02/23/2025
মোঃ মাহাবুবুর রহমান | Published: 2025-01-15 16:27:39
কাস্টমস এক্সসাইজ ও ভ্যাট কমিশনারেট ঢাকা (দক্ষিন) এর বিভাগীয় অফিস ও সার্কেল গুলোতে খোদ কমিশনারের অফিস আদেশ কার্যকর হয় না।বিগত ১০/০৯/২৩ইং তারিখে কমিশনারেট ঢাকা (দক্ষিন) এর কমিশনার শওকত আলী সাদী স্বাক্ষরিত অফিস আদেশ স্বারক নং-২(২৩)জন প্রশ্ন:/সদর/বিবিধ/ও দপ্তর আদেশ/০৬/২০২১/৫৪২(১-১০)এ কাস্টমস, এক্সসাইজ ও ভ্যাট কমিশনারেট (দক্ষিন) ঢাকা এর আওতাধীন মাঠ পর্যায়ে বিভাগীয় দপ্তর ও সার্কেল সমূহ এক অফিস আদেশ জারি করা হয়।
উক্ত আদেশে বহিরাগত কোন ব্যক্তি দ্বারা দাপ্তরিক কাজ না করার জন্য বিভিন্ন সময়ে নির্দেশনা প্রদান করা হয় বলে উল্লেখ করা হয়।বহিরাগত ব্যক্তিগণ যাহারা বিভিন্ন দাপ্তরিক কর্মকান্ডে নিয়োজিত থাকার ফলে বিভিন্ন ধরনের অপকর্মে জড়িয়ে রাজস্ব আদায়ে প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করে। এর ফলে দপ্তরের ভাবমুর্তি ক্ষুন্ন হয়। সুতারাং বিভাগীয় দপ্তর ও সার্কেল সমূহ বহিরাগত ব্যক্তিদের অপসরন জন্য নির্দেশনা প্রদান করা হয়।উক্ত আদেশে এও উল্লেখ করা হয় যদি কোন বিভাগীয় দপ্তরে বহিরাগত ব্যক্তিদের উপস্থিতি প্রমাণ পাওয়া যায় তাহলে দপ্তর প্রধানকে দায়ী করা হবে এবং আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহন করা হবে।কিন্তু উক্ত আদেশটি আইন সম্মত বা এরবিআরএর বিধি মোতাবেক ছিল কি না তা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে।অফিস আদেশ টি যদি বিধি মোতাবেক হয়ে থাকে তাহলে উক্ত আদেশ টি কেন কার্যকর করা হয় নাই। প্রশ্ন জাগছে তাহলে কি খোদ কমিশনারের আদেশ মানে না তার দপ্তর সমূহ?
“দ্য ফিন্যান্স টুডে” অনুসন্ধানে উঠে এসেছে কমিনাশনার শওকত আলী সাদীর আদেশ কেন কার্যকর হয়নি তার মূল রহস্য মূলত:- শুধু ঢাকা দক্ষিণ কমিশনারেটই নয় পুরো বাংলাদেশের চিত্র এটি। উচ্চপদস্থ কর্মকর্তারা বহিরাগত ব্যক্তিদের দিয়েই মূলত: রাঘব বোয়ালদের সাথে আলাদা সখ্যতা গড়ে তুলে সরকারের রাজস্ব আদায়ের কার্যক্রমকে বিঘ্নিত করে নিজেদের আখের গুছিয়ে নেয়। রাজস্ব কর্মকর্তা থেকে শুরু করে এনবিআর এর মেম্বার পর্যন্ত অধিকাংশ কর্মকর্তাগণ শতশত কোটি টাকার মালিক। এরা বহিরাগতদের মাধ্যমেই ছিপে টোপ দিয়ে যেমন ছোট টাকি মাছ বড়শিতে গেঁথে বড় বোয়াল ধরা হয় ঠিক তেমনি বহিরাগতদের দিয়েই অবৈধ লেনদেনের হাতিয়ার বানায়।
“দ্য ফিন্যান্স টুডে” দীর্ঘ ধারাবাহিক অনুসন্ধানে উঠে এসেছে কিভাবে একজন সিপাই ও অফিস সহায়ক কোটি কোটি টাকার মালিক হয়। বহিরাগত/আউটসোর্সিং এর মাধ্যমে যাদের টোপ হিসেবে ব্যবহার করা হয় কোন অনিয়মের কারনে ধরা পড়লে কর্তৃপক্ষ তাদের দায়-দায়িত্ব নেয় না।পার পেয়ে যায় রাঘব বোয়ালেরা।এ সমস্ত রাঘব বোয়ালদের তথ্য আসলে এরা ক্ষমতা ও অর্থ বিত্তের প্রভাব খাটিয়ে গণমাধ্যমের কন্ঠরোধ করতে ও পিছপা হয় না। শুধু তাই নয় গণমাধ্যমের কন্ঠ চেপে ধরে তাহারা উৎসবের ফানুস উড়ায়।
(কেস ষ্টাডি-১)
কাস্টমস এক্সসাইজ ও ভ্যাট কমিশনারেট ঢাকা (দক্ষিন) এর মতিঝিল বিভাগ। এ বিভাগের বিভিন্ন সার্কেলে দেখা গেছে বহিরাগতদের দিয়ে কাজ করানো হচ্ছে। শুধু কাজ করোনোই নয় বিভিন্ন ভাবে ব্যবসায়ীদের হয়রানি করে থাকে এ বিভাগের বহিরাগতরা। তাদের ডিমান্ড মত অবৈধ অর্থ না দিলে ব্যবসায়ীরা হয়রানীর স্বীকার হচ্ছে। মতিঝিল বিভাগের ডেপুটি কমিশনার জুবায়দা খানম এর নিকট এ ব্যাপারে জানতে ফোন দিলে তিনি ফোন ধরেন না এমনকি গণমাধ্যমে সাথে সাক্ষাত ও দেন না। উক্ত জোবায়দা খানম ইতোপূর্বে কমিশনারেট (পশ্চিম) এর আওতাধীন টাঙ্গাঁইল বিভাগে কর্মরত থাকাকালীন(২০২০-২১)বহিরাগত আব্দুল মান্নান ও জামালপুর বিভাগে কর্মরত থাকা কালীন বহিরাগত কর্মচারী মিলন ও হীরার মাধ্যমে অবৈধ লেনদেন করতো বলে একাধিক সূত্র থেকে জানা গেছে।আইসিটি কাস্টমস হাউজে কর্মরত থাকার বর্তমানে তিনি মতিঝিল বিভাগে কর্মরত। তার অধীনে কাস্টমস ও ভ্যাট অফিসে বহিরাগতদের দাপটে অস্থির ভ্যাট ঢাকা (দক্ষিণ) কমিশনারেটর মতিঝিল বিভাগ।
কাস্টমস,এক্সসাইজ ও ভ্যাট ঢাকা (দক্ষিণ) কমিশনারেট এর অধীনস্থ ৮টি বিভাগীয় দপ্তরে কর্মকর্তা ও কর্মচারীদেরর চেয়ে বহিরাগত উল্লেখযোগ্য পরিমাণ বেশি রয়েছে।তার মধ্যে উল্লেখযোগ্য হল মতিঝিল বিভাগ। উক্ত বিভাগে বহিরাগতদের দাপট যেন উৎসবে রূপ নিয়েছে।ব্যবসায়ীরা একপ্রকার তাদের কাছে জিম্মি হয়ে পড়েছে। প্রতিটি সার্কেলে ও বিভাগে বহিরাগত কম্পিউটার অপারেটর কর্মরত রয়েছে। এদের মাসিক বেতনের উৎস কোথায়? তারা ব্যবসায়ীদেরকে কারণে-অকারণে বিভিন্ন রকমের হয়রানি করে। বহিরাগতদের দাপটে হয়রানির শিকার হচ্ছে ব্যবসায়ীরা। তাদেরকে অপসারণ না করলে দুর্নীতির হার বহুগুনে বেড়ে যাবে। যার প্রভাব রাজস্ব লক্ষ্যমাত্রা আদায় করার ক্ষেত্রে নেতিবাচক প্রভাব পড়বে বলে ব্যবসায়ী মহল মনে করেন। বহিরাগতদের দখলের স্থান নিম্নে আংশিক সরজমিনে তদন্তে করে পাওয়া যায় ১। সুকান্ত হালদার (কম্পিউটার অপারেটর) মতিঝিল সার্কেল ও আরামবাগ সার্কেল। (সুকান্ত দুটি সার্কেলের দায়িত্বে আছেন)২। মোঃ সজল মিয়া (কম্পিউটার অপারেটর) আরামবাগ সার্কেলে কাজ করেছেন।৩। মোঃ খোকন মিয়া,মতিঝিল সার্কেলে কাজ করেছেন।৪। মোঃ রাকিব মিয়া,রামপুরা সার্কেলে কাজ করেছেন।৫। মোঃ ইব্রাহিম মিয়া, মতিঝিল বিভাগের বিভাগীয় কর্মকর্তার ডিউটি পালনে ব্যস্ত থাকেন।৬। মোঃ তারেক (কম্পিউটার অপারেটর) রামপুরা সার্কেল।৭। মোঃ সোহাগ রামপুরা ও রাজারবাগ সার্কেল (কম্পিউটার অপারেটর)৮। মোঃ বাবু মিয়া রামপুরা সার্কেল (কম্পিউটার অপারেটর)৯। মোঃ রাশেদ মিয়া রামপুরা সার্কেল ও রাজারবাগ সার্কেল। বাজার করে এবং খাতাপত্র চালাচালি করে এবং অফিসের কাজ করে।১০। প্রশান্ত রাজারবাগ সার্কেল।১১। মোঃ আশরাফুল রামপুরা সার্কেল।
অনুসন্ধানে উপ-কমিশনার জোবায়দার রাজধানীর আফতাব নগর ফ্লাট, সাভার জামগড় জিরানী বাজারে বিশাল সম্পদ ও কুমিল্লা জেল খানার পাশে আলিশান বাড়ি ও কুমিল্লার মিয়ারবাজারে অঢেল সম্পদের সন্ধান পাওয়া গেছে।বিভিন্ন সূত্র নিশ্চিত করেছে।তাহলে স্বাভাবিক প্রশ্ন থেকেই যায় কমিশনার শওকত আলী সাদী আদেশটি এনবিআর এর নীতিমালা বহির্ভূত সিদ্ধান্ত না হয় তাহলে মতিঝিল বিভাগের ডেপুটি কমিশনার কেন তা মানছেন না?
এ ব্যাপারে এনবিআর এর নীতি নির্ধারনী মহল ও সরকারের উচ্চ পর্যায়ে বিষয়টি তদন্ত করবেন বলে একাধিক ভূক্তভোগী ব্যবসায়ী দাবী করেন। উক্ত বহিরাগত কর্মচারীরা সরকারের রাজস্ব আদায়ের মত গুরুত্বপূর্ন অফিসে কাজ করতে পারে কিনা? এখানে বিভিন্ন ব্যবসায়ীর গোপনীয় তথ্য সংরক্ষিত থাকে।ধারাবাহিক প্রতিবেদনের আজ প্রকাশিত হলো ১ম পর্ব।
Editor & Publisher : Md. Motiur Rahman
Pritam-Zaman Tower, Level 03, Suite No: 401/A, 37/2 Bir Protik Gazi Dastagir Road, Purana Palton, Dhaka-1000
Cell : (+88) 01706 666 716, (+88) 01711 145 898, Phone: +88 02-41051180-81