02/24/2025
Siyam Hoque | Published: 2020-03-12 18:08:00
বিশ্বব্যাপী ছড়িয়ে পড়া করোনাভাইরাসের আতঙ্কে হজে যাওয়ার টাকা জমা দিচ্ছেন না প্রাকনিবন্ধনকারী সম্ভাব্য হজযাত্রীরা। ১ লাখ ৩৭ হাজার বাংলাদেশির হজে যাওয়ার কথা থাকলেও গতকাল বুধবার পর্যন্ত টাকা জমা দিয়ে চূড়ান্ত নিবন্ধন করেছেন মাত্র ৩ হাজার ৮৮৭ জন। যা বাংলাদেশিদের জন্য বরাদ্দকৃত মোট হজযাত্রীর মাত্র ২ দশমিক ৮৩ শতাংশ।
ধর্ম প্রতিমন্ত্রী শেখ মো. আব্দুল্লাহ দেশ রূপান্তরকে বলেন, করোনাভাইরাসের প্রভাবে আতঙ্কিত হয়ে হজের নিবন্ধন থেকে বিরত থাকলে এ বছর হজে যাওয়া সম্ভব হবে না। হজযাত্রীরা হজের টাকা জমা দিয়ে আর্থিকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হলে সরকার দায়িত্ব বহন করবে। সৌদি আরব সতর্কতামূলকভাবে ওমরা ভিসা ইস্যু সাময়িক বন্ধ রেখেছে। করনোভাইরাসের প্রভাবে অনিশ্চয়তার কথা চিন্তা করে কেউ হজের নিবন্ধনে বিলম্ব করলে তার এ বছর হজপালনে সমস্যা হতে পারে।’
ধর্ম মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, হজের টাকা জমা দিলে সরকার ও হজ এজেন্সিগুলোর কাজ শুরু হয়। টাকা জমা দিয়ে নিবন্ধনের পরইসৌদি আরবে মোয়াল্লেম ফি নির্ধারণ, মক্কা-মদিনায় বাড়ি ভাড়া এবং আনুষঙ্গিক ব্যয় মেটানোর জন্য সৌদি আরবে অর্থ প্রেরণ করতে হয়। এছাড়াও হজে যাওয়ার আগে সংশ্লিষ্টদের স্বাস্থ্য পরীক্ষা, টিকা গ্রহণ, হজের প্রশিক্ষণ গ্রহণ, বিমানের টিকিট সংগ্রহ ও ভিসা সংগ্রহ করতে হয়। নিবন্ধন শেষে সৌদি সরকারকে হজযাত্রীর চূড়ান্ত সংখ্যা জানাতে হবে। হজযাত্রীদের সংখ্যানুপাতে বিমানের ফ্লাইট শিডিউল চূড়ান্ত করতে হবে। এসব দায়িত্ব পালনের জন্য দীর্ঘ সময় প্রয়োজন হয়। চাঁদ দেখা সাপেক্ষে আগামী ৩০ জুলাই এ বছরের হজ পালিত হবে। ২৩ জুন থেকে হজ ফ্লাইট শুরুর পরিকল্পনা করা হচ্ছে। বেসরকারি ব্যবস্থাপনায় হজযাত্রী পাঠানোর জন্য ৭৮৮টি এজেন্সির তালিকা প্রকাশ করা হয়েছে। গত ২ মার্চ থেকে নিবন্ধন শুরু হয়েছে। নিবন্ধন চলবে আগামী ১৫ মার্চ পর্যন্ত। সেই হিসেবে আর মাত্র দুই কর্ম দিবস বাকি আছে। আজ বৃহস্পতিবারের পর আগামী রবিবারও হজের টাকা জমা দিয়ে নিবন্ধন করা যাবে।
এদিকে বেসরকারি হজ এজেন্সিগুলো প্রাক নিবন্ধনকারীদের নিবন্ধনের টাকা জমা দেওয়ার জন্য তাগাদা দিচ্ছে। কিন্তু বাংলাদেশসহ বিশ্বব্যাপী ছড়িয়ে পড়া করোনাভাইরাস আতঙ্কে সংশ্লিষ্টরা হজ প্যাকেজের টাকা জমা দিতে সাহস পাচ্ছেন না। তারা পরিচিতজনদের সঙ্গে কথা বলে এমনকি সংবাদপত্রের অফিসে ফোন দিয়ে টাকা জমা দেওয়া ঠিক হবে কি-না তা জানার চেষ্টা করছেন। এমনকি হজ প্যাকেজের পুরো টাকা জমা দেওয়ার পর কোনো কারণে হজ করতে না পারলে টাকা ফেরত পাওয়ার সম্ভাবনার কথাও জানতে চাচ্ছেন।
ধর্ম মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, নিবন্ধনের টাকা জমা দেওয়ার পর কোনো কারণে যেতে না পারলে টাকা ফেরত দেওয়ার ব্যাপারে ধর্ম প্রতিমন্ত্রী শেখ মো. আবদুল্লাহ দায়িত্ব নিয়েছেন। তিনি গত মঙ্গলবার নিবন্ধনের টাকা জমা নেওয়ার জন্য নির্বাচিত বিভিন্ন ব্যাংকের শীর্ষ কর্মকর্তাদের সঙ্গে বৈঠক করেন। নিবন্ধনের জন্য জমাকৃত টাকা ব্যাংকেই জমা রাখা এবং হজ এজেন্সিগুলো যেন ওই টাকা উত্তোলন করতে না পারে সে ব্যবস্থা গ্রহণেরও নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে সরকারের তরফ থেকে। কিন্তু ধর্ম প্রতিমন্ত্রীর এত প্রতিশ্রুতি দেওয়া সত্ত্বেও হজ গমনেচ্ছুদের আতঙ্ক কাটছে না। করোনা আতঙ্কে মানুষ নিবন্ধনের টাকা জমা না দিয়ে পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ করছেন। হজ ব্যবস্থাপনার জন্য সৌদি আরবে প্রয়োজনীয় কাজ শেষ করার জন্য সরকারি ও বেসরকারি পর্যায়ে কমপক্ষে দুই মাস সময় প্রয়োজন। আগামী মাসেই রোজা শুরু হচ্ছে। ২৩ জুন হজ ফ্লাইট শুরু করতে হলে নিবন্ধন দ্রুত শেষ করা দরকার। হজে যেতে ইচ্ছুক ব্যক্তিরা ব্যাংকের মাধ্যমে লেনদেন করবেন। নিবন্ধনের পর কোনো কারণে হজে যাওয়া না হলে শুধু ব্যাংকের মাধ্যমে জমাকৃত টাকার দায়িত্ব ধর্ম মন্ত্রণালয় গ্রহণ করবে। কিন্তু ব্যাংক রশিদ ছাড়া অন্য কোনো লেনদেনের টাকা ফেরত প্রদানের দায়িত্ব সরকার নেবে না।
তাদের মতে, যে দেশ থেকে করোনাভাইরাসের উৎপত্তি সেই চীনে করোনা পরিস্থিতির উন্নতি হচ্ছে। বাংলাদেশে মাত্র তিনজন রোগী পাওয়া গেছে। এখন সময়মতো টাকা জমা না দিলে পরবর্তী সময়ে অবস্থার উন্নতি হলেও তখন ইচ্ছা করলে একজন হজে যেতে পারবেন না। কারণ একজন হাজির জন্য সৌদি আরবে বাড়িভাড়া, যানবাহন, মিনা, আরাফাহ ও মুজদালিফায় আগাম থাকা-খাওয়াসহ বিভিন্ন সুযোগ-সুবিধার জন্য অর্থ পরিশোধ এবং সেই দেশের মুয়াল্লিমের সঙ্গে চুক্তি করতে হয়।
হজ এজেন্সিস অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের (হাব) সভাপতি এম শাহাদাত হোসাইন তসলিম দেশ রূপান্তরকে বলেন, শেষ দিনগুলোতে অনেক লোক নিবন্ধন করে। যদি সরকার সময় না বাড়ায় তাহলে শেষ দিনগুলো মিস করলে আর সুযোগ পাবেন না। প্রাক নিবন্ধনের পরের সিরিয়ালে চলে গেলে আগের সিরিয়ালের যারা বাকি আছেন তারা আর সুযোগ পাবেন না। যারা টাকা জমা দেবেন তাদের লস হওয়ার সম্ভাবনা নেই। কারণ প্রয়োজন হলে পরবর্তী ধাপে যাওয়ার আগে আমরা তাদের সঙ্গে পরামর্শ করব। তখন প্রয়োজনে তারা জমাকৃত টাকা তুলে নিতে পারবেন। সরকার গত ২৪ ফেব্রুয়ারি হজযাত্রীদের জন্য তিনটি প্যাকেজ ঘোষণা করেছে। বেসরকারি হজ এজেন্সিগুলোও একাধিক প্যাকেজ ঘোষণা করেছে
Editor & Publisher : Md. Motiur Rahman
Pritam-Zaman Tower, Level 03, Suite No: 401/A, 37/2 Bir Protik Gazi Dastagir Road, Purana Palton, Dhaka-1000
Cell : (+88) 01706 666 716, (+88) 01711 145 898, Phone: +88 02-41051180-81