02/24/2025
সামি | Published: 2020-03-29 01:14:58
বাংলাদেশে করোনার সংক্রমণ হয়েছে এটা যেমন সত্যি, তেমনি এটাও সত্যি যে বাংলাদেশে এই ভাইরাস এখনো মহামারী আকার ধারণ করেনি। বরং বাংলাদেশে সীমিত আকারের যে সামাজিক সংক্রমণ, সেই সংক্রমণে দ্রুত পদক্ষেপের কারণে সংক্রমিত বাড়ার সম্ভাবনা কমে আসছে।
আজ আইইডিসিআর-এর সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয়েছে যে বাংলাদেশে নতুন করে কোন করোনা রোগী শনাক্ত হয়নি এবং যারা ইতিমধ্যে করোনায় আক্রান্ত ছিলেন তাঁদের মধ্যে ১৫ জন সুস্থ হয়ে বাড়ি ফিরেছে।
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, আগামী ৭ দিন বাংলাদেশের জন্য গুরুত্বপূর্ণ এবং এই ৭ দিনে যদি করোনার সংক্রমণ ব্যাপক বিস্তৃত না হয়, তাহলে বাংলাদেশ করোনার প্রাদুর্ভাব রোধে সফলতা অর্জন করবে এবং বাংলাদেশে মহামারীর ঝুঁকি কমে যাবে বলে ধারণা করা হচ্ছে।
আন্তর্জাতিক খ্যাতিসম্পন্ন মেডিসিন বিশেষজ্ঞ এবং প্রধানমন্ত্রীর ব্যক্তিগত চিকিৎসক ডা. আব্দুল্লাহ মনে করছেন যে, আর ১ সপ্তাহ বাংলাদেশের জন্য খুবই গুরুত্বপূর্ণ এবং আগামী ১ সপ্তাহে করোনার ব্যাপক বিস্তৃতি না হয় তাহলে বাংলাদেশ করোনার মহামারী থেকে রক্ষা পেতে পারে।
বাংলাদেশে করোনার মোকাবেলায় সফল হতে যাচ্ছে এবং এখনো এই মহামারীর বিস্তৃতি হয়নি- এই ব্যাপারে অনেকের অনেক মতামত আছে, অনেকেই এটাকে সৃষ্টিকর্তার রহমত হিসেবে মনে করছেন।
তবে অনুসন্ধানে দেখা যায় যে, বাংলাদেশে করোনার যে বিস্তৃতি এখনো ঘটেনি তাঁর পেছনে ৫টি বড় কারণ রয়েছে। সেগুলো হলো-
১. বিদেশ ফেরতদের অনেকেই করোনা আক্রান্ত ছিলেন না
যারা ইতালি এবং ইউরোপ থেকে দেশে ফিরেছিলেন এবং দেশে ফিরে বিভিন্ন স্থানে ছড়িয়ে গিয়েছিলেন, তাঁরা সম্ভবত করোনায় আক্রান্ত হবার আগেই ঐ দেশগুলো ত্যাগ করেছিলেন এবং তাঁরা সংক্রমিত ছিলেন না। তাঁরা যদি সংক্রমিত হয়ে দেশে ফিরতো তাহলে একটি বড় ধরনের বিপর্যয় ঘটতো।
এদের একটি বড় অংশই সংক্রমিত না হয়ে দেশে ফেরায় বাংলাদেশে করোনার বিস্তৃতি ব্যাপক হয়নি বলে বিশ্লেষকরা মনে করছেন।
২. দেরিতে হলেও হোম কোয়ারেন্টাইন
ইউরোপ থেকে প্রবাসীরা যখন দেশে ফিরেছিল, তখন প্রথম দিকে তাঁদের ব্যাপারে শক্ত অবস্থান নিতে না পারলেও খুব দ্রুতই তাঁদেরকে হোম কোয়ারেন্টাইনে নেয়া হয়। অনেকের খোঁজ খবর না পাওয়া গেলেও তাঁরা নিজেরাই আতঙ্কিত হয়ে এবং নিজের পরিবারের প্রতি ভালোবাসা থেকে নিজেদের উদ্যোগে হোম কোয়ারেন্টাইন করেছেন। এটার ফলে করোনা সামাজিকভাবে কম সংক্রমিত হয়েছে বলে বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন।
৩. ব্যাপক সচেতনতা
করোনা ভাইরাস বাংলাদেশে আসার আগে থেকেই ব্যাপক স্বাস্থ্যগত ত্রুটি-বিচ্যুতি থাকার পরেও বাংলাদেশ এই ব্যাপারে ব্যাপক সচেতনতা গ্রহণ করেছে।
বিশেষ করে, সাবান দিয়ে হাত ধোঁয়া, পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন থাকা, হাঁচি-কাশিতে শিষ্টাচার মেনে চলা ইত্যাদি স্বাস্থ্য অভ্যাসগুলো মানুষের কাছে পৌঁছে দেয়া গেছে।
এই সচেতনতাগুলো করোনা মোকাবেলার ক্ষেত্রে সহায়ক ভূমিকা রাখছে বলে মনে করা হচ্ছে।
৪. রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা
বাংলাদেশের মানুষের স্বাভাবিক রোগ-প্রতিরোধ ক্ষমতা করোনাভাইরাস মোকাবেলার ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখছে বলে মানুষ মনে করছে।
আমাদের যে প্রতিদিনের জীবনে বেঁচে থাকার সংগ্রাম করতে হয়- বায়ু দূষণ, পরিবেশ দূষণ, ভেজাল খাবার ইত্যাদি মোকাবেলা করে থাকতে হয়, তাতে আমাদের শরীরে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা এমনিই একটু বেশি। এবং সেটাই করোনা মোকাবেলায় ভূমিকা রাখছে বলে মনে করা হচ্ছে।
৫. সঠিক সময়ে ছুটি
বাংলাদেশে করোনা ব্যাপক বিস্তৃতি হবার আগেই সাধারণ ছুটি দেয়া হয়েছে এবং সাধারণ ছুটি দিয়ে মানুষকে ঘরে থাকার একটা বাধ্যবাধকতা আরোপ করা হয়েছে, তাতে করোনার বিস্তৃতি ব্যাপক হওয়া থেকে রক্ষা পাওয়া গেছে।
এই ছুটিটা যদি আর ১ সপ্তাহ বৃদ্ধি করা হয়, তাহলে বাংলাদেশ করোনার মহামারী এড়াতে সক্ষম হবে এবং এখন লক্ষনীয় যে, আগামী ৭ দিনে দেশের করোনা পরিস্থিতি কোন দিকে যায়।
যদি এই ৭ দিনে করোনা বিস্তৃতি ভয়াবহ দিকে না যায়, তাহলে মনে করতে হবে যে, করোনা মোকাবেলায় বাংলাদেশ সফল দেশ এবং বাংলাদেশ একটি মহামারী প্রতিরোধ করতে সফল হয়েছে।
Editor & Publisher : Md. Motiur Rahman
Pritam-Zaman Tower, Level 03, Suite No: 401/A, 37/2 Bir Protik Gazi Dastagir Road, Purana Palton, Dhaka-1000
Cell : (+88) 01706 666 716, (+88) 01711 145 898, Phone: +88 02-41051180-81