02/23/2025
বিশেষ প্রতিনিধি | Published: 2024-11-24 12:00:00
দীর্ঘদিন যাবৎ গণপূর্ত অধিদপ্তরে প্রধান প্রকৌশলী পদে নিয়োগের ব্যাপারে জোর গুঞ্জন চলছে কে হচ্ছেন প্রধান প্রকৌশলী? দিন দিন এর ডালাপালা বিভিন্ন ভাবে গণমাধ্যমে উঠে আসছে। ৫ আগষ্ট সরকার পতনের পর যখন নতুন করে সংস্কার কার্যক্রম বর্তমান তত্ত্ববধায়ক সরকার হাতে নিয়েছে ঠিক তখনই গণপূর্ত অধিদপ্তরে পতিত সরকারের আশীর্বাদপুষ্ট ঠিকাদার, দুর্নীতিবাজ প্রকৌশলী ও পেশীশক্তির সমন্বয়ে গঠিত একটি শক্তিশালী সিন্ডিকেট মিলে সর্বমহলে দুর্নীতিবাজ হিসেবে পরিচিত মোসলেহ উদ্দিনকে প্রধান প্রকৌশলী পদে বসাতে কোটি টাকার মিশন নিয়ে মাঠে নেমেছে।
তত্ববধায়ক সরকারের গণপূর্ত উপদেষ্টা একজন সজ্জন ব্যক্তি হিসেবে সর্বমহলে সমাদৃত ও পরিচিত। কিন্তু তারই মন্ত্রনালয়ে পতিত সরকারের দোসর ও দুর্নীতিবাজ একজন প্রকৌশলীকে যদি রাষ্ট্রের গুরুত্বপূর্ণ গণপূর্ত অধিদপ্তরের প্রধান প্রকৌশলী হিসেবে বসানো হয় তাহলে বর্তমান সরকারের যে মূল এজেন্ডা দুর্নীতিবাজদের বিরুদ্ধে তা প্রম্নবিদ্ধ হবে।
গণপূর্ত অধিপ্তর প্রতিষ্ঠার পর থেকে এ যাবৎকালে সবচেয়ে গ্রহনযোগ্য প্রধান প্রকৌশলী হিসেবে সর্বমহলে বিবেচিত হচ্ছেন বর্তমান দায়িত্বপ্রাপ্ত শামীম আখতার। তার দায়িত্বভার গ্রহন করার পর থেকেই জি. কে শামীম সিন্ডিকেট ও তাদের আশীর্বাদপুষ্ট প্রকৌশলীগণ নানামুখী ষড়যন্ত্রে লিপ্ত। শুধু তাই নয়, গৃহায়ন ও গণপূর্ত মন্ত্রনালয়ের সাবেক একজন সচিব ও তার দুর্নীতি ও অনিয়মকে প্রতিষ্ঠা করতে শামীম আখতারের বিরুদ্ধে তার আর্শিবাদপুষ্টদের বিভিন্ন ভাবে প্রভাবিত করেছে। সেই একই চক্র মোসলেহ উদ্দিনকে প্রধান প্রকৌশলী পদে বসাতে মন্ত্রনালয়কে ভুল বুঝাতে ও টাকার বস্তা নিয়ে মিশনে নেমেছে বলে অভিযোগ রয়েছে।
কে এই মোসলেহ উদ্দিন:-
গণপূর্ত অধিদপ্তরের ঢাকা জোনের সাবেক অতিরিক্ত প্রধান প্রকৌশলী মোসলেহ উদ্দিন বির্তকিত যুবলীগ নেতা ও ঠিকাদার জি.কে শামীম চক্রের অন্যতম সদস্য হিসেবে সর্বমহলে সুপরিচিত। যিনি গণপূর্ত অধিদপ্তরে মিষ্টার “ফিফটিন পার্সেন্ট” নামে পরিচিত। যেখানেই প্রকল্প সেখানেই তার পার্সেন্টেজ থাকবে। তার বিরুদ্ধে দুর্নীতি দমন কমিশনে একাধিক অভিযোগ রয়েছে। শুধু তাই নয় গোলাম কিবরিয়া শামীম (জি.কে শামীম) এর বিরুদ্ধে দুর্নীতি দমন কমিশনে অনুসন্ধানেও তার নাম উঠে আসে। দুদকের অনুসন্ধান চলাকালে তার সংশ্লিষ্টতা মিলেছে বলে দুদক সূত্রে জানা গেছে। এমনকি এসব অভিযোগের বিষয়ে তলব করা হলে মোসলেহ উদ্দিন দুদকে গিয়ে আত্মপক্ষ সমর্থন করে বক্তব্য দিয়ে এসেছে।
শত দুর্নীতির দায়ে অভিযুক্ত মোসলেহ উদ্দিন কে জাতীয় গৃহায়ন কর্তৃপক্ষের সদস্য (প্রকৌশলী ও সমবায়) পদ থেকে গৃহায়ন ও গণপূর্ত মন্ত্রনালয়ে গত ২৪ অক্টোবর ন্যস্ত করার কাজ সম্পন্ন করেছে। এখন তাকে গণপূর্ত অধিদপ্তরে প্রধান প্রকৌশলী পদে বসাতে চক্রটি পুরোদমে কাজ করে যাচ্ছে।
মোসলেহ উদ্দিনের রাজনৈতিক পরিচয়:-
ছাত্রজীবনে খুলনা প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রলীগের রাজনীতির সাথে সম্পৃক্ত ছিলেন মোসলেহ উদ্দিন। তার ভাই পতিত আওয়ামী লীগ সরকার ক্ষমতায় আসার পর ২৫ তম বিসিএসে যোগ দিয়ে পুলিশের এসপি হিসেবে র্যাব-৮ ও এসবিতে দায়িত্ব পালন করছেন। বর্তমানে মোসলেহ উদ্দিন নিজেকে বিএনপির একনিষ্ঠ সমর্থক হিসেবে নিজেকে জাহির করছেন।
মোসলেহ এর বিরুদ্ধে দুনীতির অভিযোগ:
২০২০ সালে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক) মোসলেহ উদ্দিন এর বিরুদ্ধে অনুসন্ধান শিুরু করে। অনুসন্ধানের চিঠিতে সরকারী কর্মকর্তাদের শত শত কোটি টাকা ষুষ দিয়ে বড় বড় কাজ ভাগিয়ে নিয়েছেন জি. কে শামীম সহ অন্যান্য ঠিকাদাররা। এর মেধ্যে দিয়ে সরকারী অর্থ আত্মসাৎ এর ঘটনা ঘটেছে। এছাড়াও কেসিনোর সঙ্গে জড়িত শত শত কোটি টাকা আয় করে বিদেশে পাচার করা হয়েছে। জ্ঞাত আয় বর্হিভূত সম্পদ অর্জনের ঘটনা ঘটেছে। এসব অভিযোগের অনুসন্ধান চলছে। সুষ্ট অনুসন্ধানের স্বার্থে আপনার (মোসেলেহ উদ্দিন) বক্তব্য শ্রবন ও গ্রহন করা জরুরি তাই আপনাকে ১৬ই জানুয়ারি সেগুন বাগিচা দুদুক কার্যালয় হাজির হয়ে বক্তব্য উপস্থাপনের জন্য বলা হলো। দুদকের তৎকালীন পরিচালক সৈয়দ ইকবাল সাক্ষরিত পত্রে মাসলেহ উদ্দিন দুদক কার্যালয়ে গিয়ে বক্তব্য উপস্থাপন করে।
মোসলেহ উদ্দিন ১৫তম বিসিএস এর শামীম ১৯৯৫ সালে গণপূর্ত অধিদপ্তরে সরকারী প্রকৌশলী হিসেবে যোগদান করেন। উপ-বিভাগীয় প্রকৌশলী হিসেবে ফেনী, নির্বাহী প্রকৌশলী হিসেবে শেরে বাংলা নগর ঢাকা, এরপর অতিরিক্ত প্রধান প্রকৌশলী হিসেবে চট্রগ্রাম জোনে দায়িত্ব পালন করেন। তারা তিনি যেখানেই গিয়েছে সেখানেই দুর্নীতি ও অনিয়মের সাথে যুক্ত ছিলেন এমন অভিযোগ রয়েছে। তার বিরুদ্ধে যতই অনিয়ম ও দুর্নীতির অভিযোগ আসুক না কেন তিনি পুরোদমে তার মত করেই কর্মজীবনে চালিয়ে গিয়েছেন।
তার বিরুদ্ধে সরকারী তহবিল তছরূপের অভিযোগ রয়েছে। সংসদীয় কমিটিতেও তার বিরুদ্ধে উথ্থাপিত অভিযোগের সত্যতা মিলেছে। এর পরেও তার বিরুদ্ধে কোন মামলা হয় নাই এমনকি সুপারিশ বাস্তবায়িক হয় নাই এর প্রধান কারন তার হাতে রয়েছে অঢেল অর্থবিত্ত ও তিনি ছিলেন পতিত সরকারের দোসর।
যার বিরুদ্ধে এত দুর্নীতি ও অনিয়মের অভিযোগ, তিনি পতিত সরকারের ছিলেন দোসর তাকেই ৫ আগস্ট আন্দোলনের বীর শহীদদের রক্তের বিনিময় অর্জিত তত্বাবধায়ক সরকারের হাত দিয়ে প্রতিষ্ঠা করবে এবং প্রধান প্রকৌশলীর আসনে বসাতে এ যেন বীর শহীদ ছাত্র জনতার রক্তের সাথে খেলা করার শামীম বলে মনে করছে নতুন দুর্নীতিমুক্ত বাংলাদেশ প্রতাশী জনগন।
Editor & Publisher : Md. Motiur Rahman
Pritam-Zaman Tower, Level 03, Suite No: 401/A, 37/2 Bir Protik Gazi Dastagir Road, Purana Palton, Dhaka-1000
Cell : (+88) 01706 666 716, (+88) 01711 145 898, Phone: +88 02-41051180-81