘাট বা পয়েন্টে সরকার নির্ধারিত রেট চার্ট স্থাপন করতে হবে দৃশ্যমান স্থানে।এদিকে ২৩ অক্টোবর বিকেল সাড়ে ৪টার দিকে বিআইডব্লিউটিএতে শ্রমিক লীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক ও অবসরপ্রাপ্ত নিম্নমানসহকারি রফিকুল ইসলামের নেতৃত্বে সংঘবদ্ধ হয়ে শ্রমিক দলের সভাপতি মাজহারুল ইসলামকে (৫৫) হামলা চালিয়ে গুরুত্বর আহত করে। মতিঝিল থানা পুলিশ ঘটনাস্থল থেকে দুইজনকে গ্রেফতার হয়। এ ঘটনায় মতিঝিল থানায় মামলা করা হয়েছে।তবে আসামীরা জামিনে মুক্তি পেয়ে শ্রমিক দলের সভাপতি মাজহারুল ইসলামকে মামলা উঠিয়ে নিতে ভয় ভীতি দেখাচ্ছেন। অন্যথায় তাকে মেরে ফেলা হবে বলে হুমকি প্রদান করা হচ্ছে।মামলার এজহার বলা হয়, বিআইডব্লিউটিএয়ের বন্দর ও পরিবহন বিভাগের সহকারি বর্তমান শ্রমিক দলের সভাপতি মাজহারুল ইসলাম অফিস শেষে বাসায় ফেরার জন্য নিচে নামেন। এসময় আগ থেকেই ওঁৎপেতে থাকা শ্রমিক লীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক ও অবসরপ্রাপ্ত নিম্নমানসহকারি রফিকুল ইসলামের নেতৃত্বে ৮/১০ জনের একটি সংঘবদ্ধ গ্রুপ মাজহারূলের উপর এলোপাথারী হামলা চালায়। সন্ত্রাসীদের লাঠিপেঠায় মাজহারুলের ডান হাত ভেঙ্গে গেছে। তাকে উদ্ধার করে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। উপস্থিত জনতা ঘটনাস্থল থেকে রফিকুল ইসলাম ও ছেলে ইব্রাহীমকে আটকিয়ে মতিঝিল থানা পুলিশের কাছে সোপর্দ করেন।এসময় ঘটনাস্থল থেকে ওমর ফারুক ওরফে ইসলামুল, সনজিব কুমার দাস (সাময়িক বরখাস্তকৃত এবং বর্তমান শ্রমিক লীগের সাধারন সম্পাদক) পান্না বিশ্বাসসহ (বঙ্গবন্ধু পরিষদের যুগ্ম সাধারন সম্পাদক ও শ্রমিক লীগের সাংগঠনিক সম্পাদ) শ্রমিক লীগের ৮/১০ সদস্য পালিয়ে যায়।সনজিব কুমার দাস বিভিন্নভাবে শ্রমিক দলের সভাপতি মাজহারুলকে মেরে ফেলার হুমকি দিচ্ছেন।তিনি এতটাই বেপরোয়া যে টাকার জন্য খুনের ঘটাতে চিন্তা করেন না। সনজিব কখনো শাজাহান খান আবার কখনো বাহাউদ্দিন নাসিমের নাম বিক্রি করেন।গণপূর্ত, সওজ, ওয়াসা, তেজগাঁও সাবরেজিষ্ট্রি অফিসসহ বিভিন্ন দপ্তরে সনজিব বেসরকারি টেলিভিশন, দেনিক জাতীয় পত্রিকা এবং অনলাইন পোর্টালের নামী-দামী রিপোর্টাদের নাম ভাঁঙ্গিয়ে চাঁদাবাজি করে বলে অভিযোগ জানা গেছে।সাংবাদিকদের বিভিন্ন সংগঠনের নেতৃবৃন্দ ইতোমধ্যে সনজিবের বিষয়টি অবগত হয়েছেন।সনজিবের সাথে অস্ত্রধারী সন্ত্রাসীদের সাথে সম্পর্ক থাকায় তাকে বিআইডব্লিউটিএ’র উধ্বর্তন কর্মকর্তারা ভয় পেয়ে থাকেন।৫ আগষ্টের আগে সনজিব একটি কাজের টেন্ডারের বিষয় নিয়ে উধ্বর্তন কর্মকর্তাকে তার দলবল নিয়ে লাঞ্চিত করার চেষ্টা করেন। এরকম অসংখ্য অপকর্মের মূল হোতা সনজিব কুমার দাশ।
মতিঝিল থানায় ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মহিউল ইসলাম বলেন, বিআইডব্লিউটিএয়ের বন্দর ও পরিবহন বিভাগের সহকারি বর্তমান শ্রমিক দলের সভাপতি মাজহারুল ইসলাম অফিস শেষে বাসায় ফেরার জন্য নিচে নামেন। এসময় শ্রমিক লীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক ও অবসরপ্রাপ্ত নিম্নমানসহকারি রফিকুল ইসলামের নেতৃত্বে সংঘবদ্ধ ৮/১০ তার উপর হামলা করে। মাজহারুল ইসলাম বাদি হয়ে মতিঝিল থানায় মামলা করেছেন। ঘটনাস্থল থেকে উপস্থিত লোকজনের সহযোগিতায় রফিকুল ইসলাম ও ছেলে ইব্রাহীমকে গ্রেফতার করা হয়েছে। বিআইডব্লিউটিএ-সাবেক তত্ত্বাবধায়ক প্রকৌশলী মো.সুলতান আহমেদ খানের ফোনে যোগাযোগ করা হলে তিনি কথা বলতে রাজি হননি।
Editor & Publisher : Md. Motiur Rahman
Pritam-Zaman Tower, Level 03, Suite No: 401/A, 37/2 Bir Protik Gazi Dastagir Road, Purana Palton, Dhaka-1000
Cell : (+88) 01706 666 716, (+88) 01711 145 898, Phone: +88 02-41051180-81