03/04/2025
নিজস্ব প্রতিবেদক | Published: 2025-03-04 04:16:07
রাজধানীর মালিবাগ চৌধুরীপাড়া সংলগ্ন মাটির মসজিদ এলাকার চিহ্নিত মাদক ব্যবসায়ীরা সরকার পরিবর্তনের পর নতুন করে আস্তানা গেড়েছে বিভিন্ন এলাকায়। রাজনৈতিক পটপরিবর্তনের পর বর্তমানে বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দলের (বিএনপি) কতিপয় স্থানীয় নেতার আশ্রয় প্রশ্রয়ে তারা এখন বেপরোয়া হয়ে উঠেছে।
এরা এখন এতটাই বেপরোয়া হয়ে গেছে যে, এলাকার বাড়ীওয়ালা থেকে শুরু করে স্থানীয় প্রভাবশালীদের সাথেও ঔদ্ধত্যপূর্ণ আচরণ করছে, অলিগলিতে মাদক ব্যবসা করছে, অস্ত্র দেখিয়ে পথচারীদের সর্বস্ব লুটে নিচ্ছে, নারী পোশাকশ্রমিকদের উত্যক্ত করছে। তাদের এহেন কার্যকলাপে এলাকার সাধারণ মানুষ এখন ত্যক্তবিরক্ত।
স্থানীয়রা এই প্রতিবেদককে জানান, বিগত আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর থেকেই এই সন্ত্রাসীগোষ্ঠী এলাকায় মাথাচাড়া দিয়ে উঠেছে। গত কিছুদিন ধরে স্থানীয় যুবদল নেতা মুন্নার ছত্রছায়ায় শাহাদাৎ ও নেট আলী নিজেদের সাঙ্গোপাঙ্গ নিয়ে ইকরা মসজিদ সংলগ্ন বালুর মাঠে রমরমা মাদক ব্যবসায় জড়িয়ে পড়েছে। মাঠের একপাশে ঘুপচি ঘর বানিয়ে দিনরাত চলে ক্যারাম খেলার আড়ালে জুয়া খেলা ও মাদক সেবন। শুধু তাই নয়, অনেক সময় অনৈতিক অপকর্মও সংগঠিত হয় এসব ঘরে।
পূর্ব হাজীপাড়ার ইকরা মসজিদের পিছনে বালুর মাঠে এই সন্ত্রাসীগোষ্ঠীর নানা অপকর্মের প্রতিবাদ করায় 'দৈনিক সময়ের অপরাধচক্র' পত্রিকার সিনিয়র সাংবাদিক মো: লোকমান হোসেন শ্যামলকে বাসায় এসে হুমকি দেয়। এসময় যুবদল নেতা মুন্নার নির্দেশে শাহাদাত ও নেট আলীর অনুসারীরা তাকে টেনেহিঁচড়ে নিজেদের আস্তানায় নিয়ে যাবার চেষ্টা করে। এসময় স্থানীয়রা এগিয়ে আসলে সন্ত্রাসীরা পালিয়ে যায়।
শাহাদাত ও নেট আলীর অনুসারীরা এলাকার অলিগলিতেও মাদক ব্যবসা শুরু করেছে। মাদক কারবারে জড়িয়ে এদের অনেকেই নেশার টাকা জোগাতে ছিনতাইসহ নানা অপকর্ম করছে। সন্ধ্যার পর স্থানীয় মা-বোনেরা পূর্বের ন্যায় স্বস্তিতে হাঁটাচলাও করতে পারেন না। এছাড়া এই সন্ত্রাসীরা ডিশ ব্যবসার দখল নিয়েও স্থানীয় কয়েকজন ব্যবসায়ীর সাথে বিবাদে জড়িয়েছে।
এদের কর্মকান্ডে এলাকার সাধারণ মানুষ ও স্থানীয় বাড়িওয়ালারা প্রায়শই বিব্রতকর পরিস্থিতির মুখে পড়েন। এই সন্ত্রাসীদের কারণে এলাকার সাধারণ শিক্ষার্থী ও শিশুরা বালুর মাঠে খেলাধুলা করতেও ভয় পায়। যার ফলে এসব কোমলমতি শিক্ষার্থী ও শিশুদের মানসিক বিকাশে বাধা সৃষ্টি হচ্ছে।
এই বিষয়ে জানতে চাইলে পুলিশের সাবেক মহাপরিদর্শক (আইজিপি) নূর মোহাম্মদ বলেন, 'ক্ষমতার পালাবদলের পর এই অস্থিরতাগুলো শুরু হয়েছে। এই সময়ে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্ব পালন করে পুলিশ। কিন্তু তারা তো স্বাভাবিক হতে পারছে না। কোথাও যেতে ভয় পাচ্ছে। ট্রমা কাটিয়ে উঠতে পারছে না। পুলিশ স্বাভাবিক কাজে ফিরতে পারলে এই পরিস্থিতির উন্নতি হবে।'
এই বিষয়ে অপরাধ ও সমাজ বিজ্ঞানীরা বলছেন, 'যে দল যখন ক্ষমতায় থাকে, তাদের নিয়ন্ত্রণেই থাকে সবকিছু। সরকারের পতনে নতুন প্রেক্ষাপট তৈরি হওয়ার পর অন্য কেউ সেই জায়গায় প্রভাব বিস্তার বা নিয়ন্ত্রণ করতে চায়। এতে রাজনৈতিক হত্যাকাণ্ডসহ নানা ধরনের বিশৃঙ্খলা বাড়ে। পাশাপাশি আগের প্রেক্ষাপটে যারা রাজনৈতিকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছিল, তারা এখন ব্যক্তিগত ঘটনার পাশাপাশি রাজনৈতিক ভাবেও প্রতিশোধ নিতে চাচ্ছে। এই গোষ্ঠীটি নিজেদের স্বার্থ হাসিলে ব্যবহার করছে সন্ত্রাসীদের৷ এই সুযোগে এসব সন্ত্রাসীরা এলাকায় নানা ধরনের অপকর্মে জড়িয়ে পড়ছে। এসব কারণেই বর্তমানে বিশৃঙ্খল ঘটনা ঘটছে এবং অপ্রত্যাশিত হত্যাকাণ্ড হচ্ছে।'
Editor & Publisher : Md. Motiur Rahman
Pritam-Zaman Tower, Level 03, Suite No: 401/A, 37/2 Bir Protik Gazi Dastagir Road, Purana Palton, Dhaka-1000
Cell : (+88) 01706 666 716, (+88) 01711 145 898, Phone: +88 02-41051180-81