29253

08/19/2025

২০২৪-২৫ অর্থবছরে বিমানের ৯৩৭ কোটি টাকার রেকর্ড মুনাফা

সামিউর রহমান লিপু | Published: 2025-08-19 15:52:40

বাংলাদেশের জাতীয় পতাকাবাহী সংস্থা বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্স লিমিটেড ২০২৪-২৫ অর্থবছরে ৯৩৭ কোটি টাকা অনিরীক্ষিত মুনাফা অর্জন করেছে। এই মুনাফার মাধ্যমে প্রতিষ্ঠার ৫৫ বছরের ইতিহাসে বিমান এক অনন্য রেকর্ড গড়েছে। 

২০২৪-২৫ অর্থবছরের আগে বিমানের ইতিহাসে দ্বিতীয় সর্বোচ্চ মুনাফা অর্জিত হয় ২০২১-২২ অর্থবছরে, যার পরিমাণ ছিল ৪৪০ কোটি টাকা।

বিদায়ী অর্থবছরে রাষ্ট্রায়ত্ত সংস্থাটি আয় করেছে ১১ হাজার ৬৩১ কোটি ৩৭ লক্ষ টাকা। উল্লেখ্য যে, ২০২৩-২৪ অর্থবছরে বিমান প্রথমবারের মতো ১০,০০০ কোটির বেশি আয়কারী কোম্পানিতে পরিণত হয়।

দীর্ঘ ৫৫ বছরের যাত্রায় বিমান মোট ২৬টি বছরে লাভ করেছে। ২০০৭ সালে করপোরেশন থেকে পাবলিক লিমিটেড কোম্পানিতে রূপান্তরের পর গত ১৮ বছরে বিমানের পুঞ্জীভূত মোট মুনাফা হয়েছে ৫৮৯ কোটি টাকা।

২০২৪-২৫ অর্থবছরে বিমানের কার্যক্রমে যাত্রী পরিবহন হয়েছে ৩ দশমিক ৪ মিলিয়ন, কার্গো পরিবহন ৪৩,৯১৮ টন, এবং কেবিন ফ্যাক্টর ৮২%-এ উন্নীত হয়েছে, যা আগের বছরের তুলনায় উল্লেখযোগ্য বৃদ্ধি।এছাড়াও ২০২৫ সালের জানুয়ারি মাসে বিমানের ইতিহাসে সর্বোচ্চ টিকিট বিক্রির রেকর্ড অর্জিত হয়েছে।

সোমবার (১৮ আগস্ট) এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্সের মহাব্যবস্থাপক (জনসংযোগ) এ বি এম রওশন কবীর এসব তথ্য জানান।

তিনি এই আর্থিক সাফল্যের জন্য যাত্রী ও গ্রাহকদের প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেছেন এবং বলেন, তাদের আস্থা ও সমর্থনই এই রেকর্ড মুনাফা অর্জনে সবচেয়ে বড় শক্তি হিসেবে কাজ করেছে।

দ্রুত লাগেজ সরবরাহ, উন্নত ইন-ফ্লাইট সেবা এবং বিমানবন্দর প্রক্রিয়ার আধুনিকায়ন যাত্রী সন্তুষ্টি বাড়িয়েছে। পাশাপাশি, বিমান আন্তর্জাতিক নিরাপত্তা মান কঠোরভাবে অনুসরণ করে ধারাবাহিকভাবে প্রশংসনীয় সেফটি রেকর্ড বজায় রেখেছে।

দক্ষ সম্পদ ব্যবস্থাপনা, কার্যকর কৌশল গ্রহণ এবং যাত্রীসেবার ধারাবাহিক উন্নয়নের ফল হিসেবে এই সাফল্য এসেছে বলে মনে করেন রওশন কবীর।

তিনি বলেন, কোম্পানির আরেকটি বড় শক্তি হলো নিজস্ব বহর রক্ষণাবেক্ষণ সক্ষমতা। লাইন রক্ষণাবেক্ষণ থেকে শুরু করে বড় ধরনের পরীক্ষা (চেক) পর্যন্ত সবই দেশে সম্পন্ন করা হয়, যা বিপুল ব্যয় সাশ্রয় করছে।

রওশন কবীর জানিয়েছেন, বিমানের লক্ষ্য হলো জাতীয় গৌরবকে ধারণ করে বিশ্বমানের সেবা, নির্ভরযোগ্যতা এবং যাত্রীদের সুরক্ষা ও নিরাপত্তা নিশ্চিত করে দক্ষিণ এশিয়ার একটি শীর্ষস্থানীয় এয়ারলাইন্সে পরিণত হওয়া।

রাষ্ট্রায়ত্ত কোম্পানিটির ভবিষ্যতের পরিকল্পনায় রয়েছে নতুন জনপ্রিয় গন্তব্যে রুট সম্প্রসারণ, যাত্রীসেবা ও পরিচালনায় ডিজিটাল রূপান্তর এবং কার্গো সেবা শক্তিশালীকরণ। 

জাতীয় সংবাদমাধ্যম ও এভিয়েশন বিশেষজ্ঞরা সাম্প্রতিক বছরগুলোতে বিমানের বহর আধুনিকায়ন, লাভজনক আন্তর্জাতিক রুট সম্প্রসারণ এবং উন্নত গ্রাহকসেবা প্রদানের প্রশংসা করেছেন।

বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকারের অধীনে নতুন ব্যবস্থাপনা, দক্ষ অর্থনৈতিক নিয়ন্ত্রণ, কার্যকর সম্পদ বণ্টন এবং দ্রুত সিদ্ধান্ত গ্রহণের প্রচেষ্টা চলতি বছরের এই রেকর্ড মুনাফায় বড় ভূমিকা রেখেছে বলে মনে করেন বিশেষজ্ঞরা।

বর্তমানে বিমানের বহরে ২১টি উড়োজাহাজ রয়েছে, যার মধ্যে ১৯টি নিজস্ব মালিকানাধীন। এর মধ্যে রয়েছে অত্যাধুনিক ও জ্বালানি-সাশ্রয়ী চারটি বোয়িং ৭৮৭-৮ এবং দুটি বোয়িং ৭৮৭-৯ ড্রিমলাইনার।

১৯৭২ সালে মাত্র ১ দশমিক ৯০ কোটি টাকা আয় দিয়ে যাত্রা শুরু করা বিমান, যুদ্ধবিধ্বস্ত বাংলাদেশের সীমিত অবকাঠামো ও সম্পদের মধ্যে থেকে ধীরে ধীরে আজকের আধুনিক ও প্রতিযোগিতামূলক এয়ারলাইন্সে পরিণত হয়েছে।


Editor & Publisher : Md. Motiur Rahman

Pritam-Zaman Tower, Level 03, Suite No: 401/A, 37/2 Bir Protik Gazi Dastagir Road, Purana Palton, Dhaka-1000
Cell : (+88) 01706 666 716, (+88) 01711 145 898, Phone: +88 02-41051180-81