02/23/2025
বিশেষ প্রতিনিধি: | Published: 2025-02-22 20:48:49
লক্ষ্যমাত্রা বিঘ্নিত হলেও বিভিন্ন সময়ে রাজস্ব বাড়াতে সরকার ভ্যাট বৃদ্ধি করে দেয়। এটা রাজস্ব আদায়ের লক্ষ্যমাত্রা অর্জনে ভুল পলিসি বলে মনে করছেন বিজ্ঞমহল। এতে সঠিক হারে রাজস্ব প্রদানকারী ব্যবসায়ীদের উপর চাপ বেড়ে গেলেও ফাঁকিবাজ প্রতিষ্ঠানগুলোর মুনাফায় বাতাস লাগে।
কেননা এই ভ্যট বৃদ্ধির অজুহাতে এরা পণের দাম বাড়িয়ে দেয় ঠিকই কিন্তু ফাঁকির রাস্তা থাকায় শুধু তথাকথিত কোম্পানির মুনাফাই বাড়তে থাকে, রাজস্ব বাড়েনা। সম্প্রতি নানা কারণে ভ্যাট আরোপের ক্ষমতা এনবিআরের হাত থেকে আলাদা করার প্রস্তাব করেছে সংস্কার কমিশন। সাথে আরো বেশকিছু গুরুত্বপূর্ণ নিয়মেরও সংস্কারও হচ্ছে। সংস্কার ক্ষেত্রে যখন তথন ভ্যাট না বাড়িয়ে রাজস্ব আদায়ে বাস্তব পদ্ধতি অবলম্বন করা যায় কিভাবে সেদিকে পদক্ষেপ নেওয়ার কথা বলছেন ব্যবসায়ীদের অনেকে।
আবার কিছু ক্ষেত্রে ভ্যাট আরোপে বৈষম্যও রয়েছে। কিছু ক্ষেত্রে রয়েছে সূক্ষ্ম ও সহজে কারচুপির সুযোগ। যেকারণে শিল্পায়নের প্রসারের সাথে কর্পোরেট প্রতিষ্ঠান বাড়লেও ভ্যাট আদায়ে অসমতা পরিলক্ষিত হচ্ছে। ফলে একই পর্যায়ের দুটি শিল্প-গ্রুপের ভ্যাট প্রদানের চিত্র আকাশ পাতাল পার্থক্য হয়ে যাচ্ছে। এটি হচ্ছে আদায়ের ক্ষেত্রে সুবিধা দিয়ে কারচুপির সুযোগে। এক্ষেত্রে অসাধু রাজস্বকর্মকর্তার যোগসূত্রও তৈরি হচ্ছে বিচত্রভাবে।
উদাহরণ দিয়ে বলা যায়, যেমন- বাংলাদেশে ক্যাবলস শিল্পের প্রথম সারির প্রতিষ্ঠানগুলোর কথাই ধরা যাক। যাদের মধ্যে রয়েছে এসকিউ ক্যাবলস কোম্পানি, বিজলী ক্যাবলস ব্রান্ডের রংপুর মেটাল কোম্পানি, পারটেক্স ক্যাবল কোম্পানি, এমইপি ক্যাবল কোম্পানি, বিআরবি ক্যাবল কোম্পানি, বিবিএস ক্যাবল কোম্পানি, বিএনটি ক্যাবল কোম্পানি, মেঘনা স্টার ক্যাবল কোম্পানি, আরআর ক্যাবলস ব্রান্ডের আরআর ইম্পেরিয়াল এন্ড ইলেকট্রিক কোম্পানি প্রভৃতি। এরা প্রত্যেকই একএকটা বিশাল অর্থের কর্পোরেট ক্যাবলস ইন্ডাস্ট্রিজ। এদের মার্কেট ভলিউম ও প্রতিযোগিতা অনেকটা একই রকম। কিন্তু রাজস্ব দেওয়ার পার্থক্য আকাশ পাতাল। দু'একটা কোম্পানি ছাড়া কারো কাছ থেকে সঠিক হারে রাজস্ব পাওয়া যাচ্ছে না। এটা হচ্ছে শুধু আদায়ে বাস্তবসম্মত উদ্যোগ না থাকার কারণে।
অন্যদিকে একই রকম নির্মাণ সামগ্রীর অন্তর্ভুক্ত এলুমনিয়াম ওয়্যার রড, কপার ওয়্যার রড, আয়রন ওয়্যার রড বা লোহার রড ; কিন্তু লোহার রডের সাথে তামা বা এলুমনিয়াম তারের ভ্যাটের পার্থক্য অনেক। এসব সরাঞ্জামের কাঁচামাল সাধারণত একইভাবে আমদানি করতে হয়। বা লোকাল স্ক্রাব থেকেও হয়। রাজস্ব সূত্র বলছে, কপার, এলুমনিয়াম রডের মূসক ১৫ শতাংশ এবং ১৯ সালের দিকে লোহার রডে টন প্রতি ২২০০ টাকা ভ্যাট ধার্য করা হয়েছিলো। অন্যান্য নির্মাণ সামগ্রীতে ভ্যাট বৃদ্ধি করা হলেও আয়রন রড মার্কেটে তেমন নজর দেওয়া হয়নি। অন্যদিকে লোহার রডের ভ্যাট আদায় প্রসঙ্গ নিয়ে ও রয়েছে নানা বিতর্ক। এতবড় বিশাল লোহার রড সেক্টরে ন্যায্য ভ্যাট আরোপ ও আদায় হলে সরকারের রাজস্ব পালে সুবাতাস লেগে যেতো। একইভাবর অন্যান্য শিল্পখাতেও বৈষম্য না রেখে মূসক আদায়ে সরকার সঠিক নজর দিলে এদেশের রাজস্ব দিয়েই উন্নত দেশ গড়া যেতো অনায়াসে। সম্প্রতি শতাধিক পণ্য ও সেবার উপর ভ্যাট ও সম্পূরক শুল্ক বৃদ্ধি করা হলেও নির্মাণ সামগ্রীর অন্তর্ভুক্ত রডের উপর বাড়েনি যা নিয়ে প্রশ্ন দেখা দিয়েছে। এরই মধ্যে ব্যবসায়ীরা মূসক কমানো নিয়ে কয়েক দফা এনবিআর’র সাথে মিটিং করেছে। তবে রাজস্ব আদায়ের কার্যকর উদ্যোগের মাধ্যমে লক্ষমাত্রায় পৌঁছানোর প্রসঙ্গটিতেও গুরুত্ব দেওয়া আরো বেশি জরুরি।
বিষটি নিয়ে শুল্ক গোয়েন্দা বিভাগের মহাপরিচালক বলেন, আমরা নিজেও স্বীকার করছি ভ্যাট আদায়ে অটোমেশন চালু হলে রাজস্ব বাড়বে। তবে এটা সময় সাপেক্ষ বিষয়। ম্যানুয়ালি আদায়ে ত্রুটি বিচ্যুতি থাকে যা হয়তো লক্ষ্যমাত্রায় পৌঁছাতে সীমাবদ্ধতা তৈরি করছে। তবে ভ্যাট আদায়ে অটোমেশনের কাজ চলমান রয়েছে। সব ক্ষেত্রে চালু হতে কয়েক বছর সময় লাগবে।
Editor & Publisher : Md. Motiur Rahman
Pritam-Zaman Tower, Level 03, Suite No: 401/A, 37/2 Bir Protik Gazi Dastagir Road, Purana Palton, Dhaka-1000
Cell : (+88) 01706 666 716, (+88) 01711 145 898, Phone: +88 02-41051180-81