02/23/2025
আবু তাহের বাপ্পা | Published: 2024-12-11 11:28:05
কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের বাজেট অফিসার মোহাম্মদ তাজুল ইসলামের বিরুদ্ধে ব্যাপক অবৈধ সম্পদ অর্জন ওঘুষ গ্রহণের অভিযোগ উঠেছে। তার বিরুদ্ধে সরকারি অর্থ আত্মসাৎ এবং সরকারি কর্মকর্তাদের স্বাক্ষর জালিয়াতিসহ বহুমাত্রিক অভিযোগও রয়েছে।
অনুসন্ধানে জানা গেছে, মাত্র কযেক বছরে সরকারি চাকুরিতে এত বিপুল সম্পদের মালিক বনে যাওয়ার পাশাপাশি মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র কর্মকর্তাদের স্বাক্ষর জালিয়াতির মাধ্যমে অবৈধ প্রমোশান ও বেতন ভাতা গ্রহণের প্রমানীত তথ্য থাকার পরও তিনি আছেন বহাল তবিয়তে।
ঘুষ দূর্ণীতির বাইরে তাজুল ইসলামের বিরুদ্ধে অন্যতম অভিযোগ হচ্ছে , অফিসের শৃঙ্খলা ভঙ্গ ও স্বাক্ষর জালিয়াতি । তিনি মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র কর্মকর্তাদের স্বাক্ষর জাল করে অফিসের শৃঙ্খলা ভঙ্গ করেছেন। অভিযোগ হচ্ছে, তিনি অগ্রিম বেতন-ভাতা অনুমোদন করার জন্য ওই কর্মকর্তাদের স্বাক্ষর জাল করে অবৈধভাবে এই অর্থ উত্তোলন করেছেন। তার এই শৃঙ্খলা ভঙ্গের কারণে মন্ত্রণালয়ে গুরুতর অস্বস্তির সৃষ্টি হয়েছে। কর্তৃপক্ষ বিষয়টি তদন্ত করছে বলে জানা গেছে । তাজুল ইসলাম তার কর্মজীবনের শুরুতে ১৯৯৭ সালে কৃষি মন্ত্রণালয়ের এএস প্রকল্পে জ্যেষ্ঠ হিসাবরক্ষক হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। অভিযোগ উঠেছে, তিনি কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের এসএসপি প্রকল্পের অর্থ আত্মসাৎ করেছেন। এই অর্থ দিয়ে তিনি নিজ গ্রামে বিশাল সম্পদ গড়ে তোলেন। তিনি পরিবেশ অধিদপ্তরের অনুমোদন ছাড়াই দুটি ইটের ভাটা স্থাপন করেছেন। ময়মনসিংহে একটি ১০ তলা মার্কেটও নির্মাণ করেছেন। সিভিল অডিট অধিদপ্তরও তাজুল ইসলামের বিরুদ্ধে ৫ লাখ টাকা আর্থিক ক্ষতির অডিট আপত্তি উত্থাপন করা হয়েছে। ওই রিপোর্টে দেখা গেছে, ২০০৪ থেকে ২০০৯ সাল পর্যন্ত তিনি সরকারের অর্থ আত্মসাৎ করেছেন। তিনি সরকারি কোষাগারে অর্থ জমা না দিয়ে নিজে আত্নসাত করেছেন।
তাজুলের বিরুদ্ধে আরো অভিযোগ উঠেছে , তিনি ১৩ গ্রেডে থাকা অবস্থায় ১২ গ্রেডের বেতন-ভাতা উত্তোলন করেছেন। সরকারি টাকা আত্নসাত করে ব্যক্তিগতভাবে লাভবান হয়েছেন। এতে তাজুলের বিরুদ্ধে কোন আইনী পদক্ষেপ গ্রহণ করা হয়নি।
তাজুলের বিরুদ্ধে আরেকটি গুরুতর অভিযোগ হচ্ছে , তাজুল ইসলাম ২০২০ সালে চাকরি প্রত্যাশী ও আউটসোর্সিং কর্মীদের কাছ থেকে বিপুল পরিমাণ ঘুষ গ্রহণ করেছেন। একাধিক সূত্রের বরাত দিয়ে এই তথ্য জানা গেছে। তিনি চতুর্থ শ্রেণির কর্মচারী নিয়োগের জন্য প্রতি কর্মীর কাছ থেকে এক লাখ থেকে তিন লাখ টাকা করে ঘুষ নিয়েছেন। কৌশলী তাজুল প্রতিবছর বিভিন্ন খাতে ভুয়া বিল ভাউচার তৈরি করে প্রায় ১০ কোটি টাকা হাতিয়ে নিয়েছেন বলে অভিযোগ উঠেছে।
তাজুল ইসলামের বিরুদ্ধে ওঠা এসব অভিযোগ প্রশাসনিক ও রাজনৈতিক অঙ্গনে ব্যাপক বিতর্ক সৃষ্টি হয়েছে। তিনি এলাকায় একজন শিল্পপতি ও ব্যবসায়ী হিসেবে পরিচিত, তবে তার এই অবৈধ কর্মকাণ্ডে এলাকায় সাধারণ মানুষও হতাশ।
সরজমিনে তাজুলের এলাকায় গিয়ে স্থানীয় বাসিন্দাদের সাথে কথা হয় এ প্রতিবেদকের। একজন চা বিক্রেতা জানান, তাজুল ইসলামের বিপুল সম্পদ দেখে আমরা অবাক। তার মতো একজন তৃতীয় শ্রেণীর কর্মচারী কীভাবে এত বিশাল সম্পত্তির মালিক হতে পারেন তা নিয়ে আমার চা স্টলে মাঝে মধ্যেই বিভিন্ন শ্রেণি পেশার মানুষ কথা উঠান। এলাকার মানুষের সাথে তাজুল ইসলাম খুব দাম্ভিকতা দেখান। ছোট পরিবার থেকে উঠে আসা তাজুল ইসলাম চাকরি করে ঘুষ বাণিজ্য'র মাধ্যমে শিল্পপতি বনে গেছেন।
তদন্তকারী কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, তাজুল ইসলামের বিরুদ্ধে উত্থাপিত অভিযোগ গুলো গুরুতর। প্রতি পৃষ্ঠায় তার অনিয়ম-দুর্নীতির অভিযোগ মিলছে।
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, তাজুল ইসলামের মতো কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা না নেওয়া হলে এরকম ঘটনা ভবিষ্যতে আরো বাড়তে পারে।
অভিযোগের বিষয়ে তাজুল ইসলাম জানান, তার বিরুদ্ধে যে অভিযোগ তা সত্য নয়। অডিটে উঠে আসা আপত্তির জবাব তিনি দিয়েছেন। অফিস তা গ্রহণ করেছে। আর যে সব সম্পদের কথা বলা হচ্ছে পৈত্রিক সম্পত্তি ।
Editor & Publisher : Md. Motiur Rahman
Pritam-Zaman Tower, Level 03, Suite No: 401/A, 37/2 Bir Protik Gazi Dastagir Road, Purana Palton, Dhaka-1000
Cell : (+88) 01706 666 716, (+88) 01711 145 898, Phone: +88 02-41051180-81