02/23/2025
সামি | Published: 2019-12-06 02:55:27
এফটি বাংলা
গত চার মাসে ধারাবাহিকভাবে কমেছে সঞ্চয়পত্র বিক্রি। অর্থবছরের প্রথম মাস জুলাইয়ে ২ হাজার ১৬০ কোটি টাকার সঞ্চয়পত্র বিক্রি হয়েছে। আগস্টে বিক্রি হয়েছে ২ হাজার ২০৫ কোটি টাকা, সেপ্টেম্বরে বিক্রি হয়েছে ৯৮৫ কোটি টাকা। আর অক্টোবর মাসে বিক্রি হয়েছে মাত্র ৮২২ কোটি টাকার সঞ্চয়পত্র বিক্রি।
সঞ্চয়পত্র কেনার ক্ষেত্রে কর শনাক্তকরণ নম্বর (ই-টিআইএন) বাধ্যতামূলক করা, ব্যাংক হিসাব খোলা, অনলাইনে আবেদন করা এবং অর্থের উৎস সম্পর্কে বিবরণ দেয়ার কারণে উল্লেখযোগ্য হারে কমেছে সঞ্চয়পত্র বিক্রি।
বাংলাদেশ ব্যাংকের প্রতিবেদন অনুযায়ী, একক মাস হিসেবে অক্টোবরে নিট সঞ্চয়পত্র বিক্রির এই হিসাব সবচেয়ে কম। ২০১৮ সালের একই মাসে যা ছিল ৪ হাজার ৪১৬ কোটি টাকা। গত বছরের অক্টোবরের চেয়ে এই বছরের অক্টোবরে বিক্রি কমেছে ৩ হাজার ৫৯৪ কোটি টাকা।
জাতীয় সঞ্চয় অধিদফতর ও বাংলাদেশ ব্যাংক সূত্র মতে, গত কয়েক মাসে সঞ্চয়পত্রের বিক্রির পরিমাণ তিন ভাগের এক ভাগে নেমে এসেছে। চলতি ২০১৯-২০ অর্থবছরের প্রথম তিন মাসে (জুলাই-সেপ্টেম্বর) ৪ হাজার ৭০০ কোটি টাকার সঞ্চয়পত্র বিক্রি হয়েছে। অথচ আগের অর্থবছরের একই সময়ে এই বিক্রির পরিমাণ ছিল ১৩ হাজার ৪১২ কোটি টাকা। সেই হিসাবে এ বছর সঞ্চয়পত্রের বিক্রি আগের বছরের চেয়ে ৬৫ শতাংশ কমে গেছে। তিন মাসেই সঞ্চয়পত্রের নিট বিক্রি কমেছে ৮ হাজার ৪১৪ কোটি টাকা। গত ১০ বছরের মধ্যে সঞ্চয়পত্র বিক্রিতে এই নিম্ন প্রবণতা এবারই প্রথম।
অর্থনীতিবিদরা অবশ্য এই প্রবণতাকে ইতিবাচকভাবেই দেখছেন। এতে সরকারের সুদ ব্যয় কমবে। অবশ্য বাড়বে ব্যাংকঋণ। তারা আরও বলছেন, সঞ্চয়পত্র নির্দিষ্ট এবং নিম্ন আয়ের মানুষের জন্য সুরক্ষাকবচ হিসেবে কাজ করে। তবে এর সুযোগ অনেক উচ্চবিত্তও নিয়ে থাকে।
সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগের নির্বাহী পরিচালক ড. ফাহমিদা খাতুন বলেন, সবাই যদি সঞ্চয়পত্রের ওপর ঝুঁকে পড়ে তাহলে তো হবে না। বাড়তি সুদ তো সরকারকেই দিতে হচ্ছে।
সঞ্চয় অধিদফতরের সূত্র জানায়, চলতি অর্থবছরের প্রথম তিন মাসে মোট বিক্রি হয় ১৭ হাজার ৪২১ কোটি টাকা, যা থেকে মূল ও সুদ পরিশোধ বাবদ ব্যয় হয়েছে ১২ হাজার ৭২৫ কোটি টাকা।
একক ব্যক্তির ক্ষেত্রে ৬০ লাখ টাকার বেশি সঞ্চয়পত্র কিনতে না পারা এবং ৫ লাখ টাকার বেশি বিনিয়োগ হলেই উৎসে কর ১০ শতাংশ কেটে রাখার নিয়ম করার কারণেও নিট বিক্রি কমেছে বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা।
তারা আরও বলেছেন, ১ জুলাই থেকে অনলাইনে সঞ্চয়পত্র কেনা ও নগদায়নের জন্য অর্থ বিভাগ যে ‘জাতীয় সঞ্চয় স্কিম অনলাইন ম্যানেজমেন্ট সিস্টেম’ নামে একটি কর্মসূচি চালু করেছে, তারই ফল হচ্ছে এই বিক্রি কমে যাওয়া।
সংশ্লিষ্টরা বলছেন, সঞ্চয়পত্র বিক্রি কমে যাওয়ার কারণে সরকারের অর্থ সংগ্রহও কমে যায়। এ অবস্থায় দেশে মেট্রোরেল এবং পদ্মা সেতুর মতো বড় বড় প্রকল্পে অর্থায়নে ব্যাংকের ওপর সরকারের নির্ভরশীলতা বাড়ার আশঙ্কা তৈরি হয়েছে। এ ধরনের অবস্থাও নেতিবাচক বলে উল্লেখ করেছেন অর্থনীতিবিদ ড. ফাহমিদা খাতুন।
তিনি বলেন, এতে ব্যক্তিগত পর্যায়ে বিনিয়োগ কমে যায়। ব্যাংকগুলো তো সরকারকেই ঋণ দিতে চাইবে। এসব কারণে পুঁজি সংকট তৈরি হওয়া এবং বিনিয়োগ কমে যাওয়ার আশঙ্কা তৈরি হয় বলেও হুশিয়ার করেন ড. ফাহমিদা খাতুন।
তিনি বলেন, অর্থ সংগ্রহে সরকারের অভ্যন্তরীণ তিন উৎস যথা রাজস্ব, ব্যাংক এবং সঞ্চয়পত্র- এসব ক্ষেত্রেই ভারসাম্য করতে হবে।
Editor & Publisher : Md. Motiur Rahman
Pritam-Zaman Tower, Level 03, Suite No: 401/A, 37/2 Bir Protik Gazi Dastagir Road, Purana Palton, Dhaka-1000
Cell : (+88) 01706 666 716, (+88) 01711 145 898, Phone: +88 02-41051180-81