11/05/2025
শাহীন আবদুল বারী | Published: 2025-11-05 20:48:50
চট্টগ্রামে নির্বাচনি গণসংযোগ করার সময় গুলিবিদ্ধ হয়েছেন চট্টগ্রাম মহানগর বিএনপির সভাপতি ও চট্টগ্রাম-৮ আসনে দলটির মনোনীত প্রার্থী এরশাদ উল্লাহ।
আজ বুধবার (৫ নভেম্বর) বিকেল সোয়া ৫টার দিকে নগরের পাঁচলাইশ থানার চালিতাতলী এলাকায় এই ঘটনা ঘটে। এসময় সরোয়ার বাবলা নামে একজন গুলিবিদ্ধ হয়ে হাসপাতালে নেয়ার পর নিহত হয়েছেন। এই ঘটনায় শান্ত নামে আরও একজন গুলিবিদ্ধ হয়েছেন।
বুধবার (৫ নভেম্বর) রাত পৌনে ৮টার দিকে তার মৃত্যুর বিষয়টি নিশ্চিত করেন চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন পুলিশের উত্তর জোনের উপ-কমিশনার (ডিসি) আমিরুল ইসলাম।
স্থানীয় বিএনপি নেতারা জানান, মনোনয়ন পাওয়ার পর বিএনপি প্রার্থী এরশাদ উল্লাহ বায়েজিদ বোস্তামী থানার চালিতাতলী এলাকায় পূর্ব মসজিদ থেকে মাগরিবের নামাজ পড়ে বের হয়ে নির্বাচনী প্রচারণায় অংশ নেন। এসময় হঠাৎ দুজন অস্ত্রধারী ব্যক্তি অতর্কিতে গুলি চালায়।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, হামলাকারীরা সরওয়ার বাবলার বুকে অস্ত্র ঠেকিয়ে একাধিক গুলি ছোড়ে। সঙ্গে সঙ্গে তিনি মাটিতে লুটিয়ে পড়েন। আশপাশের লোকজন আতঙ্কে ছুটতে থাকেন। এসময় প্রার্থী এরশাদ উল্লাহর পায়ে একটি গুলি লাগে। তাকে দ্রুত উদ্ধার করে রাজধানীর এভারকেয়ার হাসপাতালে নেওয়া হয়।এসময় পাশে থাকা শান্ত নামে বিএনপির এক কর্মী গুলিবিদ্ধ হন।
সারোয়ার হোসেন বাবলা পুলিশের তালিকাভুক্ত শীর্ষ সন্ত্রাসী। আর শান্ত স্থানীয় ৩ নম্বর ওয়ার্ড স্বেচ্ছাসেবক দলের যুগ্ম আহবায়ক।
পুলিশের প্রাথমিক ধারণা, কারাগারে থাকা চট্টগ্রামের শীর্ষ সন্ত্রাসী ছোট সাজ্জাদ গ্রুপের সঙ্গে সরওয়ার বাবলার পুরোনো বিরোধের জেরেই এই হামলার ঘটনা ঘটে। মূল লক্ষ্য ছিল সরওয়ার বাবলা, তবে গুলির আঘাতে বিএনপি প্রার্থীও আহত হন। এর আগে গত ৩০ মার্চ ভোর রাতে বাকলিয়া এক্সেস রোড চকবাজার থানার চন্দনপুরার মুখে প্রাইভেট কারে বাবলাকে হত্যার উদ্দেশ্যে গুলি করা হয়েছিল। এতে বখতেয়ার হোসেন মানিক ও মো. আব্দুল্লাহ নামে দুজন নিহত হন। সেসময় ঘটনাস্থল থেকে কৌশলে পালিয়ে প্রাণে রক্ষা পান সরোয়ার হোসেন বাবলা।
এদিকে, এরশাদ উল্লাহ গুলিবিদ্ধ হওয়ার ঘটনায় নিন্দা জানিয়েছেন দলটির স্থায়ী কমিটির সদস্য আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী।
তিনি বলেন, “সন্ত্রাসীদের নিয়ন্ত্রণ করা আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর দায়িত্ব। এর মধ্যে এই ধরনের ঘটনা নিন্দনীয় ও দুঃখজনক।”
বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী বলেন, একটি মহল অস্থিতিশীল পরিস্থিতি সৃষ্টি করে নির্বাচনকে বাধাগ্রস্ত করতে চায়। তিনি নেতাকর্মীদের মনোবল শক্ত রাখার এবং ধৈর্য ধরার আহ্বান জানান।
চট্টগ্রাম মহানগর বিএনপির সদস্য সচিব নাজিমুর রহমান বলেন, ‘আমরা হাসপাতালে যাচ্ছি। তার শারীরিক অবস্থা সম্পর্কে পরে বিস্তারিত জানাতে পারব।’
এরশাদ উল্লাহ দীর্ঘদিন ধরে চট্টগ্রাম বিএনপির রাজনীতিতে সক্রিয়। বর্তমানে তিনি মহানগর বিএনপির আহ্বায়ক হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন।
এদিকে, এরশাদ উল্লাহর ওপর হামলার ঘটনায় তীব্র ক্ষোভ ও গভীর উদ্বেগ জানিয়েছেন বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। তিনি হামলাকারীদের দ্রুত শনাক্ত করে গ্রেপ্তারের দাবি জানান।
চট্টগ্রাম মহানগর পুলিশ কমিশনার হাসিব আজিজ ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে গণমাধ্যমকে জানান, নির্বাচনী গণসংযোগের সময় নগর বিএনপির আহ্বায়কসহ তিনজন গুলিবিদ্ধ হয়েছেন। এই ঘটনায় জড়িত ব্যক্তিদের গ্রেপ্তারে পুলিশ কাজ করছে।
ত্রয়োদশ সংসদ নির্বাচন সামনে রেখে নির্বাচনী প্রচারের মধ্যে এই প্রথম কোনো সহিংসতার ঘটনা ঘটল।
এর আগে, গত সোমবার (৩ নভেম্বর) বিকালে আসন্ন জাতীয় সংসদ নির্বাচনে চট্টগ্রাম-৮ আসনে বিএনপির মনোনীত প্রার্থী হিসেবে এরশাদ উল্লাহর নাম ঘোষণা করা হয়।
ওই দিন সন্ধ্যায় বিএনপির চেয়ারপারসনের গুলশান কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলনে ত্রয়োদশ সংসদ নির্বাচনের জন্য দলের প্রাথমিক প্রার্থী তালিকা প্রকাশ করেন মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। এ সময় দলের মনোনীত ২৩৭ জন প্রার্থীর নাম ঘোষণা করা হয়।
আগামী বছরের ফেব্রুয়ারি মাসের শুরুতে অনুষ্ঠিত হবে ত্রয়োদশ সংসদ নির্বাচনের ভোট। আগামী মাসের (ডিসেম্বর) প্রথম সপ্তাহে নির্বাচনের তফসিল ঘোষণা করা হবে বলে জানায় নির্বাচন কমিশন।
Editor & Publisher : Md. Motiur Rahman
Pritam-Zaman Tower, Level 03, Suite No: 401/A, 37/2 Bir Protik Gazi Dastagir Road, Purana Palton, Dhaka-1000
Cell : (+88) 01706 666 716, (+88) 01711 145 898, Phone: +88 02-41051180-81