September 19, 2024, 8:10 am


সামি

Published:
2020-04-18 01:49:47 BdST

জাতীয় ভুল ধরা জোটের অপচেষ্টা শুরু


নিউজ ডেস্ক 

জাতির এই ক্রান্তিকালে জাতীয় ভুল ধরা জোটের সগৌরব আত্মপ্রকাশ হতে চলেছে। বরাবরের মতোই এখানে প্রকাশ্যে নেতৃত্বে আছেন হচ্ছে ড. কামাল হোসেন, সাথে বাংলাদেশে অবস্থানকারী পুরাতন জন-প্রত্যাখ্যাত রাজনৈতিক দলগুলোর কয়েকজন প্রতিনিধি।

যেমন- আ স ম আব্দুর রব, মাহমুদুর রহমান মান্না, বিএনপি মহাসচিব মীর্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর, খন্দকার মোশাররফ হোসেন, বিএনপি’র সদ্য গৃহত্যাগী নেতা রুহুল কবির রিজভী, বুদ্ধিজীবীদের মধ্যে আছেন দেবপ্রিয় ভট্টাচার্য, আনু মাহমুদ, ড. জাফরুল্লাহ, আসিফ নজরুল, পরিবেশবাদী নেতা রিজওয়ানা হাসান, ইত্যাদি।

তবে এই কমিটিতে বিদেশী উপদেষ্টা হিসেবে আছে বিএনপি’র ভারমুক্ত নেতা পলাতক তারেক জিয়া আর ড. কামাল হোসেনের মেয়ে সারা হোসেনের বিদেশী স্বামী ডেভিড বার্গম্যান; যিনি মানবতাবিরোধী অপরাধে বিচার চলাকালে বাংলাদেশের বিরুদ্ধে অবস্থান নিয়ে দণ্ডিত হন।

তবে কমিটিতে যারাই থাকনা কেন মূল পরিকল্পনায় আছেন লন্ডনে অবস্থানরত তারেক জিয়া আর ডেভিড বার্গম্যান।

অর্থ, বুদ্ধি-পরামর্শ ও আগামী কর্মকৌশলের যোগান আসবে লন্ডন থেকেই, তা নিশ্চিত হওয়া গেছে। 

সরকার বিরোধী মতাদর্শের কিছু সুবিধাবাদী চিকিৎসক দিয়ে দেশে করোনাভাইরাস চিকিৎসার সরঞ্জামাদির যে ঘাটতির কথা বলা হচ্ছে তা বিশ্বের সব রাস্ট্রেই আছে।

যুক্তরাস্ট্র, যুক্তরাজ্য, ইতালি, স্পেন সহ সব উন্নত রাস্ট্র সেই ঘাটতি নিয়েই কাজ করছেন, এটাই বাস্তবতা। কিন্তু তাদের দেশের কোন রাজনৈতিক দল বা সংগঠন সমালোচনা করছে না বরং সম্মিলিতভাবেই করোনা ভাইরাসের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করছে।

জাতির এই চরম দুর্দিনে নানা অজুহাতে চিকিৎসকদের অনেকেরই কাজে যোগ না দেওয়ার চেষ্টাকে সরকার নানা কৌশল আর প্রণোদনা দিয়ে ব্যর্থ করে দিয়েছেন।    

অনেকেই বলতে চেয়েছেন আগেভাগেই কেন করোনাভাইরাস মোকাবিলার জন্য প্রয়োজনীয় পণ্য কিনে রাখা হয়নি। জানুয়ারি ফেব্রুয়ারি এই দুই মাসতো সময় পাওয়া গেছে। কিন্তু বাস্তবতা হচ্ছে কোন পণ্য করোনাভাইরাস চিকিৎসায় খুব বেশি কার্যকরী তা আজো কি কেউ সঠিক করে বলতে পেরেছেন!

তাই মেডিক্যাল পণ্য কেনায় দেরির অভিযোগের ভিত্তি খুব শক্ত নয়।

আমাদের দেশের এত বেশি টাকা নেই যে কোটি কোটি টাকার পণ্য কিনে নষ্ট করবো, যেটা বিশ্বের অনেক ধনী দেশও করেনি।

বিএনপি ঘরানার তুখোড় বুদ্ধিজীবী ড. জাফরুল্লাহ কয়েকদিনের মধ্যে খুব কমদামে করোনাভাইরাসের টেস্টিং কিট উদ্ভাবনের প্রস্তাব দিয়েছিলেন তাঁর অফিসের এক বিজ্ঞানীর মাধ্যমে। শেখ হাসিনা তার সেই প্রস্তাবে খুব দ্রুত সাড়া দিয়েছিলেন। কিন্তু ড. জাফরুল্লাহ যে সময় চেয়েছিলেন সেই সময় পার হয়ে গেছে, কিট আসেনি। এটাও মহামান্য যুবরাজের একটা ফাঁদ ছিল বলে অনেকেই এখন ধারণা করছেন। 

শ্রমিকদের বেতন দিতে অহেতুক দেরি করার কি যুক্তিসংগত কোন কারণ আছে?

বিজিএমইএ এবং বিকেএমইএ ১৬ এপ্রিলের মধ্যে মজুরি পরিশোধ করতে তাদের সদস্যদের প্রতি অনুরোধ করেছিল। ৮৭% গার্মেন্টস মালিক তাদের শ্রমিকদের এই সময়ের মধ্যেই বেতন ভাতা পরিশোধ করলেও বাকী ১৩% কারখানার মালিক নির্ধারিত সময়ে মজুরি দিতে পারেননি।

ফলে মজুরি না পেয়ে রাজধানীর পাশাপাশি সাভার-আশুলিয়া, গাজীপুর, নারায়ণগঞ্জ, চট্টগ্রাম এবং ময়মনসিংহে ৫০টির বেশি পোশাক ও বস্ত্র কারখানার শ্রমিকেরা গত বুধ ও বৃহস্পতিবার বিক্ষোভ করেন। বিভিন্ন মহাসড়ক অবরোধের ঘটনাও ঘটেছে।

এতে করে শ্রমিকরা পেটের দায়ে ত্রাণ নিতে বেপরোয়া হয়ে ঘুরবে, সংক্রমণ বাড়বে, বাড়বে মৃত্যুহার।

বিজিএমইএ এবং বিকেএমইএ নেতাদের অনেকেই সরকারের খুব ঘনিষ্ঠ বলে জনমনে বদ্ধমূল ধারণা।

তাঁরা এটাও বিশ্বাস করেন যে তাঁদের বাসার ড্রয়ারে আর ক্রেডিট কার্ডে যে টাকা পাওয়া যাবে তা দিয়েও তাঁদের গার্মেন্টসের শ্রমিকদের বেতন দেওয়া সম্ভব, কিন্তু এটা তাঁরা করছেন না। এতে করোনা ভাইরাস সংক্রমণের ঝুঁকি বাড়ছে।

এটা হয়তো কারো কারো প্রত্যাশা। কারণ তাঁরা লাশের রাজনীতিতে অভ্যস্ত।   

বিদেশ বসে সোশ্যাল মিডিয়ায় অপপ্রচার এখনো চলমান। তাঁরা নানাভাবে এটা বুঝানোর চেষ্টা করছেন যে, সরকার করোনা মোকাবেলায় ব্যর্থ।

পৃথিবীর তাবৎ ক্ষমতাধর রাস্ট্রগুলো যেখানে করোনা মোকাবেলায় হিমশিম খাচ্ছে, সেখানে বাংলাদেশ যেভাবে চেষ্টা করতে তাঁর প্রশংসা না করে করা হচ্ছে মিথ্যাচার।

কখনও চিকিৎসা সামগ্রী নেই, আবার কখনও মানুষ চিকিৎসা পাচ্ছে না, আবার কখনও বা প্রশাসন দুর্যোগ মোকাবেলায় ব্যর্থ ইত্যাদি নানা অভিযোগ করা হচ্ছে। একই চিত্র কিন্তু আছে আমেরিকা, ইউরোপেও কারণ এ রকম মহামারীর জন্য কোন দেশই প্রস্তুত থাকে না কখনো।

ত্রাণ বিতরণে ত্রুটি

বাংলাদেশে মোট সিটি কর্পোরেশন ১২টি বলা হলেও সরকারী ওয়েবসাইটে তাঁর হিসেব দেখানো হয় ১১ টি। আর এই ১১টি সিটি কর্পোরেশনে মোট ওয়ার্ড সংখ্যা আছে ৩৯৬টি।

আর ছোট মাঝারী আর বড় পৌরসভা (এ, বি, সি ক্যাটাগরির) মিলে গড়ে যদি ১২টা করেও ওয়ার্ড ধরা যায় তাহলে মোট ওয়ার্ডের সংখ্যা ৪,৭৫২টি। এর সাথে ৪,৫৬২টি ইউনিয়ন পরিষদ যোগ করলে হয় ৫৪,৭৪৪টি ওয়ার্ড।

সরকার প্রতিটি ওয়ার্ডে ৫০০ জনের হিসেবে ত্রাণ দিচ্ছেন। সেই হিসেবে সরকার প্রতিদিন ত্রাণ দিচ্ছে ৬০,০০০ অভাবী মানুষকে।

কিন্তু অবাক করার মত বিষয় হচ্ছে ঢাকা শহরের একটি ওয়ার্ডের জনসংখ্যা মফস্বলের এক বা দুইটি উপজেলারও সমান।

চাহিদা বাড়ার সাথে সাথে ত্রান পাওয়ার মত পরিবারের সংখ্যা বাড়ানো হবে বলে সরকারের পরিকল্পনা আছে। কারণ এটা কত দিন প্রলম্বিত হবে কেউ জানেন না।   

১৩ জুন ২০১৯-২০ সালের বাজেট পেশ করার সময় অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল বলেন যে, বাংলাদেশে মধ্যম আয়ের মানুষের সংখ্যা চার কোটি। কিন্তু, কর দেয় সর্বসাকুল্যে ২১-২২ লাখ মানুষ।

সরকার মধ্যম আয়ের মানুষকে এই জাতীয় দুর্যোগে এগিয়ে আসায় উৎসাহিত করছেন নানাভাবে। তা হলে আর কোন সমস্যা হবে না। কেউ না খেয়ে মারা যাবেন না বলেই আশাবাদী সরকার।

এদিকে সরকারের এই আহবানে সাড়া দিয়ে ইতিমধ্যে অনেক ব্যবসায়িক গ্রুপ, বিত্তবান ব্যক্তিবর্গ এবং সর্বোপরি অনেক সামাজিক সংগঠন গরীব, অসহায় ও দুস্থ মানুষদের নানাভাবে খাদ্যসামগ্রী, অর্থ ও প্রয়োজনীয় চিকিৎসা সামগ্রী দিয়ে সহযোগিতা করছেন।

প্রতিটি পরিবার যদি একটি পরিবারের দায়িত্ব নেন তাহলেই আর কোন সমস্যা থাকে না। কারণ বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা বা অন্যরা বলছে বাংলাদেশে সর্বোচ্চ ৩ কোটি মানুষ খাদ্য সংকটে পড়তে পারেন করোনাভাইরাসের বিচরন দীর্ঘ হলে। 

গত ১০ বছরে বিভিন্ন দল থেকে টাকা পয়সা দিয়ে যারা আওয়ামী লীগ, যুবলীগ বা সরকারী বিভিন্ন  সংগঠনে এসেছে, তাঁদের লক্ষ্যই হচ্ছে এই লগ্নীকৃত টাকা ১০০গুন করে ফেরত নেওয়া।

অনেক পুরাতন ত্যাগী নেতাও আবার সরকারের বিভিন্ন স্তরে ঘাপটি মেরে থাকা বিএনপি-জামায়াত ঘরানার আমলাদের পাতা ফাঁদে পড়েছেন। ত্রাণচোর তকমা গায়ে মেখেছেন।

এটা নিয়েও তদন্ত হচ্ছে, সত্য বেরিয়ে আসবেই।

শেখ হাসিনা কাউকে না খেয়ে মরতে দেবেন না, এটা তাঁর কৃষি নীতি দেখলেই বুঝা যায়।

অন্যদিকে তিনি বিনা দোষে কাউকে শাস্তি দেবেন না এবং ষড়যন্ত্রকারীদেরও যে ছেড়ে দিবেন না তা ধীরে ধীরে প্রকাশিত হচ্ছে। কারন প্রথমদিকে সরকারদলীয় লোক সরকারি খাদ্যবান্ধব কর্মসূচি ও ত্রানের চাল আত্মসাতের অভিযোগে গ্রেফতার হলেও গত কয়েকদিনে বিএনপির বেশ কয়েকজন নেতাও একই অভিযোগে গ্রেফতার হওয়ার পর অনেকেই আবার হতাশ হয়েছেন।

এমতাবস্থায় জাতীয় ভুল ধরা জোট তাঁদের দেশ বিরোধী অপচেষ্টায় কতটুকু সফল হয় তা একটু অপেক্ষা করে দেখার বিষয়।    

Unauthorized use or reproduction of The Finance Today content for commercial purposes is strictly prohibited.


Popular Article from FT বাংলা