02/24/2025
Siyam Hoque | Published: 2020-03-12 17:38:01
শতাধিক দেশে ছড়িয়ে পড়েছে করোনাভাইরাস। শুরুতে চীনের উহানে যখন অজ্ঞাতনামা হিসেবে এ ভাইরাসের প্রাদুর্ভাব ঘটে, মানবদেহে সংক্রমিত হয়ে শ্বাসকষ্টসহ নানা উপসর্গের মাধ্যমে প্রাণ কেড়ে নিতে থাকে, তখন এতটা ভয় ছিল না করোনা নিয়ে। পরবর্তী সময়ে এটি যখন প্রাণসংহারী রুদ্র রূপ ধারণ করে, তখন সাধারণ মানুষ তো বটেই, চিকিৎসক, বিশেষজ্ঞ, গবেষক—সবারই টনক নড়ে।
করোনাভাইরাস উহানের গণ্ডি পেরিয়ে গোটা চীন, সে দেশের সীমানা পেরিয়ে নানা দেশে ছড়াতে সময় লাগেনি। ‘প্যানডামিক’ শব্দটা তখন গায়ে লেগে যায় করোনার। তবে তা আনুষ্ঠানিক কোনো ঘোষণা ছিল না। ছিল মুখে মুখে। বলা হচ্ছিল যে এই ভাইরাসের সংক্রমণে দেখা দেওয়া কোভিট-১৯ রোগটি মহামারি আকারে দেখা দিচ্ছে। বিষয়টা তখনই সবার নজর কাড়ে। এ নিয়ে ভাবতে বসে যান বিশেষজ্ঞরা।
বৈশ্বিক মহামারি হিসেবে বর্ণনা করতে গিয়ে ডব্লিউএইচও করোনাভাইরাসের বিস্তারকে ‘প্যানডামিক’ বলে অভিহিত করে। ইংরেজি ‘প্যানডামিক’ বলতে যেমন মহামারি বোঝায়, তেমনি ‘এপিডেমিক’ বলতেও মহামারি বোঝায়। বরং আমাদের এই দক্ষিণ এশিয়ায় মহামারি হিসেবে ‘এপিডেমিক’ শব্দটিই বেশি পরিচিত। তবে এই দুই মহামারির মধ্যে পার্থক্য রয়েছে। অর্থাৎ, প্যানডামিক আর এপিডেমিক এক নয়।
একসময় বাংলাদেশ, ভারত, পাকিস্তানসহ বিশ্বের অনেক দেশেই কলেরা, গুটিবসন্ত, প্লেগের মতো প্রাণঘাতী রোগের সংক্রমণ ব্যাপক আকারে দেখা দিত। এসব রোগে গ্রামের পর গ্রাম উজাড় হয়ে যায়। দেখা গেছে যে একটি পরিবারে ঘরে প্রদীপ জ্বালানোর মতোও কোনো মানুষ বেঁচে নেই। পরবর্তী সময়ে গবেষকেরা এসব রোগের প্রতিষেধক টিকা ও ওষুধ আবিষ্কারের পর প্রাদুর্ভাব কমে আসে। গুটিবসন্তের ভাইরাস তো এখন নির্মূলই বলা যায়। প্লেগও আর দেখা যায় না। কলেরার দেখা মেলে কালেভদ্রে।
কলেরা, বসন্ত, প্লেগ দেখা দিত নির্দিষ্ট কোনো ভৌগোলিক এলাকায়। নির্দিষ্ট এক বা একাধিক গ্রাম বা অঞ্চলে। এর গণ্ডি ছিল একটা দেশের মধ্যেই। তাই এগুলো মহামারি হিসেবে এপিডেমিক।
করোনাভাইরাসের সঙ্গে উল্লিখিত রোগের ভাইরাসের পার্থক্য সুস্পষ্ট। করোনা নির্দিষ্ট কোনো অঞ্চল বা দেশে আটকে নেই। শতাধিক দেশে ত্রাস সৃষ্টি করেছে। দৌরাত্ম্য ক্রমে বেড়েই চলেছে। করোনাভাইরাসে সৃষ্ট কোভিড-১৯ রোগ বিশ্বের সব মহাদেশেই ছড়িয়েছে। এখন পর্যন্ত ১১৪টি দেশে এই ভাইরাসে আক্রান্ত রোগী শনাক্ত করা হয়েছে। বিশ্বে প্রায় ১ লাখ ১৮ হাজারের মতো মানুষ এই ভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছে। এখন পর্যন্ত ৪ হাজার ২৯১ জনের মৃত্যু হয়েছে করোনাভাইরাসের কারণে।
এসব কারণে কলেরা-বসন্তের ভাইরাসের চেয়ে করোনাভাইরাসের ভয়াবহতা আলাদা। এর বিস্তৃতি দেশে, প্রায় বিশ্বজুড়ে। তাই এটা মহামারি হিসেবে ‘প্যানডামিক’। এপিডেমিক মহামারি রোগগুলো ছিল নিয়ন্ত্রণের বাইরে। একবার ধরেছে তো ঘাড়ের কাছে যম খাড়া। টোটকা-ফোটকা ছিল চিকিৎসায়। এতে ঝড়ে বক কখনো মরত, কখনো কাজ হতো না।
প্যানডামিক করোনাভাইরাসের বেলায় ডব্লিউএইচও বলেছে, এটা মহামারি বলেই যে নিয়ন্ত্রণ–অযোগ্য তা নয়; বরং করোনাকে মহামারি বলে ঘোষণা করে এ ভাইরাসের বিস্তার রোধে বিশ্বের দেশগুলোকে পদক্ষেপ জোরদার করার আহ্বান জানানো হয়েছে।
Editor & Publisher : Md. Motiur Rahman
Pritam-Zaman Tower, Level 03, Suite No: 401/A, 37/2 Bir Protik Gazi Dastagir Road, Purana Palton, Dhaka-1000
Cell : (+88) 01706 666 716, (+88) 01711 145 898, Phone: +88 02-41051180-81