30554

12/18/2025

পে-স্কেল নিয়ে অবশেষে যেসব সিদ্ধান্ত হলো

বিশেষ প্রতিবেদক | Published: 2025-12-18 01:11:01

সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারীদের জন্য নবম পে-স্কেল নির্ধারণের বিষয়ে ৫ ঘন্টাব্যাপী রুদ্ধদ্বার এক বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়েছে। সভায় বেশকিছু খসড়া সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে বলে জানা গেছে।

বুধবার (১৭ ডিসেম্বর) পে-কমিশনের চেয়ারম্যান জাকির আহমেদ খানের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত বৈঠকটি বিকেল ৩টায় শুরু হয়ে রাত ৮টায় শেষ হয়।

এই বৈঠকে আরও উপস্থিত ছিলেন কমিশনের সদস্য ড. মোহাম্মদ আলী খান, মো: ফজলুল করিম, মো: মোসলেম উদ্দীন, সদস্য সচিব মো: ফরহাদ সিদ্দিকসহ খন্ডকালীন সদস্য ও কর্মকর্তারা।

বৈঠক সূত্রে জানা গেছে, পূর্ণ কমিশনের সভায় কমিশনের তৈরিকৃত ড্রাফট নিয়ে বিস্তর আলোচনা হয়েছে। কিছু বিষয়ে সংশোধনী এনে পরবর্তীতে আবারও পূর্ণ কমিশনের বৈঠক করার সিদ্ধান্ত হয়েছে।

বিশ্বস্ত সূত্র থেকে পাওয়া তথ্যে জানা গেছে, কমিশনের রিপোর্ট জমা দেওয়ার পূর্বে আরও অন্তত তিনটি পূর্ণ কমিশনের সভা করা হবে। এরপর কমিশন তাদের রিপোর্ট জমা দেবে।

সূত্রের তথ্য অনুযায়ী, তিন ধাপে পে-স্কেলের সুপারিশ বাস্তবায়িত হবে। প্রথম ধাপে পে কমিশন তাদের রিপোর্ট জমা দেবে। দ্বিতীয় ধাপে এটি সচিব কমিটিতে যাবে। সচিব কমিটির অনুমোদনের পর তা উপদেষ্টা পরিষদে পাঠানো হবে। উপদেষ্টা পরিষদ কমিশনের রিপোর্টের বিষয়ে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেবে। এরপর এই সংক্রান্ত গেজেট জারি করা হবে।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক সভায় উপস্থিত কমিশনের এক সদস্য বুধবার রাত সাড়ে ৮টায় গণমাধ্যমকে বলেন, পে-স্কেলের খসড়া ড্রাফট প্রস্তুত। তবে কিছু বিষয়ে সংশোধনী প্রয়োজন। এজন্য আমাদের আরও সভা করতে হবে। এরপর কমিশন তাদের রিপোর্ট জমা দেবে। নির্ধারিত সময়ের অনেক আগেই কমিশন তাদের রিপোর্ট জমা দেবে।

কমিশন যে ড্রাফট তৈরি করেছে সেখানে গ্রেড সংখ্যা এবং বেতনের কেমন সুপারিশ করা হয়েছে, এমন প্রশ্নের জবাবে ওই সদস্য বলেন, কমিশন একটি ড্রাফট তৈরি করেছে। তবে এটি এখনও চূড়ান্ত হয়নি। চূড়ান্ত না হলে বেতন এবং গ্রেড নিয়ে কোনো মন্তব্য করা সমীচীন হবে না। তবে অতিরঞ্জিত কোনো সুপারিশ করা হবে না। বাস্তব সম্মত সুপারিশ করা হবে।

জানা গেছে, নবম পে-স্কেল নিয়ে বিভিন্ন সংস্থা, সংগঠন থেকে প্রাপ্ত মতামতগুলো চুলচেরা বিশ্লেষণ করছে জাতীয় বেতন কমিশন (পে কমিশন)। তবে এখনও সম্পূর্ণ প্রতিবেদন প্রস্তুত হয়নি।

গত সোমবার কমিশনের একটি সূত্র জানিয়েছে, কর্মচারীদের সাম্প্রতিক মহাসমাবেশ কিংবা বুধবার থেকে কঠোর কর্মসূচি—কোনো কিছুতেই বিচলিত নন তারা।

এদিকে কঠোর আন্দোলনের হুঁশিয়ারি দিলেও সম্প্রতি সচিবালয়ে আন্দোলনকারীদের দমন প্রক্রিয়া ও সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষকদের আন্দোলন পরবর্তী সরাকারি সিদ্ধান্তে একরকম ভীত পে স্কেলের দাবিতে আন্দোলনরত বিভিন্ন সংগঠনের নেতারা। সেজন্য আপাতত কঠোর কর্মসূচির দিকে যাচ্ছেন না তারা। সরকারি সিদ্ধান্ত ও প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিবের বক্তব্যে কর্মসূচি নিয়ে নতুন করে চিন্তা করছেন তারা।

বাংলাদেশ সরকারি কর্মচারী উন্নয়ন পরিষদের সভাপতি জিয়াউল হক বলেন, “অবশ্যই আমরা দাবি পেশ করব, তবে সব দাবি রাস্তায় আন্দোলনের মাধ্যমে আদায় হয় না। আলোচনার মাধ্যমে পে-স্কেল বাস্তবায়নের চেষ্টা করছি।”

অন্যদিকে, বাংলাদেশ সরকারি কর্মচারী সমন্বয় পরিষদের মহাসচিব বেল্লাল হোসেন বলেন, ‘আমরা বাংলাদেশের অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের অর্থ ও পরিকল্পনা উপদেষ্টা ড. সালেহউদ্দিন আহমেদের সঙ্গে সাক্ষাৎ চেয়ে একটি চিঠি দিয়েছি। আমরা তার সঙ্গে দেখা করার জন্য অধীর আগ্রহে অপেক্ষা করছি। বৃহস্পতিবার (১৮ ডিসেম্বর) দাবি আদায়ে ঐক্য পরিষদ আবারও আলোচনায় বসবে। সেখানে আলোচনার ভিত্তিতেই নতুন কর্মসূচি ঘোষণা করা হবে।’

সমন্বয় পরিষদের মহাসচিব বেল্লাল হোসেন জানিয়েছেন, “বাংলাদেশের অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের অর্থ ও পরিকল্পনা উপদেষ্টা ড. সালেহউদ্দিন আহমেদের সঙ্গে সাক্ষাৎ চেয়ে একটি চিঠি দেওয়া হয়েছে। বৃহস্পতিবার ঐক্য পরিষদ আলোচনার মাধ্যমে নতুন কর্মসূচি নির্ধারণ করবে।”

মুখ্য সমন্বয়ক ওয়ারেছ আলী বলেন, “সরকারি কর্মচারী হিসেবে আমরা শুধুমাত্র বিধিমালা ও শৃঙ্খলার মধ্যে থেকে কর্মসূচি গ্রহণ করব। কোনো বিধিমালা বহির্ভূত কর্মসূচি দেয়া হবে না।”

উল্লেখ্য, সরকারি চাকরিজীবীদের নতুন বেতন কাঠামো প্রণয়নের জন্য গত জুলাইতে অন্তর্বর্তী সরকার পে-কমিশন গঠন করে। ছয় মাসের মধ্যে সুপারিশ জমা দেওয়ার বাধ্যবাধকতা রয়েছে। তবে কর্মচারীরা আশা করছেন, ডিসেম্বরের ১৫ তারিখের মধ্যে নবম পে-স্কেলের গেজেট প্রকাশিত হবে।


Editor & Publisher : Md. Motiur Rahman

Pritam-Zaman Tower, Level 03, Suite No: 401/A, 37/2 Bir Protik Gazi Dastagir Road, Purana Palton, Dhaka-1000
Cell : (+88) 01706 666 716, (+88) 01711 145 898, Phone: +88 02-41051180-81